স্টাফ রিপোর্টার ॥ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, বাংলাদেশে এখন আদর্শিক লড়াই চলছে। এই আদর্শিক লড়াইয়ে ইসলামকে বিজয়ী করতে ছাত্র সমাজকে প্রস্তুতি নিতে হবে। গতকাল ২৬ ফেব্রুয়ারি’২১ শুক্রবার বেলা ১১টায় ঐতিহাসিক চরমোনাই মাহফিলের তৃতীয় দিনে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত ছাত্র গণজমায়েতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন পীর সাহেব চরমোনাই। তিনি বলেন, স্থানীয় নির্বাচন সমাগত। এ নির্বাচনে সকল তাগুতি শক্তিতে পেছনে ফেলে ইসলামকে বিজয়ী করতে হবে। আর এ বিজয়ে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব দিবস পালনকালে ইশা ছাত্র আন্দোলনের ওপর ছাত্রলীগের হামলার বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওরা ইসলামবিরোধী শক্তি এজন্য ইসলামের চিহ্নগুলোও ওদের সহ্য হয়না। সুতরাং ইসলাম বিজয়ী আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলে সকল শয়তানি শক্তির অশুভ কর্মকাণ্ড ভেস্তে যাবে ইনশাআল্লাহ। ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল করীম আকরাম-এর সভাপতিত্বে ছাত্র গণজমায়েতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন এদেশের শিক্ষার্থীদের নৈতিকভাবে আদর্শবান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সুতরাং চরমোনাইতে আগত অনাগত সকল সচেতন অভিভাবকদের উচিত তাদের সন্তানদের এ সংগঠনে সম্পৃক্ত করে দেয়া। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সরকার এদেশের শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙ্গে দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের বৃহৎ আন্দোলন শুরু হবার আগেই দ্রুততম সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহ খুলে দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ আবারো ফিরিয়ে আনুন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, মিডিয়ার মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ একটি অশুভ চক্র পরিকল্পিতভাবে ইসলামের নামে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। আমরা মানুষের মাঝে একটা বার্তা স্পষ্টভাবে পৌঁছে দিতে চাই যে, ইসলাম ক্ষমতায় এলে মানুষ তার অধিকার ফিরে পাবে। সভাপতির বক্তব্যে নূরুল করীম আকরাম বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসেও শিক্ষার অধিকার আদায়ে এদেশের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন করতে হবে, ব্যাপারটা ভাবতেই লজ্জিত হই। স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকারগুলো সময়ের ব্যবধানে এদেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের দিকে ধাবিত করেছে। দিনদিন প্রিয় বাংলাদেশ একটি ভঙ্গুর রাষ্ট্রে পরিনত হতে চলেছে। সচেতন শিক্ষার্থীরা এভাবে চলতে দিতে পারেনা। তাই বাংলাদেশকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন দেশের সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের মাঝে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সর্বশেষ ঘোষণা সম্পর্কে নূরুল করীম আকরাম বলেন, গণপরিবহনে চাপাচাপি করে যাত্রি বহন, প্রেক্ষাগৃহ থেকে শুরু করে অফিস আদালত সবকিছু খুলে দেয়া হয়েছে। এমতাবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কোনো কারণ নেই। সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ভেঙ্গে দিচ্ছে। অবিলম্বে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া না হলে দেশব্যাপী তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মুহাম্মাদ আল আমিন এর সঞ্চালনায় ছাত্র গণজমায়েতে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রেসিডিয়ামের অন্যতম সদস্য আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবুল কাশেম, সংখ্যালঘু বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা মকবুল হোসাইন, ওমান কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারি মীর আহমেদ মীরু, মালয়েশিয়া মাশা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের নির্বাচিত ভিপি বশির ইবনে জাফর। উপস্থিত ছিলেন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ, জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল গাজী মুহাম্মাদ ওসমান গনী, সাংগঠনিক সম্পাদক এম এম শোয়াইব, প্রশিক্ষণ সম্পাদক ইউসুফ আহমাদ মানসুর, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কে এম শরীয়াতুল্লাহ, ঢাবি সভাপতি মাহমুদুল হাসান প্রমুখ। উল্লেখ্য, শনিবার সকাল ৮টায় আমীরুল মুজাহিদীন আজহা হযরত মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই এর সমাপনী বয়ান ও আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে তিন দিনব্যাপী মাহফিলের সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে। মাহফিলে আগত মুসল্লীদের মধ্য হতে গতকাল শুক্রবার রফিকুল ইসলাম (৬০) কুমিল্লা সহ গত মঙ্গলবার থেকে এ পর্যন্ত সর্বমোট ১১ জন মুসল্লী চরমোনাই মাহফিল হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।
Leave a Reply