নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল নগরীর দক্ষিণ আলেকান্দা ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাজীপাড়া এলাকায় গলায় ফাঁস দিয়ে দশম শ্রেনীর এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার দুপুরের দিকে ওই ছাত্রীর নানা হাফেজ মো. আলমগীরের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। তামান্নাকে মারধর করে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার প্রচারনা চালানোর অভিযোগ করেন তার বাবা রফিকুল ইসলাম টিপু। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন তামান্নার মা জাকিয়া বেগম। তামান্না আফরিন (১৫) একই এলাকার রফিকুল ইসলাম টিপুর বড় মেয়ে। তামান্নার মা জাকিয়া বেগমের সাথে প্রায় ৩ বছর আগে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় তার বাবা টিপুর। এরপর থেকে সে মায়ের সাথে নানা বাড়ি বসবাস করে আসছিলো। তামান্না নগরীর দক্ষিণ আলেকান্দা এআরএস বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেনীর ছাত্রী ছিলো। পারিবারিক সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে তামান্না রাতভর ফোনে কারও সাথে কথা বলতো, আবার কখনও ফেসবুক কিংবা ইউটিউব চালাতো। দিনের বেলায় ঘুমাতো। এই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে ঘুম থেকে ওঠে সে। পরে সে বাসার দোতালায় ওঠে। বিকেল সোয়া ৩টার দিকে তামান্নার মা অফিস থেকে বাসায় ফেরার পর মেয়ের খোঁজে দোতালায় গিয়ে দেখেন সে আত্মহত্যা করেছে। পরিবারের অন্যান্যরা তাকে উদ্ধার করে শের-ই বাংলা মেডিকেলে নিয়ে যায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মা জাকিয়া বেগম জানান, তামান্না খুব ইমোশনাল ছিলো। রাত জেগে সে কারও সাথে কথা বলতো, ফেসবুক কিংবা ইউটিউব চালাতো। এ কারনে গত শব-ই বরাতের রাতে রাগ করে তামান্নার ফোনের হেড ফোন ছিড়ে ফেলেন তিনি। পরে আবার মেয়ের আবদারে পুরনো একটা হেডফোন দেন তিনি। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে তাকে কোন ধরনের বকা দেয়া হয়নি বলে দাবি তার। তামান্নার আত্মহত্যার সুনির্দিস্ট কোন কারণ বলতে পারছেন না জাকিয়া বেগম। তামান্নার বাবা রফিকুল ইসলাম টিপুর অভিযোগ, তার মেয়েকে তার নানী ও মামা মিলে মারধর করে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার প্রচারনা চালিয়েছে। তিনি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন। তবে তাকে মারধর কিংবা হত্যা করার কথা অস্বীকার করেন তামান্নার মা জাকিয়া বেগম। কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মো. নুরুল ইসলাম জানান, তামান্নার মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে তার লাশের ময়না তদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি।
Leave a Reply