আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি ॥ বরিশালের আগৈলঝাড়ায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফিরোজ শিকদারের বিরুদ্ধে পয়সারহাট বন্দরের সরকারী জমির গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউএনও’র নির্দেশে কাটা গাছের অংশ বিশেষ জব্দ করেছে বন বিভাগ। সরকারী জমি দখল করে দোকান নির্মাণ ও গাছ কাটার বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানালেন ইউএনও মোঃ আবুল হাশেম। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনের কোন অনুমতি ছাড়াই আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে নিজের প্রভাব খাটিয়ে উপজেলার অন্যতম বানিজ্যিক বন্দর পয়সারহাটের সরকারী জমি থেকে অন্তত অর্ধ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের গাছ বিক্রি করে দিয়েছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্থানীয় এনাজ উদ্দিন শিকদারের ছেলে ফিরোজ শিকদার। স্থানীয় নরোত্তম হালদার ও কবির চৌকদারের কাছে গাছ বিক্রির খবর পেয়ে সহকারী কমিশনারের অতিরিক্ত দ্বায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুল হাশেম উপজেলা বনায়ন কর্মকর্তা মনীন্দ্র নাথ হালদারকে ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। বনায়ন কর্মকর্তা বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে সরকারী জমি থেকে কাটা গাছের অংশ বিশেষ নরোত্তম হালদারের স্ব-মিল থেকে জব্দ করেন। এদিকে বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি, বাজার কমিটির সেক্রেটারি দাবিদার ফিরোজ শিকদার বংশীয় প্রভাব খাটিয়ে সাবেক সিইসি বিচারপতি এমএ আজিজের বোনের ছেলে স্থানীয় লাল মিয়া শিকদার ও রোমেল শিকদারকে সাথে নিয়ে সরকারীভাবে নির্মিত মাল্টি শেডের সামনের দোকান গত এক বছর আগে দখলে নিয়ে তা গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়ে আসছেন। এছাড়াও সরকারী ভাবে নির্মিত মাল্টি শেডের সামনের জায়গা দখলে করে ফিরোজ শিকদার তিনটি দোকান ঘর তুলে স্থানীয় ৩জন কামারদের কাছে ভাড়া দিয়ে ভাড়া আদায় করে আসছেন। সরকারী গাছ কেটে পরিস্কার করে নতুন করে হয়তো পুকুর পাড়ের সরকারী জায়গা দখলের জন্যই এহেন কাজ করছেন বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। অভিযুক্ত ফিরোজ শিকদার বলেন, গাছটি ঝুকিপূর্ণ থাকায় স্থানীয় মসজিদের উন্নয়নের জন্য তা বিক্রি করা হয়েছে। গাছের প্রতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দাবি থাকলে আমাদের কোন আপত্তি নাই। মাল্টি শেডের দুটি ঘর দখলের বিষয়ে তিনি অস্বীকার করে আরও বলেন, কামাররা ব্যবসা করার জন্য ঘর চাইলে তাদের বাজারের মধ্যে বসার ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। বাজার কমিটির সভাপতি ও বাকাল ইউপি চেয়ারম্যান বিপুল দাস জানান, গাছ বিক্রির খবর তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্যর মাধ্যমে শুনে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবহিত করেছেন। তিনি আরও জানান, ২০১৮ সালে বাজার কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে, তবে উন্নয়নের স্বার্থে পরবর্তী কমিটি গঠন না হওয়া পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করে ফিরোজ শিকদারকে উন্নয়ন কাজের সহযোগীতা করতে বলা হয়েছে। বনায়ন কর্মকর্তা মনীন্দ্র নাথ হালদার জানান, ইউএনও স্যারের নির্দেশে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে সরকারী জায়গার গাছ কাটার কারণে বিভিন্ন স্ব-মিল খুঁজে অবশেষে নরোত্তম হালদারের স্ব-মিল থেকে কাটা গাছের অংশ বিশেষ জব্দ করেন তিনি। জব্দ করার বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেছেন বলেও জানান তিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুল হাশেম কাটা গাছ জব্দ করার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ফিরোজ শিকদারকে তার অফিসে তলব করা হয়েছে। কার অনুমতি নিয়ে কিভাবে, কেন গাছ কেটেছেন তা তার মুখ থেকে জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply