দখিনের খবর ডেস্ক ॥ ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অলিউল্লাহ কাজলের অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় ওই আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম হাওলাদারের ছেলে ও মনপুরা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এনাম হাওলাদারের বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণের চেষ্টা মামলা দিয়ে হয়রানি’র অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ভোলার শহরের একটি পত্রিকা অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন সাকুচিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিনি সাকুচিয়া ইউনিয়নের টানা তিন বারের ইউপি সদস্য ছিলেন। তার এ রাজনৈতিক সুনাম ক্ষুণ্ন করতে একটি মহল তার ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এদের মধ্যে দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান অলিউল্লাহ কাজলের নেতৃত্বে একটি মহল একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মনপুরা থানায় তার ছেলে এনাম হাওলাদারে বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে দিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় যে সময় গৃহবধুকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ করা হয়েছে, সে সময় তার ছেলে এনামের স্ত্রী সন্তান প্রসব করায় সে চরফ্যাশনের তার শ্বশুর বাড়িতে ছিলেন। মূলত ওই গৃহবধূর শ্বশুরের সাথে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে জমি নিয়ে তাদের সাথে বিরোধ চলে আসছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে চেয়ারম্যান অলিউল্লাহ কাজল তাদের দিয়ে এ মিথ্যা ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা করিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন এ আওয়ামী লীগ নেতা। এমনকি মামলা করার দিন ওই গৃহবধূকে অলিউল্লাহ কাজল তার নিজের মাইক্রোতে করে মনপুরা থানায় মামলা করতে নিয়ে গেছেন। এর আগেও এই চেয়ারম্যান তার ছেলে এনামের বিরুদ্ধে স্কুল শিক্ষিকাকে দিয়ে একটি মিথ্যা ধর্ষণ মামলা করিয়েছে, যা বিচারধীন রয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়ন থেকে আগামী নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এ দেখে বর্তমান চেয়ারম্যান অলিউল্লাহ কাজল একের পর এক তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া কেউ বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানের বেআইনি কাজের প্রতিবাদ করলে, চেয়ারম্যান তাদের বিরুদ্ধে অসহায় মহিলাদের দিয়ে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দিয়ে হয়রানি করেন বলেও অভিযোগ তার। এর পক্ষে তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জহির সরদারের বিরুদ্ধে এ চেয়ারম্যান মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দিয়েছে। পরবর্তীতে মেডিকেল রিপোর্টে নজরুলের মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এ দুর্নীতিগ্রস্ত ইউপি চেয়ারম্যান মনপুরার দক্ষিণ সাকুচিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের নামের জায়গাও নিজের নামে দলিল করে নেয়। এবং সেখানে নিজের ব্যক্তিগত কার্যালয় করে। এগুলোর প্রতিবাদ করলেই সে ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মহিলাদের দিয়ে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা করায়। এ বিষয়ে দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অলিউল্লাহ কাজলের সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ধর্ষণের চেষ্টা হয়েছে বলেই মামলা হয়েছে। ওই মামলার সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সাকুচিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. শহিদ মোল্লা, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহির সরদার, আওয়ামী লীগ নেতা মো. মাকসুদ ও মো. আবুল হোসেন প্রমূখ।
Leave a Reply