দখিনের খবর ডেস্ক ॥ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশ আজ কঠিন সমস্যার মধ্য দিয়ে চলছে। গণতন্ত্রকে হরণ করা হয়েছে। মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। অনির্বাচিত সরকার একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমের গণমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করেছে। বিরোধী মত দমন করতেই কালো আইন তৈরি করেছে।’ গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দলের প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পাচুরিয়া এলাকায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। সেখানে পৌঁছে মির্জা ফখরুল প্রথমে তাঁর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান, জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতা, প্রয়াত মহাসচিবের সেজ ছেলে খোন্দকার আকবর হোসেন, মেজ ছেলে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল হামিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। শুধু সরকারের সমালোচনা করার জন্য রাজশাহীর সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু এবং দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে দেশে যে সরকার আছে, তারা বেআইনিভাবে নিজেদের নির্বাচিত ঘোষণা করে। নির্বাচনের আগের রাতে ভোট করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। আর এখন ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করে রাখার জন্য তারা নির্যাতন-নিপীড়ন চালাচ্ছে। অবৈধ এই সরকার দেশে এমন কিছু আইন তৈরি করেছে, যা দেশের মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ন করছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করে তারা আজ গোটা দেশের সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করে ফেলেছে। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করি। সভা-সমাবেশে নানা বক্তব্য দিই। রাষ্ট্রবিরোধী আইনের নামে সরকার বিএনপির নেতাদের নামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেছে। শুধু সরকারের সমালোচনা করার জন্য রাজশাহীর সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু এবং দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়েছে।’ ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত ঢাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার বিষয়ে তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার নিজেদের প্রয়োজনে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি পালনের অধিকার হরণ করেছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) এবং সরকারের ক্ষমতা নেই তাঁর খেতাব বাতিল করার। এটা করা হলে স্বাধীনতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে। দেশের মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। এখন যারা ক্ষমতায় বসে আছে, তারা বেআইনিভাবে আছে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য গণতান্ত্রিক আন্দোলন যারা করছে, সেটা জোরদার করতে হবে। অন্য কোনো রাষ্ট্রের কাউকে বলে কোনো লাভ হবে না। এখন দেশের সব মানুষকে জেগে উঠতে হবে। তাদের অধিকার আদায়ে আন্দোলন-সংগ্রামের পথে এগিয়ে আসতে হবে।’ তিস্তা চুক্তি সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার তিস্তা চুক্তি করবে না। বহুদিন আগে থেকেই তারা বলছে চুক্তি করবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা সেই চুক্তি করেনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী যা বলছেন তা সঠিক নয়। ১০ বছর আগে কোনো চুক্তি হয়নি। চুক্তি হলে তো আমরা পানি পেতাম। আমরা কোনো পানি পাচ্ছি না।’ বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে যে সম্পর্ক রয়েছে, সেই সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শুধু দিয়েই যাচ্ছে। কিছু পাচ্ছে না। আমরা এখন পর্যন্ত সীমান্তে মানুষ হত্যা বন্ধ করতে পারিনি। নদীগুলোর হিস্যা পাইনি।’ জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল করার বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) এবং সরকারের ক্ষমতা নেই তাঁর খেতাব বাতিল করার। এটা করা হলে স্বাধীনতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে। দেশের মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা হবে।
Leave a Reply