চরফ্যাসন প্রতিনিধি ॥ চরফ্যাসন উপজেলা সদরে ১শ’ শয্যার সরকারি হাসপাতাল চত্তরে রোগির স্বজনদের মারধরের ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা রোগীকে উন্নত চিকিৎসা আর কম মূল্যে নির্ভুল পরীক্ষা-নিরীক্ষার আশ্বাস দিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টার আর ক্লিনিকগুলোতে বাগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে রোগির সাথে থাকা স্বজনরা বাধা দিলে সংঘবদ্ধ দালাল চক্র ক্ষিপ্ত হয়ে সোলাইমান নামে এক রোগির স্বজনকে মারধর করেন। শনিবার দুপুর সরকারী হাসপাতাল চত্তরে মারধরের এ ঘটনা ঘটে। রোগির স্বজনকে মারধরের ঘটনায় আতর্ংকিত চিকিৎসা নিতে আসা রোগি ও স্বজনরা হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন বলে জানা গেছে। জানা যায়, চরফ্যাসনে ২৯টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ৬টি প্রাইভেট ক্লিনিক আছে। যেগুলোর মধ্যে বেশীর ভাগেরই যথাযথ অনুমোদন নেই। এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকগুলোর মধ্যে ৬টি প্রত্যন্ত হাটবাজারে এবং ২৯টি উপজেলা সদরের হাসপাতাল সড়কে গড়ে উঠেছে। ১শ শয্যার উপজেলা হাসপাতালের ২শ গজের মধ্যে এবং হাসপাতাল সড়কের দু’পাশ জুড়ে এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠায় সরকারি হাসপাতালগামী রোগীরা প্রায়ই গন্তব্য পর্যন্ত পৌছার আগেই দালালদের বহুমুখী টানাটানির মধ্যে পড়ের। টানাটানি শেষে কোন রোগী সরকারি হাসপাতাল পর্যন্ত পৌছলেও সেখানে ওৎপেতে থাকেন ঝাঁকে ঝাঁকে দালাল।সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সরকারি হাসপাতালে আসা রোগীদের বিভ্রান্ত করে ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে ভাগিয়ে নিয়ে যায়। সরকারী হাসপাতালের জরুরী বিভাগসহ রোগীদের শয্যাগুলোতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শতাধিক যুবত-যুবতী। রোগি ভাগিয়ে নিতে তৎপর থাকেন তারা। সরকারি হাসপাতালে ওৎপেতে থাকা এসব দালাল রোগী বাগানোর পাশাপাশি রোগীদের ঔষধ, মোবাইল, টাকাসহ নানান জিনিসপত্র চুরি করছে বলে জানাগেছে। জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগির স্বজন ফারুক মিয়া জানান, শনিবার দুপুরে তারা রোগি নিয়ে চরফ্যাসন সরকারী হাসপাতাল চত্তরে যাওয়ার পরপরই একদল দালাল চক্র রোগিকে ঘিরে হুমরি খেয়ে পরেন। এবং উন্নত চিকিৎসার আস্বাসে ডায়াগনিস্টিক সেন্টার নিয়ে যেতে টানাহেচাড়া শুরু করেন। তিনি এবং তার স্বজনরা বাধা দিলেই ঘটে বিপত্তি। ওই দালাল চক্র তার উপরে চওড়া হয়ে রোগিকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। এসময়ে তিনি এবং তার রোগির সাথে ধস্তাধস্তি একপর্যায় সংঘবদ্ধ দালাল চক্র জোট বেধে তাকে মারধর করেন। চরফ্যাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শোভন বসাক জানান,দালাল চক্র রোগির ও তার স্বজনদেরকে লাঞ্চিতের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তবে প্রশাসন কঠোর হস্তে এসব দালাল চক্রকে দমন না করলে সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ব্যহত হবে। এসব দালাল চক্রকে দ্রুত আইনের আওয়াতায় আনতে হবে। কর্তিপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হবে। চরফ্যাসন নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন জানান, হাসপাতাল চত্তরে অভিযান চালিয়ে এসব দালাল চক্রকে আইনের আওয়াতায় আনা হবে।
Leave a Reply