পাথরঘাটা প্রতিনিধি ॥ বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পাঁচ মাস পর গত মঙ্গলবার পৌরসভাসহ সাত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু কমিটি নিয়ে বিতর্ক ও লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের জরুরী সভায় নবগঠিত এ কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোতালেব মৃধা। নতুন কমিটি স্থগিত ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে পূর্ববর্তী কমিটিকে বহাল রাখার জন্য বলা হয়েছে। এর আগে গতকাল বুধবার সকালে ‘মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রাজাকার পরিবারের সন্তানদের পদ-পদবী দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করার অভিযোগে’ পাথরঘাটা উপজেলা প্রেসক্লাবে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানসহ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের একাংশ সংবাদ সম্মেলনে করেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সূত্রে জানা যায়, গতবছরের অক্টোবর মাসে পাথরঘাটা উপজেলার পৌরসভাসহ সাতটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যার কমিটি হঠাৎ করেই চলতি মাসের ২ তারিখ ঘোষণা করা হয়। এই কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনজন তালিকাভুক্ত রাজাকারের সন্তানের নাম থাকার অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়াও করোনাকালীন জেলেদের চাল আত্মসাতের অভিযোগে বহিস্কৃত চেয়ারম্যানের নামও রয়েছে বলে অভিযোগ করেন নেতাকর্মীরা। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্জ্ব জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, ‘নতুন কমিটি সুপারিশের জন্য জেলা আওয়ামী লীগের কাছে পাঠানো হয়েছিল। একই সঙ্গে টাকা পয়সা লেনদেন, রাজাকারের সন্তানকে পদ দেওয়া ও ত্যগীদের মূল্যায়ন না করে বিতর্কিত ও অরাজনৈতিকদের পদস্থ করারও লিখিত অভিযোগ এসেছিল। বিষয়গুলো নিয়ে বিশেষ সভা ডেকে আলোচনা শেষে কমিটি স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়েছে। একইসাথে নতুন করে কমিটি গঠন না হওয়া পর্যন্ত আগের কমিটিকে দায়িত্ব পালন করবে মর্মেও সিদ্ধান্ত হয়। এসব সিদ্ধান্ত আমরা কেন্দ্র ও সংশ্লিষ্ট উপজেলায় চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।’ এ ছাড়া শিগগিরই পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ডেকে ইউনিয়ন কমিটি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি। নতুন কমিটিতে যাদের সভাপতি সম্পাদক করা হয়েছিল তারা হলেন- রায়হানপুরে সভাপতি মাইনুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক এইচ এম ওয়াহিদ মুরাদ, নাচনাপাড়ায় সভাপতি আলমগীর হোসেন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদ খান, চরদুয়ানীর সভাপতি সুনীল চন্দ্র হালদার ও সাধারণ সম্পাদক ছগির হাওলাদার, পাথরঘাটা সদরের সভাপতি শাহআলম সিকদার ও সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম ফকির, কালমেঘায় সভাপতি মতিয়ার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম নাছির, কাকচিড়ায় সভাপতি মো. আলাউদ্দিন পল্টু ও সাধারণ সম্পাদক এম আলম পহলান, কাঠালতলীতে সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন সিকদার এবং পাথরঘাটা পৌর এলাকায় সভাপতি মোশারফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির উদ্দিন। কমিটি স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাবির হোসেন বলেন, ‘কমিটি স্থগিতের বিষয়টি শুনেছি, তবে এখনো কোনো কাগজ পাইনি। বিতর্কিতদের কমিটিতে রাখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এরা আগেও কমিটিতে ছিলেন, তখন তো কেউ অভিযোগ করেনি।’