দখিনের খবর ডেস্ক ॥ দেশের বেকার ও অর্ধবেকারদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য জামানত ছাড়াই ২০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋত দিচ্ছে কর্মসংস্থান ব্যাংক। ‘বঙ্গবন্ধু যুব ঋত নীতিমালা’র আওতায় বেকার যুবক ও যুব নারীরা ৮ শতাংশ সরল সুদে এ ঋত পাওয়ার যোগ্য। পাঁচ বছরের জন্য এ ঋত দেওয়া হচ্ছে। তবে ঋত পাচ্ছেন তাঁরাই, যাঁদের সরকারি, আধা সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া আছে। কর্মসংস্থান ব্যাংক ১৪ জানুয়ারি এক প্রজ্ঞাপন জারি করে বলেছে, বঙ্গবন্ধু যুব ঋত নীতিমালার আওতায় বঙ্গবন্ধু যুব ঋত কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক ৭০০ কোটি টাকা ঋত সুবিধা দিয়েছে। প্রণোদনা বাস্তবায়নের অগ্রগতির চিত্র নিয়ে গত মঙ্গলবার বৈঠক করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। সেখানে কর্মসংস্থান ব্যাংক জানায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে গত ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ৫৬৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা ঋত বিতরণ করা হয়েছে। আর ঋত পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৭০২ জন। গড়ে একেকজন ঋত পেয়েছেন দেড় লাখ টাকার বেশি। মুজিব বর্ষে ঋত দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছিল ২ লাখ জনকে। ১৯৯৮ সালে গঠিত হয় কর্মসংস্থান ব্যাংক। ব্যাংকটির ৩৩টি আঞ্চলিক কার্যালয় এবং ২৪টি শাখা রয়েছে। ব্যাংকটি গঠনের উদ্দেশ্য ছিল বেকার যুবকদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করা, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি, কুটির শিল্পে বিনিয়োগে উৎসাহ দেওয়া, দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তা ইত্যাদি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ব্যাংকটি সেই উদ্দেশ্য পূরণে ঋতও দিয়ে যাচ্ছে। তবে যে পরিমাণ ঋণের চাহিদা রয়েছে, সে পরিমাণ ঋত দেওয়ার সক্ষমতা নেই ব্যাংকটির। ঋত পাওয়ার জন্য একসময় অষ্টম শ্রেণি পাসকে শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল। বর্তমানে তা পঞ্চম শ্রেণি পাসে নামিয়ে আনা হয়েছে। ঋত আবেদনকারীকে বেকার বা অর্ধবেকার হতে হবে। বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৩৫ বছর। তবে বিশেষ বিবেচনায় ৪০ বছর পর্যন্ত বয়স শিথিলযোগ্য। এ ছাড়া ঋত পেতে হলে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, বিসিক, বিডা, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনসহ (এসডিএফ) অন্যান্য সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। ঋতখেলাপিরা ঋত পাওয়ার যোগ্য হবেন না। একই গ্রাহক বা গ্রুপ একাধিক প্রকল্পে ঋত পাওয়ার যোগ্য বলেও বিবেচিত হবেন না। তবে ৮ শতাংশ সরল সুদে ঋত দেওয়া হলেও কিস্তি খেলাপি হলে এই সুদ নেওয়া হবে ১০ শতাংশ হারে। প্রকল্প এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাসকারী এবং যাঁর বাড়িঘর ও জমিজমা আছে ও ঋত পরিশোধে সক্ষম এমন কেউ জামিনদার হতে পারবেন। আবেদনকারীর পিতা, মাতা, স্বামী, স্ত্রী অথবা তৃতীয় কোনো ব্যক্তিও হতে পারবেন জামিনদার। একটি জেলার কোনো বাসিন্দা ওই জেলার আওতাধীন যেকোনো শাখার উদ্যোক্তার ঋণের বিপরীতে নিশ্চয়তা বা গ্যারান্টি দিতে পারবেন। জামিনদার হতে পারবেন সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিরাও। কর্মসংস্থান ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. তাজুল ইসলাম সম্প্রতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যুব ঋত দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ চার মাস আগে আমাদের ৭০০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে ৩৫০ কোটি টাকা পাওয়া গেলেও বাকি টাকা পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।’
Leave a Reply