দিবস তালুকদার, ঝালকাঠি ব্যুরো ॥ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর অংগ সংগঠন ছাত্রদলের এক সময়ের মাঠ কাপানো নেত্রী হঠাৎ নিজ দল বিএনপি থেকে ভোল পাল্টে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইবেন এটা কারো কল্পনায়ও ছিলো না। বিএনপি থেকে আ’লীগে অনুপ্রবেশকারী সুবিধাভোগী ফাতিনাজই আওয়ামী লীগের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে এমনই মন্তব্য করেছেন আ’লীগের সিনিয়র নেতারা। তারা আরও বলেন, অনুপ্রবেশকারীদের দ্বারা সংঘটিত বেশ কিছু বিতর্কিত ঘটনায় দলকে ইতোমধ্যে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে। সরকার ও দলকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতেই তারা আওয়ামী লীগে এসেছে এমনটিই মনে করছেন সরকার দলীয় স্থানীয় ত্যাগী নেতারা।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ১৯৮৮ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের ছাত্রদলের নেত্রী এবং ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন ফাতিনাজ ফিরোজ ওরফে বেবী। বিশ্ববিদ্যালয়ে তার ডাক নাম ছিলো বেবি। তার পিতা বিএনপির প্রভাবশালী আমলা থাকায় বাহারাইনসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ফাতিনাজ ফিরোজ চাকুরী সূত্রে আমেরিকার নাগরীকত্ব পান। কিন্তুু ২০০৭-০৮ সালে একটি মানিলন্ডারিং মামলার কারনে নাগরিকত্ব হারাতে হয় তাকে। এমনকি আজীবনের জন্য তাকে কালো তালিকাভুক্ত করেন দেশটি।
তার স্বামী সদ্য প্রয়াত ড. এম হান্নান ফিরোজ এর মরদেহ মা ভাইবোনসহ অন্যান্য আত্মীয় স্বজনরা এলাকায় দাফন করার জন্য অনুরোধ জানালেও শ্বশুর বাড়ির এলাকার মানুষের প্রতি তার ঘৃনা ও ক্ষোভ থাকায় ফাতিনাজের একক সিদ্ধান্তে স্বামী হান্নান ফিরোজকে ঢাকায় দাফন করা হয়। হান্নান ফিরোজের মৃত্যুর পর ঝালকাঠির রাজাপুরে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনায় থানা আওয়ালীগের উদ্যোগে বড় আকারে শোকসভা, মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এতে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুসহ স্থানীয় দলীয় নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত হন। কিন্তু রাজাপুরের (শশুরবাড়ী) মানুষের প্রতি সু-নজর না থাকায় এই ফাতিনাজ ফিরোজ স্বামীর মিলাদে উপস্থিত হন নাই।
হঠাৎ করেই সংসদীয় আসন ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসনটি দখল করার জন্য উঠেপরে লেগেছে এই ফাতিনাজ ফিরোজ। গত কয়েক মাস যাবত স্বামীর এলাকায় চালিয়ে যাচ্ছে লোক দেখানো গণসংযোগ এবং ছবি সম্বলিত ডিজিটাল ব্যানার প্রচার। বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা ও হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। লোকমুখে এখন একই কথা, যে মহিলা তার স্বামীকে নিজের এলাকায় দাফন করতে দেয়নি সে কি উদ্দেশ্যে এলাকায় এমপি হতে চায়? একদিকে দলবদল অপরদিকে প্রয়াত স্বামীর নাম বিক্রি করে মনোনয়ন পেতে গণসংযোগ করা যা এলাকার সর্বস্তরের মানুষকে অতীতকে মনে করিয়ে দিচ্ছে। অতীত কর্মকান্ডের জন্য ফাতিনাজকে সমর্থন জানানো থাক দুরের কথা এখন প্রকাশ্যেই তাকে ধিক্কার জানাচ্ছে সবাই।
Leave a Reply