নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক শামীম-এমপি বলেছেন, ২০০৮ সালে আমি প্রথম সদর আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচনে দাড়িয়েছিলাম এবং সেই সময় প্রথমবারের মতো কোন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এই আসন থেকে ১ লাখ ভোট পেয়েছি। এরআগে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিএনপির প্রার্থী থেকে অর্ধেক ভোট পেতো। কারণ আমারা জানানেই। এসময় তিনি আরও বলেন, বিগত দিনে সদর আসনে সবসময় বিএনপির প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করা হতো। কি কারণে বিজয়ী করা হতো আমি জানি না। কারণ বিগত ২০ বছরে বরিশাল সদর উপজেলায় কোন উন্নয়নই হয়নি। বরিশাল শহরে যতটুকু উন্নয়ন হয়েছে প্রয়াত শওকত হোসেন হিরন যখন মেয়র ছিলেন তখন হয়েছে। উনিও ইন্তেকাল করেছে বরিশাল শহরের কাজও বন্ধ হয়ে গেছে। শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি স্থানীয়দের উদ্দেশে বলেন- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালে আমাকে মনোনায়ন দেন এবং আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হই। আপনাদের দোআ আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অশেষ করুণায় আমাকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বানানো হয়েছে। তিনি বলেন- বাংলাদেশে নদী মাতৃক দেশ। যেদিকে তাকাবেন সেদিকেই নদী ভাঙন। ৩৫০ জন সংসদ সদস্যরা প্রতিনিয়ত তাদের এলাকার নদী ভাঙনের সমস্যা নিয়ে আমার কাছে আসেন এবং আমিও চেষ্টা করি তাদের এলাকার সমস্যাগুলো দূর করার জন্য। এজন্য বাংলাদেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ছুটে বেড়াই। যাতে সমস্যাগুলো দেখে সমাধান করতে পারি। আপনাদের দোয়ায় এটুকু জোর গলায় বলতে পারি, যে কোন সংসদ সদস্য বলেছেন যে, এই মন্ত্রী কাজ করে না। তিনি বলেন- ১০ বছর আগে আমরা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল ছিলাম। এই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আজকে অর্থনৈতিকভাবে অনেক সাবলম্বী হয়েছে। যার জন্য আমরা বিভিন্ন নদী ভাঙন কবলিত এলাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারছি। আপনার শুনে আশ্চর্য হবেন বর্তমানে বাংলাদেশে চলমান প্রকল্প আছে ১০৬ টি এবং এর এককটি প্রকল্পের আকার অনেক বড়। ২ শত কোট, ৩ শত কোটি, ৫ শত কোটি, হাজার কোটি, ২ হাজার কোটি, ৩ হাজার কোটি এমনকি ১০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পও আমরা বাস্তবায়ন করছি। এটা শুধুমাত্র সম্ভব হয়েছে জননেত্রী শেখহাসিনার নেতৃত্বে আজকে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক সাবলম্বী হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন- বিগত বছরগুলোতে বণ্যার সময় আমি বরিশালের শায়েস্তাবাদে অনেক ঘোরঘুরি করেছি। নদী ভাঙন কবলিত এলাকার বাধগুলো রক্ষার জন্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু বর্ষার সময় যে বাধগুলো করেছি সেগুলো টেকসই না হওয়ায় ভেঙে গেছে। আজও আমি তত্ত্বাবধায় প্রকৌশলীকে নিয়ে এসেছি, নদী ভাঙন কবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শনের জন্য। এখানকার সংসদ সদস্য হিসেবে এটা আমার দায়িত্ব। আগের যারা সংসদ সদস্য ছিলো তারা টিআর-কাবিখার টাকাটাই পকেটে ভড়েছে। এলাকার জন্য কোন কাজ করেনি, আপনাদের কথা চিন্তা করেনি। শায়েস্তাবাদের ব্রিজটা যেটা দিয়ে বরিশাল শহর থেকে এখানে আসি সেটাও শেষ হয়েছে ২০০৮ সালের পরে। এরআগে ৫-৭ বছর ব্রীজটি পরে ছিলো শেষ করতে পারেনি। এর মানে হলো বিএনপি’র সংসদ সদস্যদের আপনাদের প্রতি কোন দয়া-মায়া ছিলো না। নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য তারা ব্যস্ত ছিলো। তিনি বলেন, আমার ৫ বছর এখনো শেষ হয়নি। ৩৯ টি প্রকল্প যেকোন সময় অনুমোদন হলে একসাথে পুরো সদর উপজেলায় রাস্তা-ঘাটের কাজ শুরু হবে। আপনারা আমার ওপর আস্থা রাখেন আমার কিন্তু ২০ বছর হয়নি, মাত্র ২ বছরের সংসদ সদস্য এবং এর ভেতরে আমি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করি। এজন্য হরামেশা আপনাদের কাছে আসতে পারি না। কিন্তু আমি সারাক্ষণই আপনাদের চিন্তা করি এবং আপনাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগের সভাপতিদের কাছে থেকে নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করি। এর আগের লোকজন গভীর নলকূপ দিতে লোকজনের কাছ থেকে টাকা নিতো কিন্তু আমার নির্দেশনা সরকারি টাকার বাহিরে একটাকাও কেউ নিতে পারবে না। এলাকার রাস্তাঘাটের জন্য টাকা দেয়ার দরকার নাই, কারণ আপনার এলাকার রাস্তাঘাট ঠিক করার দ্বায়-দায়িত্ব আমার। কারণ আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে সংসদ সদস্য বানিয়েছেন। সদর উপজেলায় ৬৪ টি রাস্তা পক্রিয়াধীন রয়েছে। নেহালগঞ্জের ব্রিজ করা হবে যার উদ্বোধন হবে আগামী সপ্তাহে। বদিউল্লাহ ব্রিজের জন্য কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে। স্থানীয়দের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের দেখভাল করার জন্য ভালো লোককে চেয়ারম্যান বানান। যে আমার কথা শুনবে। তাহলে আমার পক্ষে আপনাদের এবং আপনাদের এলাকার উন্নয়নে কাজ করতে সুবিধা হবে। আমাদের এখানে অনেকেই চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে পারেন। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যাকে মনোনায়ন দিবেন তার পক্ষেই আপনারা কাজ করবেন। আমি চেষ্টা করবো আমার মনোনীত প্রার্থীর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে মনোনায়ন নিয়ে আসার জন্য। যাতে করে আমি যেভাবে চাই সেভাবে আমার সংসদীয় এলাকায় কাজ কর্ম হয়। এবং আমরা সততার সাথে কাজ করে আপনাদের এলাকার উন্নয়ন তড়িৎ গতিতে করতে পারি। আমার মনোনীত প্রার্থীকে যদি দয়া করে প্রধানমন্ত্রী মনোনায়ন দেন। এবং আপনারা যদি তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন তবে অবশ্যই আপনাদের এলাকার উন্নয়ন হবে এটা নিয়ে সন্দেহের কোন কারণ নেই। সে সময় উপস্থিত ছিলেন- বরিশাল সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রহমান মধু, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব মাহমুদুল হক খান মামুন, জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জোবায়ের আব্দুল্লাহ জিন্নাহ, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন, শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মামুন তালুকদার, বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকসহ সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা।
Leave a Reply