পিরোজপুর প্রতিনিধি ॥ পিরোজপুরে অধিক মুনাফার প্রলোভনে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেছে এহসান গ্রুপের ১০ হাজার গ্রাহক। গচ্ছিত রাখা এসব টাকা উদ্ধারের জন্য সংস্থাটির কাছে ধরণা দিয়ে ব্যর্থ হয়ে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন গ্রাহকরা। আর জেলা প্রশাসন বলছে- তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পিরোজপুর সদরের খলিশাখালী এলাকার আব্দুর রব খানের বড় ছেলে মুফতি রাগীব আহসান ২০১০ সাল থেকে এহসান রিয়েল এস্টেট নামীয় একটি এমএলএম কোম্পানি শুরু করে। ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে টাকা সংগ্রহ শুরু করেন। আর এক লক্ষ টাকার বিপরীতে গ্রাহকদের মাসে ২ হাজার টাকা মুনাফার প্রলোভন দিয়ে প্রায় ১০ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে পাচ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। একটি মসজিদে নামমাত্র বেতনে ইমামতি করা রাগীব এর আগে এমএলএম কোম্পানীতে চাকুরি নেন। পরবর্তীতে সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পিরোজপুরে এহসান রিয়েল এস্টেট নামের একটি কোম্পানি গড়ে তুলেন পরবর্তিতে যা এহসান গ্রুপ পিরোজপুর বাংলাদেশ নামে পরিচিতি পায়। এর অধীনে রাগীব গড়ে তোলে ১৪ টি প্রতিষ্ঠান। আবুল কালাম, রিনা বেগম, মসজিদের ইমাম রফিক মোল্লাসহ বেশকিছু ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক জানান, শুরুর পর কয়েক বছর ঠিকমত গ্রাহকদের সাথে লেনদেন স্বাভাবিক রাখলেও, প্রায় ২ বছর ধরে গ্রাহকদের টাকা পরিশোধে টালবাহনা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর তাদের অফিসের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। পাশাপাশি আত্মগোপনে চলে যায় রাগীবসহ প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। আর গ্রাহকরা ঘুরতে থাকেন তাদের দ্বারে দ্বারে। তবে নিজেদের গচ্ছিত টাকা না পেয়ে অসহায় মানুষগুলোর মাঝে বিরাজ করছে অজানা আতঙ্ক। এহসান গ্রুপের অধীনে একটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স সমবায় অধিদপ্তর থেকে নেওয়া হয়েছে। সেখানে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহে অনিয়ম ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা সমবায় অফিসার মো. মুজিবুল হক। এদিকে এহসান গ্রুপের জালিয়াতির এ বিষয়টি তদন্তে ধরা পড়েছে বলে জানান পিরোজপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি এবং তদন্ত কমিটি সদস্য মুনিরুজ্জামান নাসিম আলী। তবে সমবায় দপ্তর থেকে নেয়া লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে আমানত সংগ্রহ করায় তা গ্রাহকদের ফিরিয়ে দেবার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসক আবু আলী মোহাম্মাদ সাজ্জাদ হোসেন। পাশাপাশি জনগনকে তাদের সাথে লেনদেন না করার আহবানো জানান তিনি। তবে অভিযোগের বিষয়ে এহসান গ্রুপের কর্তৃপক্ষের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের জোর দাবি সরকার তাদের গচ্ছিত রাখা টাকা ফিরিয়ে দিতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
Leave a Reply