ভোলা প্রতিনিধি ॥ ভোলায় ডায়রিয়া পরিস্থিতি তীব্র আকার ধারণ করেছে। জেলার পাশাপাশি উপজেলাগুলোতেও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ভোলা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বেড না পেয়ে রোগীদের বারান্দা ও ফ্লোরে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। এদিকে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগিদের সেবা দিতে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। ভোলা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ দিনে ভোলা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে প্রায় ৩০০ জন। গড়ে প্রতিদিন ৫০ জনের বেশি ডায়রিয়া রোগি ভর্তি হয়েছে। ১২ মার্চ ৩৫ জন, ১৩ মার্চ ৪২ জন, ১৪ মার্চ ৪১ জন, ১৫ মার্চ ৪৫ জন, ১৬ মার্চ ৪৮ জন, ১৭ মার্চ ৪৬ জন ও ১৮ মার্চ দুপুর পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ৩৭ জন ডায়রিয়া রোগী। বয়স্কদের চেয়ে শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। ভোলা সদর হাসপাতালে রাজাপুর থেকে ১ বছর ৬ মাসের নাতি রোহানকে নিয়ে আসা আমিনুর বেগম দৈনিক বলেন, ‘ডায়রিয়া, ঠান্ডা ও জ্বর নিয়ে নাতিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ভর্তি করি। এখন দুপুর হলেও কোনো ডাক্তার দেখতে আসেনি। নার্স এসে একটু ওষুধ খাইয়ে দিছে। আর বাহির থেকে দুটা সিরাপ কিনে আনতে হয়েছে।’ ভোলা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী মাহিদের (৫) মা অভিযোগ করে বলেন, ‘বেড না পেয়ে ফ্লোরে বাচ্চাকে নিয়ে আছি। এখানে খুব দুর্গন্ধ। এখানে সুস্থ রোগী আসলেও অসুস্থ হয়ে যায়। আমার গন্ধে বমি আসতিছে। এখানে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’ ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি রোগী আমিনুর বলেন, ‘ভর্তির সময় জরুরি বিভাগে যে ব্যবস্থাপত্র দেয়া হয়েছে নার্স সেভাবেই চিকিৎসা করছেন। ডাক্তাররা কম আসছে।’ ভোলা সদর হাসপাতালে দায়িত্বরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নার্স বলেন, ‘গত ৭/৮ দিনে ডায়রিয়া রোগীদের চাপে আমরা চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। একটু দাঁড়ানোর সুযোগ পাচ্ছি না। তারপরও রোগীদের অভিযোগ থাকেই।’ ভোলা সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘প্রচন্ড গরম ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের জন্য জেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। দিনে দুবার চিকিৎসকরা রাউন্ডে যাচ্ছেন। হাসপাতাল হতে ডায়রিয়া রোগীদের ওষুধ দেয়া হচ্ছে। নিরাপদ পানি পান ও খাবার গ্রহণ করলে ডায়রিয়ায় প্রকোপ কমে যাবে। ’
Leave a Reply