দখিনের খবর ডেস্ক ॥ ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে এবার সরকার গ্রাম পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছানোর উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমানে ইউনিয়ন পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবা রয়েছে। ইউনিয়নের ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (ইউডিসি) থেকে ওই সেবা নিতে হয়। এখন গ্রাম পর্যায়ে দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপনে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার একটি বড় উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন নামের ওই প্রকল্পে চীন সরকার আর্থিক এবং কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। আশা করা হচ্ছে চলতি মাসেই প্রকল্পটির কাজ শুরু হবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আইসিটি অধিদপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ৩ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকার ঋণ দেবে চীন সরকার। বাকি ২ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা সরকারে নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেয়া হবে। মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদনের জন্য প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হবে। আইসিটি অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন নামের প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে গ্রামপর্যায়ে এক লাখ ১০ হাজার ব্রডব্যান্ড সংযোগ স্থাপন করা হবে। শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব শক্তিশালী করতে এমন আরো ১০টি ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হবে। তাছাড়া ৫৭টি বিশেষায়িত ল্যাব, সেন্ট্রাল ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম এবং ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি সেন্টার করা হবে। প্রকল্পের অন্যান্য মূল কাজের মধ্যে রয়েছে- সব জেলা ও উপজেলা কমপ্লেক্স ভবনে নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টার স্থাপন, মাঠ পর্যায়ের ক্লাউড ফাইল সার্ভিস এবং ডিজিটাল স্টোরেজের জন্য কেন্দ্রীয় সার্ভার অবকাঠামো স্থাপন। ইতিমধ্যে পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ করেছে। প্রকল্পের ওপর পরিকল্পনা কমিশনের মতামতে বলা হয়, এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সরকারের সব ধরনের সেবাকে ই-সেবায় রূপান্তর করে জনগণের কাছে দ্রুত ও সহজে পৌঁছে দেয়া। ডিজিটাল শিক্ষার সম্প্রসারণ ও সহজলভ্যকরণের মাধ্যমে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের আইসিটি ক্ষেত্রে দক্ষতা উন্নয়ন, শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণে বিভক্তি দূরা করা। সূত্র জানায়, প্রকল্পের উন্নয়ন প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুযায়ী তার মাধ্যমে আইসিটি ল্যাব, স্মার্ট ভার্চুয়াল ক্লাসরুম এবং দূরশিক্ষণ প্ল্যাটফর্মসহ প্রয়োজনীয় আইসিটি অবকাঠামো সুবিধাসংবলিত একটি ডিজিটাল সাক্ষরতা সেন্টার স্থাপন করা হবে। আর সব ধরনের তথ্য সংরক্ষণে কেন্দ্রীয় সার্ভার থাকবে। তাছাড়া মাঠপর্যায়ে ১৭ হাজার ৫০০ সার্ভিস ডেলিভারি ডিভাইস বিতরণ কর হবে। অবকাঠামো সুবিধা হিসেবে অনাবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে ৪৯২টি। ২১তলা বিশিষ্ট আইসিটি টাওয়ার নির্মাণ করা হবে। ২০ হাজার কৃষককে বিশেষ স্মার্ট সেন্সর ডিভাইস দেয়া হবে। এদিকে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগ প্রকল্পটির মূল্যায়ন করেছে। প্রকল্পটি বিষয়ে ওই বিভাগের সদস্য মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম জানান, জনগণের কাছে সহজে এবং নির্বিঘ্নে সরকারের সেবা পৌঁছানোই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। তাতে তাদের দক্ষতা বাড়বে। নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। প্রকল্পটি গ্রামীণ অর্থনীতিতে নতুন গতি আনবে। অন্যদিকে প্রকল্পটি প্রসঙ্গে আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম জানান, বর্তমানে ইউনিয়ন পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবা রয়েছে। ইউনিয়নের ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (ইউডিসি) থেকে সেবা নিতে হয়। এখন গ্রাম পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছবে।
Leave a Reply