দখিনের খবর ডেস্ক ॥ মা-বাবার কবরের পাশে সমাহিত হলেন বরেণ্য রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ৬ষ্ঠ জানাজা শেষে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মানিকপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। দুপুরে মওদুদ আহমদের জানাজায় অংশ নিতে কবিরহাট সরকারি ডিগ্রি কলেজ ও বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজ মাঠে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হতে থাকে। বিকাল তিনটায় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় কবিরহাট সরকারি কলেজ মাঠ। সেখানে তার তৃতীয় নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়। এরপরে অ্যাম্বুলেন্সে করে মওদুদ আহমদের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সরকারি মুজিব কলেজ মাঠে। সেখানে জানাজা শেষে নিজ বাড়ির দরজায় ৬ষ্ঠ জানাজা শেষে সমাহিত করা হয়। এর আগে সিঙ্গাপুরে একটি জানাজা ও ঢাকায় দুটি জানাজা শেষে গতকাল শুক্রবার দুপুর ৩টা ১০ মিনিটের দিকে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে কবিরহাট ডিগ্রি কলেজ মাঠে আনা হয় মওদুদ আহমদের মরদেহ। জানাজায় অংশ নেন নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য তাবিথ আউয়াল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান, কবিরহাট পৌরসভার মেয়র জহিরুল হক রায়হান, কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুর রহিম চেয়ারম্যান, সাধারণ সম্পাদক লিটন চৌধুরী, কবিরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জুসহ দলীয় নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের জনগণ। অপরদিকে সরকারী মুজিব কলেজ মাঠে জানাজায় অংশ নেন বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্যাহ বুলু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, সাবেক বিরোধী দলীয় চিপ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুক, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাল উদ্দিন চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান রিপন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল হাই সেলিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম সিকদার, বসুরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি আবদুল মতিন লিটনসহ দলীয় নেতাকর্মীও সর্বস্তরের জনগণ। এ সময় মরহুমের জন্য দোয়া চান মরহুমের স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য হাসনা জসিম উদ্দিন মওদুদ। মওদুদ আহমদের ব্যক্তিগত সহকারী মমিনুর রহমান সুজন বলেন, ঢাকার আনুষ্ঠানিকতা শেষে হেলিকপ্টারযোগে মরদেহ কবিরহাট উপজেলায় নিয়ে আসা হয়। বাদ জুম্মা কবিরহাট সরকারি কলেজ মাঠ, বিকেল সাড়ে ৪ টায় বসুরহাট সরকারি কলেজ মাঠ, ৬ টা ১০ মিনিটে মানিকপুরের নিজ বাড়ির দরজায় জানাজা শেষে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। এর আগে গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়। এরপর বিএনপি, নাগরিক ঐক্য, জাগপা, এনডিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ মওদুদ আহমদের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় ৬ বারের সংসদ সদস্য ও সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর জানাজার জন্য সংসদ ভবনে অনুমতি না দেয়ায় অনেককে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মওদুদ আহমদের মরদেহে শ্রদ্ধা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, জাগপার একাংশের সভাপতি লুৎফর রহমান, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার ও ২০-দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। শ্রদ্ধা জানানো শেষে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দল-মত নির্বিশেষে আজ আমাদের তাকে শ্রদ্ধা জানানো উচিত। উনি মুক্তিযুদ্ধের একটি অংশ। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বেলা ৯ টা ৫০ মিনিটে জানাজার জন্য সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মওদুদ আহমদের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং দলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। দুপুরে হেলিকপ্টারে করে মরদেহ নেয়া হয় মওদুদ আহমদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মানিকপুরে। এরপর তাকে সমাহিত করা হয়। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সিঙ্গাপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মওদুদ আহমদ। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। এরপর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার মরদেহ দেশে এসে পৌঁছায়।
Leave a Reply