নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ফেসবুকে পরিচয়, বন্ধুত্ব অতঃপর পরিণয়। এই বন্ধুত্বের টানে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্ন প্রান্তে ছুটে যাওয়ার গল্প যেমনি রয়েছে, তেমনি রয়েছে সর্বস্ব বিসর্জন দেওয়ার গল্প। ঠিক যেন মুদ্রার এ-পিঠ, ও-পিঠ। নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান (ছদ্মনাম) তহুরা (১৬) বাবা-মায়ের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় মানুষের বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করেই যার জীবিকা নির্বাহ হয়। তহুরা’র হঠাৎ করেই প্রায় ৭/৮ মাস পূর্বে ফেসবুকে পরিচয় হয় বরিশালের আরিফুল ইসলাম সুমনের সাথে। পরিচয়ের সূত্রে তহুরা তার পারিবারিক অসহায়ত্ব ও অভাব-অনটনের কথা জানায় তার ফেসবুক ফ্রেন্ড সুমনকে। তহুরা’র কাছ থেকে সবকিছু শুনে সুমন তহুরাকে এই বলে আশ্বস্ত করে যে, তহুরাকে দেয়ার মত সুমনের হাতে ভাল কাজ আছে। তহুরা যদি সুমনের কাছে বরিশাল চলে আসে, তবে সে ভালো কাজ দিতে পারবে এবং সুমনের পরিবারের সাথে থাকতে পারবে। সুমনের এ-ধরনের আশ্বাসে আশ্বস্ত হয়ে অসহায় তহুরা সুমনকে ঢাকা গিয়ে নিয়ে আসতে বললে, সুমন তার স্ত্রী হাবিবা আক্তার সুমি কে সাথে নিয়ে ঢাকা গিয়ে তহুরাকে তাদের সাথে করে বরিশাল নিয়ে এসে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানাধীন ১৫নং ওয়ার্ডস্থ জনৈক সাইদুল কবির রিপন এর মালিকানাধীন তাদের টিনসেড ভাড়াটিয়া ঘরে নিয়ে উঠায়। বরিশাল আসার পর তহুরাকে চাকরি না দিয়ে তার বাসায় আটক রেখে সুমন তার স্ত্রী এবং বন্ধু আরিফ এর সহায়তায় তহুরা’র সাথে অসামাজিক কার্যকলাপ করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। বিভিন্ন সময় তাকে যৌন নিপীড়ন করতে থাকে। তহুরা যখন বুঝতে পারে সুমন অসৎ উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে তাকে এখানে এনে আটক করে রেখেছে, তখন তহুরা এখান থেকে পালিয়ে ঢাকা যাওয়ার চেষ্টা করলে সুমন তাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি দেখিয়ে আটক করে রাখে। প্রায় ০৪ মাস ১৯ দিন আটক থাকার পর গোপন সূত্রে সংবাদ পেয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার জনাব রাসেল এর নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জনাব আসাদুজ্জামান ও কোতোয়ালি মডেল থানার একটি চৌকস টিম কোতয়ালী মডেল থানাধীন ১৫নং ওয়ার্ডস্থ নিউ সার্কুলার রোড (কবিরবাগ) জনৈক সাইদুল কবির রিপন এর মালিকানাধীন আসামী সুমনের টিনসেড ভাড়াটিয়া ঘর থেকে ভিকটিম তহুরা’কে উদ্ধার পূর্বক আসামী ১. মোঃ আরিফুল ইসলাম সুমন (২৪) ২. হাবিবা আক্তার সাথী (১৮) ৩. মোঃ আরিফ(২২) কে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। এ-সংক্রান্ত ধৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানান ধরনের প্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্ব এখন আমাদের হাতের মুঠোয়। আর এই বিশ্বায়নের যুগে প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে সচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।
Leave a Reply