নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্য, সাবেক সভাপতি, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও প্রথিতযশা সাংবাদিক মহিউদ্দিন আঃ কাইউম এর স্মরন সভায় তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এক সময়ের তার সান্নিধ্য পাওয়া কলম সৈনিক সহযোদ্ধারা আবেগ আপ্লুত হয়ে পুরানো কথাগুলো বর্তমান সময়ের ও নতুন প্রজন্ম সংবাদকর্মীদের সামনে তুলে ধরেন প্রবীন কলম সৈনিক সংবাদ কর্মীরা। গতকাল শনিবার (৬) ফেব্রয়ারী সকাল সাড়ে ১০টায় সভাপতি এ্যাড. মু. ইসমাইল হোসেন গোবান মন্টুর সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক কাজী মিরাজ মাহমুদের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় স্মৃর্তিচারন অনুষ্ঠানে আঃ কাইউম এর চিকিৎসক কন্যা লিপিকা আক্তার লুনা মোবাইল ফোনে বরিশাল প্রেসক্লাবের সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমার বাবা বরিশাল প্রেস ক্লাবের প্রতি ছিল প্রচন্ড ভালবাসা। সে সব সময় তার পুরানো সঙ্গিদের নিজ পরিবারের সদস্য মনে করতেন। তিনি পিতার রুহের মাগফেরাত ও দোয়া কামনা করেন সকলের কাছে। স্মৃতিচারন করেন এক সময় তার অতি কাছ থেকে দেখা ও চলা ও শহীদ আঃ রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক এ্যাড. মানবেন্দ্র ব্যাটবল তিনি বলেন, শুরুতেই তার শিক্ষা ও ছাত্র জীবনের কিছু কথা তুলে ধরেন এবং একই সময় জানান তিনি ছাত্র জীবনে বাম রাজনীতির হাত ধরে উঠে আসেন। বরিশাল প্রেসক্লাবের জমি ক্রয় করার ক্ষেত্রে নগদ অর্থ দিয়ে সহযোগীতা করা সহ অনেক সংবাদকর্মীদের নিজেই সংবাদ লিখে দিয়ে সহযোগীতা করে গেছেন। সেই সময়কালে একেক পত্রিকায় এককভাবে সংবাদ প্রকাশিত হত, যার কারনেই আমরা কাইউম ভাই’র কাছ থেকে সহযোগীতা পেতাম। ঐসময়টা আমি সহ বদিউল আলম, শহিদ সেরনিয়াবাত ও কাইউম ভাই বলতে গেলে চার জনেই একত্রে চলা ফেরা ছিল আমাদের। তিনি আরো বলেন কাইউম ভাই ৯০ সালে বরিশাল ছেড়ে আইন পেশার জন্য ঢাকায় চলে যাবার পর আমি প্রেসক্লাবের সভাপতির চেয়ারে বসি নাই। সেখানে নুরুল আলম ফরিদকে সভাপতি করে বসাই। তিনি বলেন বরিশাল প্রেস ক্লাবের মুল দলিলে কাইউম ভাই,আমি ও স্বাক্ষি হিসাবে নেগাবান মন্টুর স্বাক্ষর রয়েছে। এই বরিশাল থেকে যারাই তার কাছে গেছে তিনি তাদের সকলে কাছ করে দিয়েছেন। তিনি আজীবন সদস্য এ্যড, মহিউদ্দিন আঃ কাইউমের নামে একটি স্বরনিকা প্রকাশ করার জন্য বর্তমান কমিটির কাছে প্রস্তাব রাখেন। তার আর এক সহযোদ্ধা ও নিকটতম আত্বীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম ফরিদ বলেন, আমরা প্রেস ক্লাবে এসে বসে থাকতাম কাইউম ভাই কখন আসবে সে আমাদের নিউজ লিখে দিলে আমরা টরটক্কর মেসিন দ্বারা ঢাকায় সংবাদ পাঠাতাম। তিনি বলেন আমরা সেসময় যারা এখানে ছিলাম তারা নিজেদের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে প্রেস ক্লাবের স্বার্থ রক্ষা করতে আপনজনকেও ছাড়ি নাই। সিনিয়র সাংবাদিক ও বর্তমান কার্যকরী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, আমি ৭৩ সালে প্রেসক্লাবের সদস্য পদ লাভ করিঅ তারপর ৭৬ সাল থেকে ৯০ সাল পর্যন্ত কাইউম ভাইর কাছাকাছি থেকে কাজ করেছি। এবং সেসময় তিনি ক্লাবকে জম জমাট করে রাখতেন ক্লাবের প্রতিদিনের খরচ ছিল তার। কাইউম ভাই প্রেস ক্লাব ছেড়ে চলে যাবার পর খুব খারাপ লেগেছিল তিনি আমাদের স্বেহ-ভালবাসা দিয়েছিলেন।তিনি একজন গম্ভির মানুষ থাকার মধ্যে মাঝে মাঝে রসিকতা করে সকলেই মাতিয়ে রাখতেন। বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি ও এক সময়ের বরিশাল প্রেস ক্লাবের সদস্য আনিসুর রহমান খান স্বপন বলেন, আমার সাংবাদিকতায় প্রেস ক্লাবে প্রথমে ১১ জন পরবর্তীতে ১৭ জন সদস্য করা হয় এইভাবে প্রেস ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন কাইউম ভাই না হলে বরিশাল প্রেস ক্লাবের জমি হত না। আজকালতো অনেক উপাদি দেয়া হয় প্রকৃত যারা এই পরিবেশ তৈরী করে গেছেন আমরা তাদের মনে রাখি না তাই কাইউম ভাইর স্মৃর্তি বাচিয়ে রাখতে সংক্ষিপ্ত আকারে তার জিবন তথ্য তুলে ধরা সহ একটি মিলনায়তন সভা করা হলে তার স্মৃর্তি বেঁচে থাকবে বলে তিনি মনে করেন। সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুল হালিম তিনি স্মৃর্তিচারন করে বলেন,বরিশাল প্রেস ক্লাব ছিল দেশের ভিতর একটি অন্যতম। আমি সদস্য হিসাবে লন্ডনে ফেলোশিফ পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করি। কামাল মাসুদুর রহমান বলেন, প্রেসক্লাবের সেকালের সাংবাদিকতা আর বতমান সাংবাদিকতার মধ্যে সেই পরিবেশ নেই। তখন কাইউম ভাই আমাদের সব ধরনের সহযোগী করতেন। এখন বর্তমানে আমাদের সাংবাদিকতা আর আজকের সাংবাদিকতার পেশার মান হারিয়ে ফেলছি। বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিইউজে) সাধারন সম্পাদক মনিরুল আলম স্বপন খন্দকার বলেন, তিনি স্মৃর্তিচারন করে বলেন আমি যখন সদস্য হই তখন থেকে যেখানেই বসি সবখানে কাইউম ভাই। এসময় তিনি আরো বলেন তিনি যখন একটি বিশেষ কাজে ঢাকার একজন আইনজীবী কাইউম ভাই সম্পর্কে এত ভাল কথা তুলে ধরলেন তা শুনে আমার কাছে এত ভাল লেগেছিল তার পরেও আমরা তাকে এই প্রেসক্লাবে স্মরন করেনি। এখানে আরো স্মৃতিচারন করেন সিনিয়র সাংবাদিক কাজী মকবুল হোসেন। এসময় বর্তমান শহীদ আঃ রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেস ক্লাব সভাপতি ও স্মরন সভার সভাপতি মু. ইসমাইল হোসেন নেগাবান মন্টু বলেন, আমি তার কাছ থেকে দুইটা আদর্শ শিখেছি সাংবাদিকতা ও আইন পেশার মাঝে থেকে সততা ভাবে চলা।
Leave a Reply