লুুৎফুল হাসান রানা, কলাপাড়া॥ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী নিয়োগ নিয়ে ধু¤্রজাল সৃস্টি হয়েছে। পৌরশহরের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজীর অস্থায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বিভ্রান্তিসহ মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ছে সাধারন মানুষের মাঝে। একজন নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজীকে তিনটি অফিসের দ্বায়িত্বভার অর্পন এবং দ্বায়িত্ব পালনে ব্যার্থতার অভিযোগ তুলে বাতিল ও পুনরায় তাকে দ্বায়িত্ব অর্পন নিয়ে জেলা রেজিস্ট্রার অফিসের নিয়োগ প্রক্রিয়াকে করেছে প্রশ্নবিদ্ধ। সংশ্লিস্ট দপ্তরের এমন কর্মকান্ডে অস্থায়ী কাজীর দ্বায়িত্ব প্রাপ্তদের মধ্যে বিবাদের মত ঘটনা ঘটেছে এমন কথাও জানা গেছে। এরফলে হয়রানীর শিকার হচ্ছে সাধারন সেবা গ্রহীতারা।
সূত্র জানায়, জেলার কলাপাড়া পৌর শহরের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী গোলাম মোস্তফার মৃত্যুর পর উপজেলার মিঠাগঞ্জ ও চাকামইয়া ইউনিয়নের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী মোস্তাকুর রহমানকে অস্থায়ীভাবে পৌরশহরের কাজীর দ্বায়িত্ব দেয়া হয়। ১৯৭৫ সালের মুসলিম ও তালাক রেজিস্ট্রেশন বিধির ১৪(১১) বিধি মোতাবেক জেলা রেজিস্ট্রার অফিসের ১১৩৮(৫) নং স্মারকের মাধ্যমে ১৭ আগষ্ট ২০১৬ তারিখে তাকে এ অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব প্রদান করা হয়। তিনি বালিয়াতলী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এবং মিঠাগঞ্জ ও চাকামইয়া ইউনিয়নের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী হওয়ার পার চতুর্থ দ্বায়িত্ব হিসাবে কলাপাড়া পৌর শহরের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজীর দ্বায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু মোস্তাকুর রহমান সঠিকভাবে কলাপাড়া পৌর শহরের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজীর দ্বায়িত্ব পালন করতে না পারার অভিযোগ তুলে ১৭৯১ (৬) স্মারকে ৭ জুন ২০১৮ তারিখে জেলা রেজিস্ট্রার মোস্তাকুর রহমানকে দ্বায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়। তদস্থলে একই স্মারকের মাধ্যমে নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কাজী দেলেয়ার হোসেনকে দ্বায়িত্ব অর্পন করে। কিন্তু চব্বিশ দিন পর ১ জুলাই ২০১৮ তারিখে ১৯৩৬(৬) নং স্মারকের মাধ্যমে জেলা রেজিস্ট্রার অফিসের মোস্তাকুর রহমানকে পুনরায় কলাপাড়া পৌর শহরের ১ থেকে ৪ নং ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজীর দ্বায়িত্ব প্রদান করে। পুনারায় কলাপাড়া পৌর শহরের আংশিক নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজীর দ্বায়িত্ব পেয়ে শহরময় মাইকিং করিয়েছেন। স্থানীয়রা জানায়, মোস্তাকুর রহমান তার মাইকিং প্রচারনায় উল্লেখ করেছেন, তার এই অফিস ব্যাতীথ অণ্য কোন অফিসে নিকাহ রেজিস্ট্রার করালে তা অবৈধ বলে গন্য হবে। এমন প্রচারনায় বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে সাধারন মানুষের মাঝে। জেলা রেজিস্ট্রার অফিসের এমন ঘটনায় বিভ্রান্তিসহ মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে সাধারন মানুষের মধ্যে। সাধারন মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন জেলা রেজিস্ট্রার অফিসের নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে। তাদের অভিযোগ, একটি সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষের গুরুতর দ্বায়িত্ব পালনের পর কয়েক মাইল দুরত্বে দুটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার কাজীর দ্বায়িত্ব পালন কিভাবে সম্ভব। এবিষয়ে জানতে চাইলে মোস্তাকুর রহমান বলেন, সহকারী নিয়োগের মাধ্যমে সেবাগ্রহীতাদের সেবা দেয়া হচ্ছে। কাজী সমিতির হাইকোর্টের রিটের রায়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত কাজীরা সহকারী নিয়োগের মাধ্যমে দ্বায়িত্ব পালন করতে পারছেন। কিছু দিনের মধ্যেই চাকামইয়া ইউনিয়নের দ্বায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন। তবে সব সিদ্ধান্তই ডিপার্টমেন্ট নিবে বলে তিনি জানান। পটুয়াখালী জেলা রেজিস্ট্রার প্রভাকর সাহা এবিষয়ে বলেন, সেবাগ্রহীাদের সুবিধার্থে পৌর শহরে দুজনকে কাজীর দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, দ্বায়িত্ব পালনে ব্যার্থ হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply