বিদ্যুৎ, জ্বালানি, তথ্যপ্রযুক্তি, সেবা, কৃষি ও সড়ক পরিবহন অবকাঠামো খাত উন্নয়নে বিশাল বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে ঢাকা আসছেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফায়সাল বিন ফারহান আল সৌদ। ২৪-২৬ জানুয়ারি তার সফরটি হবে বলে কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে। প্রস্তাবিত সূচি ধরেই সফরটি বাস্তবায়নের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তবে শেষ মুহূর্তে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর দুই-তিন দিন এগিয়ে আনা হতে পারে। সফরকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে সৌদি মন্ত্রীর। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে জ্বালানি, অবকাঠামো, বন্দর ও শিপিং খাতে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব আসতে পারে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ সফরে। গত বছর মার্চে সৌদি সরকারের একটি উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেছিল। প্রায় ৪০ সদস্যের ওই প্রতিনিধি দলের সফরটি ছিল বাংলাদেশে আসা সৌদি সরকারের সবচেয়ে বড় কোনো বাণিজ্য দলের সফর। সেই সফরে তারা সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করেছিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে বিনিয়োগ প্রস্তাব ছাড়াও দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হবে। মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বাস্তুচ্যুত বাংলাদেশে অস্থায়ী আশ্রয়ে থাকা সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গার টেকসই প্রত্যাবাসন নিয়ে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হবে। প্রত্যাবাসন বিষয়ে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে সৌদি সরকারের আরও জোরালো সমর্থন চাইবে ঢাকা।
সরকারি সূত্র জানায়, রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা নিয়ে সৌদি সরকার বরাবরই বাংলাদেশের পাশে আছে। ২০১৮ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে এ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিল। যেখানে সৌদি আরবের সেই সময়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল বিন আহমেদ আল জুবেইর উপস্থিত ছিলেন। সৌদি আরবে বাংলাদেশের প্রায় ১৮ লাখ শ্রমিক রয়েছেন। করোনাকালীন সংকটে থাকা এসব শ্রমিকের কল্যাণের বিষয়েও কথা হবে প্রিন্স ফায়সাল বিন ফারহান আল সৌদের সফরে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৮ মার্চ জাকার্তা থেকে ফেরার পথে ঢাকা সফর করেছিলেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুবেইর। সে সময় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত ৫ম এক্সট্রা-অর্ডিনারি ওআইসি সম্মেলন শেষে দেশে ফেরার পথে তিনি ঢাকায় চার ঘণ্টা যাত্রাবিরতি করেছিলেন। ওই সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীকে সৌদি সফরের আমন্ত্রণ জানানোই ছিল তার সফরের উদ্দেশ্য। বাদশাহ সালমানের সেই আমন্ত্রণে পরবর্তী সময় সৌদিতে সরকারপ্রধানের সফর হয়েছিল।
Leave a Reply