আমতলী প্রতিনিধি ॥ বরগুনার তালতলী টেংরাগিড়ি ইকোপার্কে ভগ্নিপতির সাথে বেড়াতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী। বুধবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার ওই নারী বাদী হয়ে রাতেই তালতলী থানায় চারজনকে আসামি করে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলার মহিপুর আলীপুর গ্রামের সোহাগ (২৫), তালতলী উপজেলার ইদুপাড়া গ্রামের আলাউদ্দিন খলিফার ছেলে রুবেল (২৮), ইদুপাড়া গ্রামের জালাল খলিফার ছেলে মিজান (২৪) ও ইদুপাড়া গ্রামের শাহিন খলিফার ছেলে জাহিদুল (২১)। বৃহস্পতিবার সকালে আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ধর্ষণের শিকার নারী জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে তাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের ওই তরুণী তার খালাতো ভগ্নিপতির সাথে বুধবার বিকেলে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল যোগে বরগুনার তালতলী উপজেলার টেংরাগিড়ি ইকোপার্কে বেড়াতে যান। বনে ঘুরতে গিয়ে তাদের পানির পিপাসা লাগে। এ সময় দুলাভাই শ্যালিকা এবং মোটরসাইকেল চালক মাহাবুবকে বনের মধ্যে হরিণের খাঁচার সামনে দাঁড় করিয়ে খালের অপর প্রান্তের দোকানে পানি আনতে যান। এসময় বনের ভিতরে অবস্থান করা সোহাগ, রুবেল, মিজান ও জাহিদুল হঠাৎ করে হরিণের খাঁচার সামনে উপস্থিত হয়ে ওই নারীর মুখ চেপে ধরে বনের ভিতরে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় মোটরসাইকেল চালক চিৎকার করলে অভিযুক্তরা তার মোবাইল ফোন এবং টাকা ছিনিয়ে নিয়ে তাকে দড়ি দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখে। পরে অভিযুক্তরা ওই তরুণীকে নিয়ে গভীন বনে চলে যায় এবং সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে জঙ্গলে ফেলে যায়। পরে রাত দশটার দিকে স্থানীয়রা ওই নারীকে উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে তালতলী থানার ওসি (তদন্ত) মো. ফরিদুল ইসলাম ধর্ষণের শিকার ওই নারীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। এ ঘটনার ওই নারী বাদী হয়ে রাতেই চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ফকির হাট বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি ইউপি সদস্য মো. আব্দুস সালাম হাওলাদার বলেন, সোহাগ, জাহিদুলসহ ১২-১৫ জনের একটি সঙ্গবদ্ধ চক্র প্রায়ই টেংরাগিড়ি ইকোপার্কে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সাথে খারাপ আচরণ করে। এরা ছিনতাইসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত। এদের কঠিন শাস্তি দাবি করেন তিনি। তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) ফরিদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ধর্ষণের শিকার ওই নারীকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার নারী বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে। তিনি আরো বলেন, আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নির্যাতিত ওই নারীর জবানন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। জবানবন্দি শেষে তাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বরগুনার জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply