রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৪ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
দুই দিনের সফরে আজ বরিশাল আসছেন অতিথি গ্রুপ অব কোম্পানির এমডি লায়ন সাইফুল ইসলাম সোহেল  পিরোজপুর ভান্ডারিয়ার যুব মহিলা লীগ নেত্রী জুথি গ্রেফতার গৌরনদীতে তিন দফা দাবি আদায়ে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা প্রশাসনকে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতারা খালাস পাওয়ায় গৌরনদীতে আনন্দ মিছিল বরিশালের বাকেরগঞ্জসহ চারটি থানা এবং উপজেলায় নাগরিক কমিটি গঠন   আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা বিহীন বাংলাদেশ শান্তিতে থাকবে, এটা অনেকেরই ভালো লাগেনা-এম. জহির উদ্দিন স্বপন তারেক রহমানের বিজ্ঞ নেতৃত্বের কারণে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি-এম. জহির উদ্দিন স্বপন গৌরনদীতে দৈনিক যুগান্তরের বিরুদ্ধে বিড়ি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল দুষ্টামিটাও ছিল যেমন স্পর্শকাতর, খেসারাতটাও দিতে হল তেমনি ভয়ঙ্কর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের ৫ সদস্যের বরিশাল মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি গঠন
প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সনদে ১৫ বছর ভাতা তুললেন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা

প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সনদে ১৫ বছর ভাতা তুললেন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা

প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত সুলতান হোসেন মাঝির সনদ নিয়ে আর ফেরত দেননি ঝালকাঠি সদর উপজেলার নেহালপুর গ্রামের মৃত সৈয়দ আলী দুয়ারীর ছেলে সুলতান দুয়ারী। পরে প্রতারণার মাধ্যমে সেই সনদে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে ১৫ বছর ভাতা উত্তোলন করেন। ভোগ করেন রাষ্ট্রীয় সব সুযোগ-সুবিধা। এই প্রতারণা ধরা পড়ার পর সুলতান দুয়ারীর গেজেট ও ভাতা বাতিল ঘোষণা করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সুলতান দুয়ারী প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা পিপলিতা গ্রামের সুলতান হোসেন মাঝির স্ত্রী ও সন্তানদের মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সুলতান হোসেন মাঝি পার্শ্ববর্তী পিপলিতা গ্রামের মৃত সৈয়জদ্দিনের ছেলে। তার নামের সঙ্গে মিল থাকায় জালিয়াতি করে সনদ নেন সুলতান আহম্মেদ দুয়ারী। জাতীয় পরিচয়পত্র ও জমির দলিলে তার নাম সুলতান আহম্মদ দুয়ারী হলেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সুযোগ-সুবিধা নিতে তিনি সুলতান হোসেন সাজেন।

সুলতান হোসেন দুয়ারীর মুক্তিযোদ্ধার গেজেট ও সনদ বাতিল হওয়ায় আর্থিকসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বন্ধ রাখতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নোটিশ দেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গেজেট অধিশাখার উপসচিব রথীন্দ্রনাথ দত্ত। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৪৮তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সৈয়দ আলী দুয়ারীর ছেলে সুলতান হোসেন দুয়ারীর মুক্তিযোদ্ধার গেজেট ও সনদ বাতিল করা হয়। গত ২২ নভেম্বর উপসচিব রথীন্দ্রনাথ দত্ত স্বাক্ষরিত চিঠি ১ ডিসেম্বর ঝালকাঠিতে পৌঁছায়। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবেকুন নাহার উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।

সুলতান আহম্মেদ দুয়ারীর আপন চাচা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি আকরাম আলী দুয়ারী (৯১) বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা বাড়িতেই ছিলাম। সুলতান আহম্মেদ আমার বড় ভাইয়ের ছেলে। তখন ওর বয়স ১৭-১৮ হবে। সে কখনো মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি। পিপলিতার সুলতান হোসেন মাঝির সার্টিফিকেট নিয়ে কেমন করে যেন নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছে সে। সুলতান মাঝি অশিক্ষিত হওয়ায় সুলতান আহম্মেদ দুয়ারীর সঙ্গে আর পারেননি।

শুধু তা-ই নয়, অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণের আবেদন ফরম পূরণেও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন সুলতান দুয়ারী। পাকা ভবনে বসবাস করলেও তিনি আবেদনে কাঠের ঘরে বসবাস করছেন বলে উল্লেখ করেছেন। সুলতান দুয়ারীর স্ত্রী একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং ছেলে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা। তার পরও তিনি নিজেকে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে ঘর পাওয়ার জন্য আবেদন করেন।

এ ব্যাপারে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে প্রতারণার জন্য সুলতান দুয়ারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবেকুন নাহার।

প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা পিপলিতা গ্রামের মৃত সুলতান হোসেন মাঝির স্ত্রী ফরিদা বেগম তার স্বামীর নাম মুক্তিযুদ্ধের গেজেটভুক্ত করার দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছেন। গত বুধবার তিনি এ আবেদন জমা দেন। ফরিদা বেগম অভিযোগ করেন, নেহালপুর গ্রামের সুলতান আহম্মেদ দুয়ারী তার স্বামীর মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানীর স্বাক্ষর করা সনদ নিয়ে আর ফেরত দেননি। ওই সনদ দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। নিজের নাম ও বাবার নাম সংশোধন করতে পারলেও গ্রামের নাম সংশোধন করতে পারেননি। এখন তিনি পিপলিতা গ্রামের ঠিকানা ব্যবহার করেন। অথচ ওই ঠিকানা প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান হোসেন মাঝির।

অভিযোগ রয়েছে, সুলতান হোসেন মাঝির কাছ থেকে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে ভাতা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে সুলতান আহমেদ দুয়ারী নিজের নামে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা করিয়ে নেন। তার সন্তানরা মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরিও পেয়েছেন। তার স্ত্রী নেহালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছেন।

প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা সুলতান হোসেন মাঝি ২০১৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার স্ত্রী ফরিদা বেগম, ছেলে মিজানুর রহমান, মিরাজ মাঝি, নুবীন মাঝি ও মেয়ে নুপুর বেগম। জীবিত অবস্থায় সুলতান আহম্মেদ দুয়ারীর সঙ্গে শক্তি ও বুদ্ধিতে পারেননি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা সুলতান হোসেন মাঝি। নিজের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেখে যেতে পারেননি তিনি।

সুলতান আহম্মেদ দুয়ারীর বাল্যবন্ধু আবদুল হক তালুকদার বলেন, সুলতান আহম্মেদ দুয়ারী আমার চেয়ে এক থেকে দেড় বছরের বড়। ছোটবেলা থেকেই আমরা একত্রে খেলাধুলা করতাম এবং স্কুলে যেতাম। দেশ স্বাধীনের সময়ও আমরা একত্রেই ছিলাম। ও যুদ্ধে যায়নি। কয়েক বছর আগে শুনি সে মুক্তিযোদ্ধা।

নেহালপুরের প্রবীণ ব্যক্তি হাবিবুর রহমান তালুকদার, সুলতান দুয়ারীর চাচাতো ভাই আলতাফ হোসেন, মো. আমির হোসেনসহ এলাকাবাসী জানান, সুলতান দুয়ারী কখনই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি। সে পিপলিতা গ্রামের সুলতান হোসেন মাঝির সার্টিফিকেট ব্যবহার করে বাবার নাম ভুল হয়েছে বলে পরিবর্তন করে এখন নতুন মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সুলতান আহম্মেদ দুয়ারী বলেন, আমার প্রতিপক্ষরা বিভিন্ন জায়গায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাকে হয়রানি করছে। আমি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। গেজেট বাতিল হলে আমি তার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করব।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com