রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৫ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
দুই দিনের সফরে আজ বরিশাল আসছেন অতিথি গ্রুপ অব কোম্পানির এমডি লায়ন সাইফুল ইসলাম সোহেল  পিরোজপুর ভান্ডারিয়ার যুব মহিলা লীগ নেত্রী জুথি গ্রেফতার গৌরনদীতে তিন দফা দাবি আদায়ে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা প্রশাসনকে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতারা খালাস পাওয়ায় গৌরনদীতে আনন্দ মিছিল বরিশালের বাকেরগঞ্জসহ চারটি থানা এবং উপজেলায় নাগরিক কমিটি গঠন   আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা বিহীন বাংলাদেশ শান্তিতে থাকবে, এটা অনেকেরই ভালো লাগেনা-এম. জহির উদ্দিন স্বপন তারেক রহমানের বিজ্ঞ নেতৃত্বের কারণে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি-এম. জহির উদ্দিন স্বপন গৌরনদীতে দৈনিক যুগান্তরের বিরুদ্ধে বিড়ি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল দুষ্টামিটাও ছিল যেমন স্পর্শকাতর, খেসারাতটাও দিতে হল তেমনি ভয়ঙ্কর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের ৫ সদস্যের বরিশাল মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি গঠন
সুন্দরবনে দুই দশকে ২২ বার অগ্নিকাণ্ড: তদন্ত হলেও বাস্তবায়িত হয়নি সুপারিশ

সুন্দরবনে দুই দশকে ২২ বার অগ্নিকাণ্ড: তদন্ত হলেও বাস্তবায়িত হয়নি সুপারিশ

দখিনের খবর ডেস্ক ॥ দেশের রক্ষাকবচ সুন্দরবনে গত প্রায় দুই দশকে ২২ বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৭১ একর বনভূমির সুন্দরীসহ নানা গাছ, গুল্ম-লতা ভস্মীভূত হয়েছে। এসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন সময়ে বন বিভাগের গঠিত তদন্ত দল নাশকতা, অসচেতনতা, অবহেলায় ফেলে দেওয়া বিড়ি বা সিগারেটের আগুনকে এর জন্য দায়ী করেছে। বনকে সুরক্ষা দিতে বন ব্যবহারকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধি, বন সংলগ্ন মরে যাওয়া নদ নদী খনন এবং সীমান্ত এলাকায় বেড়া ও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়নি উল্লেখ করে বনবিভাগ, স্থানীয়রা এবং পরিবেশবাদীরা বনজ সম্পদকে সুরক্ষিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। বনবিভাগ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ২০০২ সালে সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের কটকায় একবার, একই রেঞ্জের নাংলী ও মান্দারবাড়িয়ায় দুই বার, ২০০৫ সালে পঁচাকোড়ালিয়া, ঘুটাবাড়িয়ার সুতার খাল এলাকায় দুই বার, ২০০৬ সালে তেড়াবেকা, আমুরবুনিয়া, খুরাবাড়িয়া, পঁচাকরালিয়া ও ধানসাগর এলাকায় পাঁচ বার, ২০০৭ সালে পঁচাকোড়ালিয়া, নাংলি ও ডুমুরিয়ায় তিন বার, ২০১০ সালে গুলিশাখালীতে একবার, ২০১১ সালে নাংলীতে দুই বার, ২০১৪ সালে গুলিশাখালীতে একবার, ২০১৬ সালে নাংলী, পঁচাকোড়ালিয়া ও তুলাতলায় তিন বার, ২০১৭ সালে মাদ্রাসারছিলায় একবার এবং সবশেষ চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি ধানসাগর এলাকায় ফের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ২২ বারের অগ্নিকাণ্ডে ৭১ একর ৬৬ শতাংশ বনজ সম্পদের (সুন্দরী গাছসহ বিভিন্ন লতাগুল্ম) পুড়ে যায়; যার আর্থিক মূল্য ১৮ লাখ ৫৫ হাজার ৫৩৩ টাকা বলে বনবিভাগ জানিয়েছে। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জ সংলগ্ন লোকালয় হলো বাগেরহাটের শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও মোংলা উপজেলা। এই তিন উপজেলার বনসংলগ্ন গ্রামের মধ্যে রয়েছে ধানসাগর, জিউধরা, বৌদ্ধমারী ও কাটাখালী। এখানে কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। এই এলাকার উপর দিয়ে বয়ে গেছে ভোলা ও খড়মা নদী। নদীর ওপারেই সুন্দরবন। এখন নাব্যতা হারিয়েছে এই নদী দুটি। শীত মৌসুম এলে নদী শুকিয়ে হাঁটু পানি হয়ে যায়। ফলে বন সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করা মানুষ হেঁটে সুন্দরবনে ঢুকে পড়ে। বনসংলগ্ন একটি লোকালয়ের বাসিন্দা জামাল হোসেন, ইসমাইল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন খনন না হওয়ায় ভোলা নদী মরে গেছে। শীত মৌসুম এলে এই নদী শুকিয়ে যায়। ফলে স্থানীয় লোকজন অবাধে সুন্দরবনের প্রবেশ করতে পারে। এখানকার কিছু অসাধু মানুষ বনে ঢুকে বুঝে না বুঝে বনজ সম্পদের ক্ষতি করে থাকে। ভোলা নদী খনন না করলে স্থানীয় বাসিন্দারা আরও বেশি বেশি বনে ঢুকবে এবং বনের ক্ষতি করবে বলে তারা মনে করেন। মানুষের সচেতনতার অভাব রয়েছে উল্লেখ করে তারা মরে যাওয়া নদীগুলো খনন করে এখানকার মানুষদের বনে ঢোকা ঠেকানোর দাবি জানান। তেল গ্যাস বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির বাগেরহাট জেলা আহ্বায়ক ফররুখ হাসান জুয়েল বলেন, উপকূলীয় এলাকার মানুষকে সুরক্ষা দেয় সুন্দরবন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ সিডর, আইলা, আমপান থেকে সুন্দরবনই আমাদের রক্ষা করেছে। সুন্দরবন না থাকলে আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচতে পারব না। শীত মৌসুম এলে সুন্দরবনে আগুন লাগার খবর পাই। আগুন লাগার পর বনবিভাগ স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে আগুন নেভায় আর তদন্ত কমিটি করে। ওই কমিটি তদন্ত করে সরকারের কাছে নানা সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে প্রতিবেদন জমা দেয় বলে শুনি। তা বাস্তবায়ন হয় কি হয় না তা আমরা জানতে পারি না। স্থানীয়দের নিয়ে চলমান সমস্যার সমাধান করা বনবিভাগের উচিত উল্লেখ করে তিনি সুন্দরবনকে রক্ষা করতে জনসচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি বনবিভাগের আরও কঠোর হওয়ার দাবি জানান। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) বাগেরহাট জেলা কমিটির সদস্য সচিব মো. নূর আলম শেখ বলেন, গত দেড় দশকে অসংখ্যবার সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে পরিবেশ ও বনজ সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। বন রক্ষায় বনবিভাগ বিভিন্ন সময়ে নানা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। কোনোটা বাস্তবায়ন হয়েছে, কোনোটা বাস্তবায়ন হওয়ার অপেক্ষায় আছে। সম্প্রতি তিনটি নদ-নদী খননে সরকার বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে। এই খনন কাজ সঠিকভাবে করলে বন সংলগ্ন এলাকার সাধারণ মানুষের যাতায়াত বন্ধ করতে ভূমিকা রাখবে। বন সংলগ্ন এলাকায় মানুষকে আরও সচেতন করতে নানা ধরনের প্রচারণামূলক কর্মসূচি হাতে নেওয়ার আহ্বান জানান এই বাপা নেতা। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, বাগেরহাটের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জ নিয়ে সুন্দরবন পূর্ব অংশ গঠিত। সুন্দরবনে গত দেড় দশকে ২২ বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাই চাঁদপাই রেঞ্জে ঘটেছে। এসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বনবিভাগ তদন্ত কমিটি গঠন করে। ওই তদন্ত কমিটি বনজ সম্পদ রক্ষায় বিভিন্ন সময়ে নানা সুপারিশ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। এই সুপারিশের মধ্যে সবচেয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হয় বন সংলগ্ন মরে যাওয়া নদ-নদী খনন, সীমানা রক্ষা বেড়া এবং ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা। সুন্দরবন সুরক্ষা প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। বেলায়েত হোসেন আরও বলেন, গত জানুয়ারিতে মরে যাওয়া ভোলা, খড়মা ও আড়ুয়ার খাল খনন করতে ১৮ কোটি ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার ২০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে ২৩ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার অংশ খনন করা হবে। খুব শিগগির দরপত্র আহ্বান করে এই তিনটি খালের খনন কাজ শুরু হবে। তদন্ত কমিটির সুপারিশ করা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে বনের অগ্নিকাণ্ড কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com