দখিনের খবর ডেস্ক ॥ উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগী উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ১টি প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে রবি মৌসুমে শীতকালীন শাক সবজি ব্যাপকহারে উৎপন্ন হয়েছে। তাই বাজারে আসছে প্রচুর টাটকা শাক-সবজি। দামও কমে গেছে। ফলে ভোক্তারা কিনেও সন্তুষ্ট। ক্ষুদ্র চাষিদের কাছ থেকে সবজি ক্রয় করতে উপজেলার পাইকারি ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জাতের সবজি ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। এখানকার সবজির ব্যাপক চাহিদা আছে বরগুনা, পটুয়াখালী ও বিভাগীয় শহর বরিশালসহ বিভিন্ন স্থানে। শীতকাল আসলে এখানে ছুটে আসেন বিভিন্ন স্থানের পাইকারী সবজি ব্যবসায়ীরা। এখানকার অধিকাংশ কৃষকরা বিষমুক্ত কেঁচো কম্পোজ সার ব্যবহার করায় সবজির ফলন বেশি ও স্বাস্থ্যসম্মত হয়। কৃষকরা সবজি চাষাবাদে বিষমুক্ত কেঁচো কম্পোস্টসার ব্যবহারের কারণে দিন দিন জমির ঊর্বরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাথে ফলনও হচ্ছে অনেক বেশি। তাই দামও কিছুটা আগের তুলনায় কমে গেছে। শীতের শুরুতে যে দামে সবজি বিক্রি হয়েছে বর্তমানে তা দ্বিগুণ হারে কম দামে বিক্রি করছে কৃষকরা। ধানী জমিতেও ব্যাপকহারে সবজি চাষ হচ্ছে। জানা যায়, উপজেলার পৌরসভাসহ বিবিচিনি, বেতাগী সদর, হোসানাবাদ, মোকামিয়া, বুড়ামজুমদার, কাজিরাবাদ ও সরিষামুড়ি ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে বেশি সবজি চাষ হয়ে থাকে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়। এ উপজেলার পৌরসভাসহ ইউনিয়নগুলোতে ব্যাপকভাবে সবজি চাষ করছেন ২ হাজারেও বেশি কৃষক। অন্য ফসলের চেয়ে সবজি চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়ছেন তারা। সবজি চাষের মধ্যে আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মূলা, শসা, বেগুন, টমেটো, শিম, মরিচ, তিতকরলা, পেঁয়াজ, লাল শাক, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, ধনিয়া পাতা। এসব শাক ও সবজি হাট-বাজারে শীতের শুরুতে আসতে শুরু করেছে এবং তা ব্যাপক হারে বিক্রিও হচ্ছে। তবে শীতের শুরুতে বেশি দাম পেলেও বর্তমানে অনেক কম দাম পাচ্ছে কৃষক। বেতাগী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক ভবরঞ্জন ঢালী জানান, এখানকার সবজি সারা দেশে যায়। চাহিদা খুব বেশি। পাইকারী ব্যবসায়ীরা এখান থেকে ট্রাকে ট্রাকে করে সবজি নিয়ে যায়। বেগুন, টমেটো, আলুসহ উৎপাদিত সবজির প্রচুর পরিমাণে চাহিদা রয়েছে। প্রতি কেজি টমেটো ৩০ টাকা হারে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৩০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৩৫ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। সবজি বিক্রেতা আবুল কালাম জানান, আমরা পাইকারিভাবে সবজি কিনে নিয়ে আসি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে। স্থানীয় বাজারে নিয়ে এসে কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি করে থাকি। হোসনাবাদ ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামের কৃষক রতন হাওলাদার বলেন, এবার ২ একর কৃষি জমিতে সবজি চাষ করেছি। সবজির ফলন ভাল হওয়ায় শীতের শুরুতে দাম বেশি পেলেও বর্তমানে কম দাম পাচ্ছি । আশা করি যা খরচ করেছি তা উঠে যাবে তবে বেশি লাভ পাবো না। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন মজুমদার বলেন, উপজেলায় প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে রবি মৌসুমে শীতকালীন সবজি চাষাবাদ হয়েছে। কৃষকরা শীতকালীন শাক-সবজি চাষ করে ব্যাপক উৎপাদন করেছে। কৃষকরা চাহিদা অনুযায়ী বেশি উৎপাদন করায় শীতের শুরুতে বেশ কিছু দাম পেয়েছে।
Leave a Reply