কাজী সাঈদ ॥ প্রতিনিয়ত আওয়ামী ক্যাডারবাহিনীর হামলা, মামলা, নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোনরকম সাহায্য সহযোগিতা ছাড়া নিজ বসত ঘরে অবরুদ্ধ অবস্থায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈতরণী পাড় করছেন বরিশাল-১ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী জহির উদ্দিন স্বপন। বিএনপি প্রার্থী জহির উদ্দিন স্বপন জানায়, আমার সব নেতাকর্মীই আজ আওয়ামী ক্যাডারবহিনীর নির্যাতনের শিকার। শুধু নির্যাতনের শিকারই নয়, নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীরা যাতে নির্বাচন করতে না পারে এজন্য তাদের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা দিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানী করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে এসব বিষয়ে লিখিত জানিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না।
সংশ্লিস্ট সুত্রে জানা গেছে, গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলা নিয়ে বরিশাল-১ আসন। এ আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল জেলা আ’লীগের সভাপতি মন্ত্রী মর্যাদায় রাজপরিবারের সদস্য মহাজোট মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী অলহাজ¦ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপির সাথে ভোট যুদ্ধে লড়ছেন বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী জহির উদ্দিন স্বপন। বিএনপি প্রার্থী জহির উদ্দিন স্বপন অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই অতি উৎসাহী আওয়ামী ক্যাডারবাহিনী গোটা নির্বাচনী এলকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। স্বপন বলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বি নৌকা মার্কার প্রার্থী বর্তমান সরকারের মন্ত্রী মর্যাদায় ক্ষমতাধর ও দলের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় এখানকার বেপরোয়া আওয়ামী নেতাকর্মীরা অতি উৎসাহী হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর ও তাদের বাড়ীঘরে প্রতিনিয়ত জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন, হামলা-ভাংচুর অব্যাহত রেখেছে। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন রাজপরিবারের পক্ষে থাকায় গৌরনদী কিংবা আগৈলঝাড়া থানায় আমি অভিযোগ দিলে তাও গ্রহন করছেন না। এমনকি সাধারন ডায়েরীও নিচ্ছেন না। ফলে দীর্ঘদিন যাবত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের কারনে অনেকটা গৃহবন্দী অবস্থায় জীবন যাপন করছি। দিনের পর দিন শত শত কর্মীরা আমাকে পাহারা দিয়ে রাখছেন পাহারা দিয়ে আমাকে আগলে রাখছেন। আর ন্যায়ের পক্ষে থেকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। তিনি বলেন, আমি কখনই সংঘাত-সন্ত্রাসের পক্ষে ছিলাম না, এখনো নাই। আমি প্রতিহিংসার রাজনীতি পছন্দ করি না। অথচ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে আমি বাড়ীতে আসার পর মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়েছেন গৌরনদীর আলাউদ্দিন কমিশনার, মালেক হাওলাদার, নুরুজ্জামান হাওলাদার, চুন্নু সরদার, মনির আকন, রহিম ফকির, মহিউদ্দিন খোন্দকার, মিজানুর রহমান বেপারী, লালন ফকির, উজ্জল সিকদার, জাহাঙ্গীর খলিফা, শ্যামল খলিফা, ফিরোজ হাওলাদার। আওয়মী সন্ত্রাসীদের এমন কর্মকান্ডে আমার নির্বাচনী এলাকার নেতাকর্মী, ভোটার ও সাধারন মানুষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, একের পর এক আওয়ামী ক্যাডারবাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিবরন তুলে ধরে গৌরনদী থানায় সাধারন ডায়েরী করতে গেলে পুলিশ তা গ্রহন করেনি। এরপর আমি আমার বসতবাড়ী শরিকলে সংবাদ সম্মেলন করি। যা দেশের প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক্স মিডিয়ায় ফলাও করে প্রকাশিত হয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদিন রাতে আ’লীগের সন্ত্রাসীরা তার প্রত্যেকটি নেতাকর্মীর বাসায় গিয়ে খুঁজছে আর তাদের বাড়িঘর ভাংচুর ও স্বজনদের মারধর করা হচ্ছে। এমনকি দিন দুপুরেও পথে ঘাটে যেখানেই তার কর্মী সমর্থকদের পাচ্ছে সেখানে বসেই তাদের উপর হামলা ও মারধর করা হচ্ছে। সাধারন ডায়েরী করার জন্য তার আইনজীবি আব্দুর রহমান গৌরনদী থানায় যাওয়ার পথে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়ে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকতে হয়েছে। স্বপন বলেন, গত ১৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা গৌরনদী কলেজের সাবেক ভিপি পৌর বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান মুকুল, সাবেক সেক্রেটারি জহির সাজ্জাদ হান্নান, সাবেক যুবদলে কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য রফিকুল ইসলাম কাজল, আগৈঝাড়া বিএনপির নেতা সরোয়ার মিয়া, বশির আহম্মেদ পান্না মোল্লা, সাবেক কমিশনার ফরিদ মিয়া, সাবেক জেলা যুবদলের সাধারন সম্পাদক বদিউজ্জামান মিন্টু, সাবেক ভিপি জাকির হোসেন রাজাসহ বেশ কয়েকজন নেতাদের বাড়ীতে রাতের আধাঁরে কাপুরুষের মত তান্ডব চালিয়েছে। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে এসময় বাড়ীঘরের ও ঘরে থাকা আসবাবপত্র ব্যাপক ভাংচুর করে ও তান্ডবলিলা চালায়। গভীর রাতে তাদের তান্ডবে গোটা এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পরে। বাড়ীঘরের নারী-পুরুষ শিশু সন্তানদের নিয়ে আত্মরক্ষায় দিগবিদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। যা প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় ফলাও করে প্রকাশ করা হয়েছে। বিএনপি প্রার্থী জহির উদ্দিন স্বপন গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জানান, নেতাকর্মীরা যাতে তার বাড়ীতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বাড়ীর প্রবেশদ্বারে পুলিশী চৌকি বসানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবরে তার অবরুদ্ধ থাকার বিষয়টি অবহিত করে একটি আবেদন করেছি। কিন্তু তিনিও আমাকে নুন্যতম সাহায্য সহযোগিতা করেনি বরং নেতাকর্মীরা যাতে আমার সাথে দেখা না করতে পারে সেজন্য পুলিশিী পাহাড়া বসানো হয়েছে।
ধানের শীষের প্রার্থী জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ততই তাদের তান্ডব লীলা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এক কথায় আমার নির্বাচনী এলাকায় পথসভা করা তো দূরের কথা হ্যান্ড বিল লিফলেট বিতরনেরও কোন সুযোগ দেয়া হয়নি আমাকে।
Leave a Reply