দখিনের খবর ডেস্ক ॥ সারা দেশে নতুন কমিটি গঠনের কার্যক্রম শুরু করেছে আলোচিত ধর্মীয় সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনটির নতুন আমীর জুনায়েদ বাবুনগরী নেতৃত্বে আসার পর বিগত কাউন্সিলে সারা দেশের জেলা-উপজেলা, নগর ও পৌরসভার কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। ইতোমধ্যে ফেনী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগর আংশিক নতুন কমিটি ঘোষণা করেছেন তিনি। এসব কমিটি থেকে হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আমীর আল্লামা আহমদ শফীর অনুসারীদের বাদ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় হেফাজতে ইসলামের দুর্গ বলে খ্যাত হাটহাজারী উপজেলা ও হাটহাজারী পৌরসভা শাখার কাউন্সিলের আয়োজন করেছেন বাবুনগরীর অনুসারীরা। মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) পৌরসভার কনক কমিউনিটি সেন্টারে বিকাল ৪টায় এটি অনুষ্ঠিত হবে বলে নিশ্চিত করেছেন কাউন্সিল বাস্তবায়ন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক মাওলানা এমরান সিকদার। এতে হেফাজতের বর্তমান আমীর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় হেফাজত নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে মাওলানা এমরান সিকদার বলেন, পুরনো কমিটির নিষ্ক্রিয়, বিতর্কিত নেতাদের বাদ দিয়ে সক্রিয়, ত্যাগী, নির্যাতিত নেতাদের নিয়ে কমিটি গঠনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হেফাজত আমীর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে তিনি একজন এক পদ- এই নীতির কথা সবাইকে স্মরণ রাখার অনুরোধ করেছেন। বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, যারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে আছেন তারা জেলা, উপজেলা, মহানগর ও পৌরসভায় থাকতে পারবেন না। এক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকগণের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তাদের নির্দেশনা অনুসারে কমিটি গঠন করতে হবে। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আমীর আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুর পর সংগঠনটির কার্যক্রম নিয়ে নানা মহলে আলোচনা-সমালোচনা চলে আসছিল। এর মধ্যে গত ১৫ নভেম্বর সাবেক মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীকে নতুন আমীর এবং সদ্যপ্রয়াত আল্লামা নূর হোসেন কাসেমীকে মহাসচিব করে ১২১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। নতুন কমিটিতে আল্লামা শফীর ছেলে আনাস মাদানীসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে বাদ দেয়া হয়েছে। কোনো সংশ্লিষ্টতা ছাড়াই কয়েকজন বক্তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল; যা নিয়ে তখন বেশ সমালোচনা সৃষ্টি হয়। সদ্যগঠিত কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরুর আগেই মারা যান নতুন মহাসচিব। কমিটি গঠনের ১ মাস ১০ দিন পর ওই পদে স্থলাভিষিক্ত হন সদ্যগঠিত কমিটির সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের নাম ঘোষণা করার সময় ওই কমিটির পরিধি বৃদ্ধি করে ২০১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে কোনো কাউন্সিল ছাড়াই ৮০ নেতাকর্মীকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে হেফাজত নেতাদের মধ্যে দেখা দিয়েছিল মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অন্যদিকে কমিটি ঘোষণার পরপরই প্রয়াত আল্লামা শফীর পরিবার তার মৃত্যু স্বাভাবিক নয় দাবি করে বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়া নেতাদের আসামি করে আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এতে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক আলোচিত সংগঠনটির অস্থিরতা আরও দৃশ্যমান হয়।
Leave a Reply