আমতলী প্রতিনিধি ॥ আমতলী-তালতলী অধিকাংশ মানুষ মাস্ক ব্যবহার করেন না। এতে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আশংঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত এক বছরে দুই উপজেলায় ২১৩ নাগরিক করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। উপজেলা প্রশাসনের মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধির কড়ারোপে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সর্বশেষ গত বছর ১২ ডিসেম্বর আমতলী এবং ৩০ ডিসেম্বর তালতলীতে দুইজন করোনায় আক্রান্ত হয়। তিন মাস পাঁচ দিন পরে বুধবার রাতে আমতলীতে এক যুবক এবং দুই মাস ১৫ দিন পরে গত মঙ্গলবার তালতলীতে এক যুবক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মাস্ক ব্যবহারে উদ্যোগ নিতে প্রশাসনের কাছে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন স্বাস্থ্য সচেতন নাগরিকরা। আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানাগেছে, গত বছর ৯ এপ্রিল আমতলীতে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রামিত হয়। ওই দিন উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ¦ জিএম দেলওয়ার হোসেন মারা যান। এরপর থেকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে´ করোনা নমুনা সংগ্রহ শুরু করে। গত ১১ মাস ৯ দিনে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) পর্যন্ত আমতলী হাসপাতাল তিন হাজার ৮৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। দুই উপজেলায় ২’শ ১৩ জন নাগরিক প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১০ জন মৃত্যুবরন করেন। দুইজন বর্তমানে চিকিৎসাধীন আইসোলেশনে আছেন এবং ২’শ ১ জন সুস্থ্য হয়েছেন। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ গত এক মাস ১০ দিনে ৪ হাজার ৯’শ ৪৬ জনকে টিকা দিয়েছেন। গত তিন মাসে আমতলী-তালতলীতে করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাব না থাকায় মানুষের মাঝে সচেতনতা এবং মাস্ক পরিধানের প্রবনতা নেই বললেই চলে জানান মোঃ সোহেল রানা। মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মানছে না সাধারণ মানুষ। হাটে বাজারে রয়েছে উপচে পড়া মানুষের ভীড়। মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় করোনা ভাইরাসে অধিক ঝুঁকিতে রয়েছে আমতলী ও তালতলী উপজেলার মানুষ। এদিকে আমতলী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার। ওই দিন হাজার হাজার লোক উপজেলা শহর ও ইউএনও অফিসে মাস্ক ব্যবহার ছাড়া ভীড় করেছেন। এতে করোনা ভাইরাসের ঝ^ুঁকি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। অপর দিকে গত তিন মাস পরে আমতলীতে এক যুবক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। ওই যুবক বাড়ীর আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাব দেখা দিলেও মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্য সচেতনে মানুষকে উপজেলা প্রশাসন কোন কার্যকারী ব্যবস্থা নিচ্ছে না। দ্রুত করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে প্রশাসনের কাছে মাস্ক ব্যবহারের উপর করারোপের দাবী জানিয়েছেন স্বাস্থ্য সচেতন নাগরিকরা। বৃহস্পতিবার আমতলী উপজেলা শহরের হাসপাতাল সড়ক, বাঁধঘাট চৌরাস্তা, ইউএনও অফিস সংলগ্ন এলাকা, সাকিব প্লাজা ও লঞ্চঘাট এলাকা ঘুরে দেখাগেছে, কোন মানুষই মাস্ক ব্যবহার করছে না। মাস্ক ব্যবহার ছাড়াই তারা চলাফেরা করছে। আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের সোহেল রানা বলেন, মাস্ক ছাড়া অহরহ মানুষ হাটে বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মাস্ক ব্যবহার করছেন না, স্বাস্থ্যবিধিও মানছে না। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আবার শুরু হয়েছে। প্রশাসেনর কাছে দ্রুত মাস্ক ব্যবহারে করারোপের দাবী জানাই তিনি। আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, করোনার প্রকোপ আবার বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। গত দুই দিনে আমতলী ও তালতলীতে দুইজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে করোনা ভাইরাস সংক্রামনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্ক রয়েছে। দ্রুত সকলের মাস্ক ব্যবহার এবং স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্য সচেতন হতে ইতিমধ্যে সরকারের নির্দেশনা পেয়েছি। করোনা ভাইরাস থেকে মানুষকে রক্ষায় মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার জন্য মাইকিং এবং মাস্ক বিতরন করা হবে। এরপরও যারা মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে না ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply