দখিনের খবর ডেস্ক ॥ করোনার নয় মাসে দেশে নারী ও শিশুর প্রতি সহিসংতা কমলেও বেড়েছে আত্মহত্যার হার। মার্চ ২০২০ থেকে নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন ১ হাজার ৫৮ জন মানুষ। অন্যদিকে ২০১৯ সালের জুন থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২০ এই নয় মাসে এ সংখ্যা ছিল ৯৪০ জন। অর্থাৎ করোনার নয় মাসে আত্মহত্যার হার ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসঙ্গে করোনাকালীন নয় মাসে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে নারীদের আত্মহত্যার প্রবণতা। পূর্বের সময়ের তুলনায় যা বেড়েছে ২০ দশমিক ৭১ শতাংশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের (সিজিএস) এক ভার্চুয়াল সভায় এ তথ্য জানানো হয়। ‘সার্ভিং ওয়েস, ফরোয়ার্ড ফর বাংলাদেশ ইন দ্য টাইমস অব প্যানডেমিক : কোভিড ১৯ অ্যান্ড গভর্নেন্স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সভায় করোনার আগে পরে সহিংসতার পরিস্থিতি এক প্রতিবেদনে উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আমেনা মহসিন। তিনি বলেন, করোনার সময় ঘরে আবদ্ধ থাকার কারণে মানসিক জটিলতা বাড়ায় আত্মহত্যা বাড়তে পারে। আবার এই সময়ে ঘরোয়া সহিংসতা বেড়েছে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ। করোনার আগে ৪৮২টি ঘরোয়া সহিংসতা সংগঠিত হয়েছিল যেটা করোনাকালে ঘটেছে ৫৩২টি। মার্চ ২০২০ থেকে নভেম্বর ২০২০ এবং ২০১৯ সালের জুন থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৮ মাসে আটটি জাতীয় পত্রিকা ও ১০টি স্থানীয় পত্রিকা থেকে পাওয়া তথ্য থেকে এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরি। প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনার নয় মাসে নারীর প্রতি সহিংসতা কমেছে ৭ শতাংশ, শিশুর প্রতি সহিংসতা কমেছে ২৪ শতাংশ। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিয়নয় স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, সৌভাগ্যবশত পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় করোনায় বাংলাদেশের মৃত্যুহার কম। তবে এ সময় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোভিড মোকাবিলায় সরকারের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, দুর্নীতি প্রতিরোধ, দক্ষতা ও আইনের শাসনের যথেষ্ট ঘাটতি লক্ষ্য করা গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, করোনার টিকাদানের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে সরকারের কৌশল নির্ধারণ জরুরি। এ ছাড়া টিকাদান কর্মসূচিতেও জবাবদিহিতা প্রয়োজন। সিজিএস-এর নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় অংশ নেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার প্রমুখ।
Leave a Reply