দখিনের খবর ডেস্ক ॥ আন্দোলনের নামে সারাদেশে সহিংস ও সংঘাতের মাধ্যমে অরাজকতা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে দেশী-বিদেশী চক্র ছক কষছে। তাদের লক্ষ্য দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো। সেজন্যই পূর্বপরিকল্পিত নীল নক্সা অনুযায়ী সারাদেশে নাশকতা, নৈরাজ্য ও অরাজকতা ছড়িয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সংঘাত-সংঘর্ষে জড়িয়ে লাশ ফেলে আন্দোলনের ইস্যু বানানোর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ওই ধরনের নীল নক্সা বাস্তবায়নের জন্য কর্তব্যরত পুলিশের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। তার আগে পুলিশের পোশাকে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পুলিশ হত্যার চেষ্টার ঘটনাও ঘটানো হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা জিজ্ঞাসাবাদে অদৃশ্য মহল থেকে উস্কানি দেয়ার ইঙ্গিত গোয়েন্দ দের স্পষ্ট ধরা পড়ছে। গোয়েন্দাদের ধারণা, প্রথমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ছাত্রাবাস খোলা, পরীক্ষা পেছানোসহ নানা দাবিতে ছাত্রদের উস্কানি দিয়ে রাস্তায় নামানোর চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু সরকারের সুচিন্তিত সিদ্ধান্তে ছাত্ররা রাজপথের আন্দোলন ছেড়ে ঘরে ফিরে যায়। ফলে দেশী-বিদেশী চক্রের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আন্দোলনের নামে বিএনপি ও ছাত্রদল রাজপথে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু দেশে আন্দোলনের নামে সহিংস সংঘর্ষ, সংঘাতের মাধ্যমে অরাজকতা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা হলে সরকার হার্ডলাইন বেছে নেবে। কর্তব্যরত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আক্রান্ত হলে কোন ধরনের ছাড় না দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে তা কঠোর হস্তে দমন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সাথে মানুষের জানমাল রক্ষার্থে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের করণীয় সম্পর্কেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-ছাত্রাবাস খোলা, পরীক্ষা সংক্রান্ত্র দাবি ও ভিন্ন চিন্তার লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ, ডিজিটাল আইন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের নামে পুলিশের ওপর হামলা ও আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ওসব বিষয়ের আলোকে সরকারের নীতি নির্ধারক মহল ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সূত্র জানায়, বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদল ক্রমশ সরকারবিরোধী আন্দোলন দৃশ্যমান করতে পূর্বপরিকল্পিত উপায়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। কেবল বিএনপি নয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শ্রেণী পেশার মানুষখেৎব এখন নানা ইস্যুতে সরকারবিরোধী আন্দোলনের এক ফ্ল্যাট ফরমে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। ছাত্রদলকে লন্ডন থেকে নিয়ন্ত্রণ করে মাঠে নামিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িত হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার দাবি। অতীতে কোটা আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলনের সঙ্গে কৌশলে যারা মাঠে নেমেছিল তারাই এখন আন্দোলনের নামে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে রাজপথে নেমেছে। নিরাপদ সড়ক ও কোটা আন্দোলনের সময়ে লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডন থেকে টেলিফোনে উস্কানি দিয়েছিল। বিএনপির ওই নেতা টেলিফোনে উস্কানি দিয়ে যাদের সঙ্গে কথোপোকথন করেছে গোয়েন্দা সংস্থা তার অডিও টেপ সংগ্রহ করেছে। ওই নেতার উস্কানিতেই কোটা আন্দোলনের সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনসহ ঢাবির বিভিন্নস্থানে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে নাশকতা ও নৈরাজ্যের সৃষ্টি করা হয়। এখন আবার ওই চেনা মুখগুলোই রাজপথে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে রাজপথ রণাঙ্গনে পরিণত করার চেষ্টা করছে। সূত্র আরো জানায়, বর্তমান সরকার টানা ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় রয়েছে। এ সরকার দেশের উন্নয়নে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিশ্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে একটি সফল দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। কিন্তুসাম্প্রতিক সময়ে বিচ্ছিন্ন কিছু ছোটখাটো ঘটনা দৃশ্যমান হচ্ছে। যে ঘটনাগুলো ছোট হলেও সরকারের জন্য অস্বস্তিকর এবং ঘটনাগুলোকে আপাতদৃষ্টিতে বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে করা হলেও তা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ। কিছুদিন আগে আলজাজিরায় প্রচারিত খবরের শিরোনাম ছিল ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’। কিন্তু খবরে প্রধানমন্ত্রী বা সরকার প্রধানের কোন খবর নেই। মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর খবর হলেও সংবাদটি সরকারের জন্য সুখকর ছিল না। এদিকে পুলিশ সদর দফতরের একজন কর্মকর্তা জানান, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের জন্য পুলিশ সদর দফতরের পুলিশের আইজির সঙ্গে বিএনপি নেতৃবৃন্দ বৈঠক করেছে। বিএনপির নেতৃবৃন্দকে করোনাভাইরাসের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচী পালন করলে পুলিশের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে বলে জানান পুলিশের আইজি। কিন্তু স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মার্চ মাস আসার একদিন আগে হঠাৎ করেই বিএনপি ও ছাত্রদল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ভিন্ন চিন্তার লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনা এবং ডিজিটাল আইন বাতিলের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পরিবর্তে সহিংস সংঘর্ষের ঘটনা ঘটানো হয়। বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে কর্তব্যরত পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াঢ। পুলিশের প্রতি ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ধাওয়া করাসহ সংঘর্ষে জড়িয়ে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তাকে রণাঙ্গনে পরিণত করে।
Leave a Reply