নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দীর্ঘ সৈকতজুড়ে বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা। কোন কোলাহল নেই। যতদুর চোখ যায়; শুধু বেলাভূমে রোদের আলো ঝিলমিল করছে। জনমানবহীন, নীরবতা বিরাজ করছে কুয়াকাটার দীর্ঘ সৈকত। পরিচ্ছন্ন বেলাভূমিও যেন আরও সতেজ হয়ে উঠছে। লাল, ধুসর কাঁকড়ারা ভাঁটিতে বেলাভূমে আঁকছে আল্পনা। মহামারি করোনার বিস্তার ঠেকাতে পহেলা এপ্রিল থেকে কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র আগামি ১৫ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণায় এমন জনমানবশূণ্য হয়ে আছে গোটা সৈকত। ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে হোটেল-মোটেল, রেস্টহাউস-গেস্ট হাউসসহ খাবার হোটেল-রেস্তরা এবং পর্যটক কেন্দ্রীক বেচাকানার দোকানগুলো। অন্তত ক্ষুদে প্রায় তিন শ’ দোকানি ইতোমধ্যে বেকার হয়ে গেছে। চা, কফি, ডাব, পানসিগারেট, ফুচকা, কাঁকড়া-মাছ ফ্রাই, চটপটি, চকোলেট-আঁচারসহ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রীর অধিকাংশ দোকানগুলো বন্ধ থাকছে। গোসলকরার কাপড়সামগ্রী বিক্রির দোকান পর্যন্ত বেচাকেনা শুন্য হয়ে আছে। কেউ কেউ খুলে রাখলেও নেই কোন ক্রেতা। কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, তাঁদের সংগঠন আওতাধীন ৬৭টিসহ প্রায় ১২০টি হোটেল-মোটেল রিসোর্ট, গেস্টহাউস, রেস্ট হাউস রয়েছে কুয়াকাটায়। যেখানে গড়ে ১০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০-৬০জন কর্মচারী রয়েছে। এখন এঁদের কাজবিহীন অবস্থায়, কোন উপার্জন না থাকায় কর্মচারীদেও বেতন-ভাতা দেয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কুয়াকাটা জন্মভূমি সংগঠনের সদস্যরা কুয়াকাটায় ভাসমান মানসিক ভারসাম্যহীন প্রায় ২০জন নারী-পুরুষকে নিজস্ব এবং সংগৃহীত তহবিল থেকে খাবার পরিবেশনের কাজ শুরু করেছে। প্রথমবারে করোনার ধকলেও এ সংগঠণ এসব মানষের খাবার সরবরাহ করেছে। প্রায় দুই শ’ বাণিজ্যিক ফটোগ্রাফার, বীচের চেয়ার-ছাতা বিক্রেতা প্রায় ৫০ জন। ট্যুরিস্ট বোট ব্যবসায়ী রয়েছেন প্রায় ২০জন। এঁদের কর্মচারীসহ প্রায় ১০০ জন বেকার রয়েছেন। বেকার হয়ে গেছে পর্যটকদের টানা অটো-ভ্যান চালক। একই দশায় ভাড়াটে মোটর সাইকেল চালকরা। তবে এঁদের কিছু আয়ের সুযোগ রয়েছে। শুধুমাত্র খুটা জেলেসহ মাছ ধরার পেশা সংশ্লিষ্টরা বেকার নেই। তবে ক্রেতা কমে তাদের পেশাও ক্ষতির কবলে পড়েছেন।
Leave a Reply