নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ কারিগরি জ্ঞান ছাড়াই পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গ্রামের সাধারণ মানুষের প্রচেষ্টায় তৈরি করা হয়েছে কাঠের ভাসমান সেতু। আর এ ভাসমান সেতু পাল্টে দিয়েছে উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের গ্রামীন জনপদের চিত্র। ৭২টি প্লাস্টিকের ড্রামের উপর কাঠের পাটাতন করে এটি নির্মাণ করা হয়। প্রায় ১১৬ মিটার দৈর্ঘ্যের এবং চার ফুট প্রস্থের ভাসমান সেতুটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে এর উপর দিয়ে পণ্যবাহী ভ্যান চলাচল করতে পারবে। এছাড়া ড্রামগুলি এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে যে, ভারসাম্য রক্ষা করতে পারবে। এতে প্রায় আড়াই লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় পাখিমার খালের উপর ১১৬ মিটার দীর্ঘ আয়রন ব্রিজ নির্মাণ করে। এরপর গত ২০২০ সালে ৬ আগস্ট রাতে হঠাৎ ভেঙে খালে তলিয়ে যায়। ফলে নীলগঞ্জ ইউনিয়নের সবজির গ্রাম খ্যাত মজিদপুর, এলেমপুর, কুমিরমারাসহ আশপাশের গ্রমের কৃষকদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজার জাত করা একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। এরপর গ্রামবাসীর অর্থায়নে এবং স্বেচ্ছাশ্রমে ভাসমান এ সেতু নির্মাণ করে। কৃষকসহ স্থানীয়দের পারাপারে কাঠের ভাসমান সেতুটি একমাত্র ভরসা। তবে তাদের দাবি এ খালের উপর একটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের। কুমিরমারা গ্রামের বাসিন্দা মো.নুরুল আমিন গাজী বলেন, আয়রন ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার পর অন্তত ১০-১২ গ্রামের মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি হয়। ‘কোনো উপায় না পেয়ে নিজেদের সংগঠন ‘আদর্শ কৃষক সমবায় সমিতি’র সদস্যরা জোট বেধে নিজেদের অর্থায়নে সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। গ্রামবাসীদের অর্থ ব্যয় করে এ ভাসমান সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয় শিক্ষক চিন্ময় সরকার বলেন, প্রায় সহস্রাধিক সবজি চাষিরা বছরব্যাপী উৎপাদিত মৌসুমি শাক-সবজি বাজারজাত করতে একমাত্র পথ। ভাসমান সেতুর কারণে পাখিমারা খালের পূর্ব পাড়ের শিক্ষার্থীরা উপকৃত হয়েছে। এছাড়া সকল শ্রেণি পেশার মানুষের যাতায়াত এখন অনেক সহজ হয়েছে। এলজিইডি উপজেলা প্রকৌশলী মোহর আলী বলেন, ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় সেখানে গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণ করা হবে।
Leave a Reply