নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ করোনা আক্রান্ত হয়ে বরিশাল সাউথ এ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক কমপ্লেক্স (প্রাঃ) লিমিটেড ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ও এ্যাপোলো মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এ্যাডভোকেট ইদ্রিস মিয়া সবুজ ইন্তেকাল করেছেন। সোমবার দিবাগত রাত ৩টা ৩০ মিনিটের সময় ঢাকার কুরমিটোলা হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন(ইন্না…..রাজেউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬২ বছর। এ্যাডভোকেট ইদ্রিস মিয়া সবুজ ঝালকাঠী জেলার কাঠালিয়া থানার শৌলজালিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কৈখালী বাঁশবাড়ী গ্রামের মরহুম আবুল কাশেম মিয়ার ছেলে। তবে তিনি নগরীর কলেজ রোড এলাকার তালভিটা প্রথম গলিতে নিজ বাসভবনে বসবাস করতেন। ইদ্রিস মিয়া সবুজের মরদেহ মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় তার দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠান সাউথ এ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক কমপ্লেক্স (প্রাঃ) লিমিটেড এ নিয়ে আসা হয়। সেখানে তার মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পরেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। সাউথ এ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক কমপ্লেক্স (প্রাঃ) লিমিটেড এর চেয়ারম্যান হালিম রেজা মোফাজ্জেল বলেন, ইদ্রিস মিয়া সবুজ একজন সৎ, আদর্শবান ও নিষ্ঠাবান ব্যাক্তি ছিলেন। তিনি অত্যন্ত সদালাপী ছিলেন। আমার জানামতে তার ব্যাবহাওে কখনও কেউ কস্ট পাননি। তার এ অকাল মৃত্যুতে আমরা সকলে শোকাহত। এ্যাপোলো থেকে ইদ্রিস মিয়া সবুজের মরদেহ তার গ্রামের বাড়ী ঝালকাঠী জেলার কাঠালিয়া থানার শৌলজালিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কৈখালী বাঁশবাড়ী গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। সকলের প্রিয় ইদ্রিস মিয়া সবুজের মরদেহ দেখে আবেগ আপ্লুত হয়ে পরেন গ্রামের বাসিন্দারা। সকলে তাকে এক নজর দেখে কান্নায় ভেঙে পরেন। এরপর মাগরিব নামাজ শেষে সেখানে প্রথম জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। ইদ্রিস মিয়া সবুজের নাজানা নামাজে মানুষের ঢল নামে। গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে তাকে বরিশালে নিয়ে আসা হয়। এশার নামাজ শেষে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের সামনে ইদ্রিস মিয়া সবুজের দ্বিতীয় জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তার দীর্ঘদিনের বন্ধু, সহকর্মী, শুভাকাঙ্খী ও স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। এরপর ইদ্রিস মিয়া সবুজকে মুসলিম গোরস্থানে দাফন করা হয়। এ্য̈াড. ইদ্রিস মিয়া সবুজ ১৯৫৮ সালের ১৬ মার্চ ঝালকাঠী জেলার কাঠালিয়া থানার শৌলজালিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কৈখালী বাঁশবাড়ী গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তার বাবা মরহুম আবুল কাশেম মিয়া ছিলেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক। যিনি তৎকালীন ইউনিয়ন বোর্ডের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। এক বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে ইদ্রিস মিয়া সবুজ ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। ব্য̈ক্তি জীবনে তিনি এক পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের জনক। তিনি কাঠালিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্য̈ালয় থেকে ১৯৭৪ সনে মেট্রিক পাস করেন। এরপওে বরিশালের সরকারী বি.এম কলেজ থেকে ১৯৭৬ সালে উচ্চ মাধ্য̈মিক পাস করার পওে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোওে যোগদান কওে সফলভাবে ট্রেনিং সমাপ্ত করেন। ২বছর চাকুরী করার পওে তিনি চাকুরী ছেড়ে দিয়ে পুনরায় পরাশুনায় মনোনিবেশ করেন এবং সরকারী বি.এম কলেজ থেকে ইসলামের ইতিহাস বিভাগে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৮ সালে তিনি বরিশাল ল’ কলেজ থেকে এল.এলবি কোর্সসম্পন্ন করার পওে বরিশাল বার লাইব্রেরীতে যোগদান করেন। তিনি সাউথ এ্যাপোলো ডায়াগনষ্টিক কমপ্লেক্স (প্রাঃ) লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সাউথ এ্য̈াপোলো মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল লিঃ এর পরিচালক, সাউথ এ্যাপোলো প্রোপার্টিজ লিঃ এর পরিচালক, দৈনিক দক্ষিণাঞ্চল পত্রিকার মুদ্রাকর মেসার্স ইদ্রিস এন্ড ব্রাদার্স এর ̄স্বত্ত্বাধিকারী, কোয়ালিটি অফসেটপ্রেস এর সত্ত্বাধিকারী ছিলেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। বরিশাল মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ এর পরিচালক, বরিশাল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ এর সদস্য, ̈বরিশাল ক্লাব লিঃ এর আজীবন সদস্য এবং নির্বাচিত পরিচালক ছিলেন। এছাড়াও ঢাকা উত্তরা ক্লাবের আজীবন সদস, ̈বরিশাল রাইফেলস্ ক্লাবের আজীবন সদস্য, ̈বরিশাল ডায়াবেটিক সমিতির আজীবন সদস্য ও ̈কাঠালিয়া সমিতির আইন বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
Leave a Reply