বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০১:১২ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
ফুলকুঁড়ি আসর এর ফাইনাল ক্রিকেট টুর্নামেন্টের অনুষ্ঠিত আওয়ামী ঘরানার বিতর্কিত লোকদের দিয়ে উজিরপুর উপজেলা শ্রমিক দলের কমিটি গঠন করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সান্টু খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা
বরিশালে নিজের ওজনের দ্বিগুণ টিউমার নিয়ে কাটছে কাওছারের জীবন

বরিশালে নিজের ওজনের দ্বিগুণ টিউমার নিয়ে কাটছে কাওছারের জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ হাঁটতে কষ্ট, উঠে দাঁড়াতে কষ্ট। চিৎ হয়ে শেষ কবে ঘুমিয়েছে মনে নেই। ব্যথায় রাতে ঘুম হয় না। নিজের ওজনের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ টিউমার নিয়ে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছে ১২ বছরের শিশু কাওছার। একটি নয়, দুটি নয়, ছয়টি বড় বড় টিউমার তার পেটে। ইতোমধ্যে সাহায্যের টাকায় চারটি টিউমার অস্ত্রোপচার করে অপসারণ করতে পারলেও রয়ে গেছে আরও দুটি। দিন যত যাচ্ছে, টিউমার তত বড় হচ্ছে। খুব বেশিদিন অপেক্ষা করলে টিউমার ফেটে কাওছার মারা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এজন্য বড় ভাইকে সঙ্গে নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ছুটছে কাওছার। দুইদিন আগে এসেছে বরিশালে। এর আগে গেল বছরের ৫ জানুয়ারি থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত বরিশালে ছিল তারা। এক বছর পর চলতি বছরের ১ মার্চ আবারও বরিশালে এসেছে। সরকারি অফিস, আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, জনসমাবেশ দেখলেই ছুটে যাচ্ছে সাগ্রহে। অনুনয়-বিনয় করে পাঁচ-দশ টাকা সাহায্য নিচ্ছে। সেই টাকা জমা দেয় ফলপট্টি ভোলা বোডিংয়ের ম্যানেজার সোহেলের কাছে। বরিশালে এলেই তারা এই বোডিংয়ের ১১ নম্বর কক্ষে থাকে। দুটি বিছানার ঘিঞ্জি পরিবেশে বিশ্রামের সুযোগ পায়। এ নিয়ে অবশ্য কোনো অভিযোগ নেই তাদের। দিনে খাওয়ার জন্য দেড়শ টাকা দিতে হয়। বাকি টাকা নিয়ে আবার ৪-৫ দিন পর ফিরে যাবে নিজ বাড়িতে। সেখান থেকে আবার অন্য কোনো জায়গায় যাবে সাহায্য তুলতে। এভাবেই টিউমারের সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে কাওছার। মাঝে মাঝে মন চায় মরে যেতে। আবার বাঁচতেও মন চায়। জীবনে কখনো খেলাধুলার মাঠে ইচ্ছেমতো একটি দৌড় দিতে পারেনি। আবার বসতে পারেনি পড়ার টেবিলে। বিড়বিড় করে কাওছার বলে, মানষের সাহায্যের টাহায় (টাকায়) দুইডা কাটছি। আর দুইডা এ্যাকছেড় কষ্ট দেয়। মনে চায় মইর‌্যা যাই। কিন্তু বাঁচতেতো মোরও মন চায়। ভোলার দৌলতখান উপজেলার ৯ নম্বর ভবানীপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কাওছার। এই ১২ বছরের চলমান জীবনের শুরুটা স্বাভাবিকই ছিল। ২-৩ বছর বয়সে বাবা বশিরের কোলে চড়ে নদীতে মাছ ধরতে যেত। কিন্তু হঠাৎ এক দুর্ঘটনায় সব শেষ হয়ে যায়। কাওছার বলে, ৪-৫ বছর আগে আব্বায় গেছিল গাঙে। তুফান উঠছে। ডুইব্বা (ডুবে) মরছে। আর ফেরে নাই। হুনছি লাশ পাইছিল। মায় মোরে দেহায় নাই। হুনছি আব্বায় মইরা পইচ্চা (পঁচে) গ্যাছে। কাওছার আরও বলে, আব্বায় বাঁইচ্যা থাকলে মোর এত কষ্ট হরা (করা) লাগত না। এতদিনে টাহা (টাকা) জোগাড় করত। মোর কষ্টডা শ্যাষ হইত। এহন মায় একলা কেমনে কী করবে? কাওছারের বড় ভাই নাজেম জানান, এর আগে পিজি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়েছে। বাকি টাকা জোগাড় হলে আবারও ঢাকায় যাব অস্ত্রোপচার করাতে। এবার দ্রুত যেতে বলেছে ডাক্তার। নাহলে পেট ফাইট্টা মরবে কাওছার। নাজেম আরও বলেন, ছোটবেলা থেকেই মাঝে মাঝে পেট ব্যথা বলে কান্নাকাটি করত। ৫-৬ বছর আগে হঠাৎ পেট বড় হয়ে যায়। ডাক্তার জানায়, পেটের মধ্যে অনেকগুলো টিউমার আছে। এরপর দিনে দিনে আরও বড় হতে থাকে পেট। পেট থেকে পযার্য়ক্রমে চারটি টিউমার অপারেশন করা হলেও সঙ্কট বাড়ছে প্রতিদিন। যেহেতু টিউমার খুব বড় হয়ে গেছে, যেকোনো সময় ফেটে মারা যেতে পারে কাওছার। কিন্তু টাকা এখনো সংগ্রহ হয়নি। কাওছার বলে, ডাক্তারে কইছে শ্যাষ অপারেশন করতে ৪ লাখ টাহা লাগবে। এত টাহা মোরা কোথায় পামু? মুই কী বিপদে আছি? মানষের ধারে (কাছে) গ্যালে দুই টাহা, পাঁচ টাহা দেয়। কেউ বড় সাহায্য দেয় না। সুস্থ হয়ে মাকে নিয়ে ভালোভাবে বাঁচতে চায় কাওছার। তার অসুস্থতার জন্য মা লাইজু বেগম দিনের অধিকাংশ সময়ই কান্না করেন বলে জানায় কাওছার। ভবানীপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার রফিকুল ইসলাম বলেন, কাওছারের পরিবারটি অত্যন্ত গরিব। বশির (কাওছারের বাবা) মারা যাওয়ার পর দুর্দশা আরও বেড়েছে। এই অবস্থায় কাওছারের চিকিৎসা খরচ বহন করা তার পরিবারের পক্ষে সম্ভব না। আমি আমার সামর্থ্য অনুযায়ী একটি প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিয়েছিলাম। কার্ডের ভাতা এখনো পাওয়া শুরু করেনি। ওদের নিজেদের মুঠোফোন নেই। তারপরও কাওছারকে বাঁচাতে এগিয়ে আসার জন্য তিনি সবাইকে অনুরোধ করেছেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com