নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল বরিশালের করোনা পরিস্থিতি। প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। স্বাস্থ্যবিধি মানতে জনগনের অসচেতনতা এবং অবহেলার কারণে ক্রমশঃই অবনতি হচ্ছে করোনা পরিস্থিতির। তবে সেই তুলনায় প্রস্তুতি নেই শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। তারা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় আইসিইউ ও অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ জনবল বাড়ানোর দাবী জানিয়েছেন। অপরদিকে করোনা পরিস্থিতি খেকে বাঁচতে স্বাস্থ্য বিধি মানাসহ মাস্ক ব্যবহারের তাগিদ দিয়েছেন হাসপাতালের উপ-পরিচারক। দীর্ঘ প্রায় ১ বছর পর গত ৭ মার্চ শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা শূন্যের কোটায় নেমে এসেছিলো। পরদিন ৮ মার্চ ভর্তি হয় করোনা আক্রান্ত ৩ জন রোগী। হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে রবিবার দুপুর পর্যন্ত ভর্তি ছিলেন ৫৪ জন রোগী। এর মধ্যে ২২ জনের করোনা পজেটিভ। করোনা ওয়ার্ডের ১২টি আইসিইউ বেডের ৬টিতে চিকিৎসাধীন আছেন মুমূর্ষ রোগীরা। করোনা উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিন গড়ে ১৫ জন রোগী ভর্তি হচ্ছে করোনা ওয়ার্ডে। গত ৭ মার্চ থেকে গতকাল পর্যন্ত এই হাসপাতালে মারা গেছে করোনা আক্রান্ত ২ জন রোগী। অপরদিকে মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবেও করোনা সনাক্তের হার বাড়ছে। এই ল্যাবে গত শনিবার ২৪৬ জনের করোনা পরীক্ষায় পজেটিভ হয়েছে ২৩ জনের। এর আগের দিন শুক্রবার ৯জন এবং তার আগের দিন বৃহস্পতিবার পিসিআর ল্যাবে করোনা পজেটিভ হয়েছে ১৮ জনের। এভাবে করোনা আক্রান্ত ও সনাক্তের হাড় বাড়লেও স্বাস্থ্য বিধি মানার ব্যাপারে তেমন কোন আগ্রহ নেই জনসাধারনের। শারীরিক দূরত্ব অনুসরনের বিষয়টি ভুলেই গেছে মানুষ। হাত ধোয়ায় নিয়মও উবে গেছে। কিছু মানুষ মাস্ক পড়লেও বেশির ভাগ মানুষ মাস্ক ছাড়াই বাইরে চলাফেরা করছেন। কেউ মাস্ক বেঁধে রাখেন চোয়ালে, কেউ রাখেন হাতে আবার কারও মাস্ক থাকে পকেটে কিংবা ভ্যানিটি ব্যাগে। করোনা থেকে বাঁচতে মাস্ক পড়া প্রয়োজন স্বীকার করলেও মাস্ক না পড়ার নানা অজুহাত দেখাচ্ছেন তারা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব পড়েছে বলে স্বীকার করেন শের-ই বাংলা মেডিকেলের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো মনিরুজ্জামান। তবে সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেই তাদের। তিনি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় দ্রুত হাসপাতালে আইসিইউ বেড ও অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং জনবল বাড়ানোর তাগিদ দেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ থেকে নিজেকে রক্ষায় শারীরিক দূরত্ব অনুসরণ, বারবার হাত ধোয়া এবং মাস্ক ব্যবহারের বিকল্প নেই বলে জানান শের-ই বাংলা মেডিকেলের উপ-পরিচালক ডা. মো. জসিম উদ্দিন। স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত করতে না পাড়লে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে বলে আশংকা করেন তিনি।
Leave a Reply