ডেক্স রিপোর্ট ॥ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মাওলানা ওয়ায়দুর রহমান মাহবুব নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে অনেকটা আনুষ্ঠানিকভাবে নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে তিনি ইশতেহারের ১৭টি বিষয় তুলে ধরেন। এছাড়া সিটি নির্বাচনে সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে প্রার্থী মাওলানা ওয়ায়দুর রহমান মাহবুব বলেন, তাদের দলের শীর্ষ নেতারা খুলনা ও গাজীপুরে সাম্প্রতিকালে অনুষ্ঠিত নির্বাচন দেখে হতাশ হয়েছেন। ফলে বরিশাল সিটিতেও গভীর শঙ্কা কাজ করছে। কিন্তু ভোটেরদিন কোন অনিয়ম হলে বিষয়টির জোর প্রতিবাদ জানানো হবে।
বরিশাল সিটি ইসলামী আন্দোলনের অনেক ভোট রয়েছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, শান্তিপূর্ণ ভোট হলে এই সিটিতে তিনি বিজয়ী হবেন। এজন্য তিনি সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মোঃ ফয়জুল করিম ও চরমোনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুফতি সৈয়দ মোঃ আবুল খায়ের প্রমুখ। তার নির্বাচনী ইশতেহারগুলো হচ্ছে-নগরীতে ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা ও অন্যায়ের প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা। মৌলিক অধিকারবঞ্চিত সকল নাগরিকের মাঝে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করা। নগরীকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন এবং সুন্দর ও মনোরম রাখার প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা। নতুন শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষে সবধরনের কলকারখানা স্থাপনের জন্য জনসাধারণকে উৎসাহিত করা। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সকল সড়ক ও লেনে পর্যায়ক্রমে সিসি ক্যামেরার আওতায় এনে প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। নগরীর সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও তা দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে নগরপরিকল্পনাবিদ, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশী পরিকল্পনাবিদ, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে সিটি প্লানিং টিম গঠণ করা ও তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়া এবং বাজেট প্রণয়নে বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদগণের মতামত গ্রহণ করা। সমাজসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নবীণ-প্রবীণদের সমন্বয়ে ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটি গঠণ করা। সিটি কর্পোরেশনের সকল কার্যক্রম আধুনিকায়নের লক্ষ্যে যথাযথ প্রযুক্তি ব্যবহার করা। যাতে নগরবাসী প্রয়োজনীয় সংবাদ, পেপারর্স সময়মত পেয়ে নগর ভবনের সাথে সংশ্লিষ্ট লেনদেন আদান-প্রদান করতে পারে। দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠণের লক্ষ্যে এ কাজের উৎস খুঁজে বের করা, গডফাদারদের চিহ্নিত করা, অতপর ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, কাউন্সিলর ও প্রশাসনের সমন্বয়ে যৌথ টিম গঠণ করে বিভিন্ন সভা-সমাবেশের মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভুতি ও বিবেকবোধ জাগ্রত করা ও অপরাধীদের কঠোর হস্তে দমনের চেষ্টা করা। বিদ্যুতের সু-ব্যবস্থার লক্ষ্যে দৃষ্টিনন্দন সাশ্রয়ী সড়কবাতি স্থাপন করা ও নগরীর অন্ধকার দূরীকরণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা। সংখ্যালঘু ও অবহেলিত জনগোষ্ঠীর মানোন্নয়নে প্রশাসনের সহযোগিতায় সকল প্রকার নাগরিক অধিকার, মানবিক মর্যাদা ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। সকল ধর্মের অনুসারীদের ধর্মীয় শিক্ষা ও নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ প্রদান করা। অসহায় এবং আশ্রয়হীন পথশিশু ও নারীদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা। বস্তিবাসীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে নিরাপদ পানি, বিদ্যুৎ, স্যানিটেশন, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা। ভোলা থেকে বরিশাল নগরীতে গ্যাস সংযোগের মাধ্যমে নগরবাসীকে গ্যাস ব্যবহারের সুবিধা প্রদানের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা। ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য মনিটরিং সেল শক্তিশালী করা, প্রয়োজনে নতুন টিম গঠণ ও এর আধুনিকায়ন করা। নিরাপদ সড়ক গঠণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নকল্পে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সংস্কার, ফুটপাতবিহীন রাস্তার ফুটপাত তৈরি করা, বর্ষা মৌসুমে রাস্তা খোড়াখুড়ি বন্ধ করা ও যানজট নিরসনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা। পয়ঃনিস্কাসন ও জলাবদ্ধতা নিরসনে নিয়মিত ড্রেন পরিস্কারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও ২৪ ঘন্টা সুপেয় পানি সরবরাহ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে নাগরিকদের জন্য অভিযোগ ও পরামর্শ বক্স স্থাপন করা এবং তাদের বিভিন্নমুখী অভিযোগ ও পরামর্শের ভিত্তিতে নগরীকে সার্বিকভাবে সুন্দরকরে গড়ে তোলা। এছাড়া তিনি নির্বাচিত হলে বরিশাল শহরে ইমামদের থাকার জন্য একটি ভবন তৈরি করা হবে।
Leave a Reply