বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) করোনা ওয়ার্ডে অভাব-অভিযোগের শেষ নেই রোগী ও তাদের স্বজনদের। প্রত্যাশা অনুযায়ী চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। আইসিইউ বেডের সংকটের কারণে মুমূর্ষু রোগীরা মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। করোনা ওয়ার্ডের ওষুধপত্রও কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে। খাবারের মানও যাচ্ছে তাই। সব কিছু মিলিয়ে মানবিক বিপর্যয় চলছে শের-ই বাংলা মেডিকেলের করোনা ওয়ার্ডে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, গত এক বছরে অভিজ্ঞতা ছাড়া কিছুই বাড়েনি। বরং লজিস্টিক সাপোর্ট আরও কমেছে। এ অবস্থায় জরুরী ভিত্তিতে স্থায়ী জনবল নিয়োগের উপর গুরুত্বারোপ করেছে হাসপাতাল প্রশাসন। করোনা প্রকোপের শুরুতে গত বছরের ১৭ মার্চ শের-ই বাংলা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালের নতুন নির্মিত একটি ৪ তলা ভবনে দেড়শ’ বেডের করোনা ওয়ার্ড চালু করে কর্তৃপক্ষ। করোনা ওয়ার্ডে ১২ বেডের একটি আইসিইউ ইউনিট রয়েছে। এক বছর আগে চালু হওয়া করোনা ওয়ার্ড কিংবা করোনা ওয়ার্ডের আইসিইউ ইউনিটের জন্য কোন স্থায়ী জনবল এখনও নিয়োগ হয়নি। অন্যান্য ওয়ার্ড থেকে ধার করা ৯জন ডাক্তার এবং ১৫জন নার্স ৩ শিফটে কোনমতে করোনা ওয়ার্ডে রোগীর সেবা দিচ্ছেন। করোনা ওয়ার্ডের আইসিইউ ইউনিটেও অন্য ওয়ার্ড থেকে ধার করা মাত্র ৩ জন ডাক্তার এবং ৩ জন নার্স মুমূর্ষু রোগীর সেবা দিচ্ছেন। পুরো করোনা ওয়ার্ড এবং আইসিইউ ইউনিটে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন কিংবা রোগীর ফুটফরমায়েশ করার জন্য ৩ শিফটে দায়িত্ব পালন করছেন চতুর্থ শ্রেণির মাত্র ৩জন কর্মচারী। গত এক বছরেও করোনা ওয়ার্ডে স্থায়ীভাবে নিয়োগ করা হয়নি কোন জনবল। বরং এক বছর আগের অনেক যন্ত্রপাতি কার্য ক্ষমতা হারিয়েছে। এ কারনে করোনা ওয়ার্ডের রোগী ও তাদের স্বজনদের অভাব-অভিযোগ নিত্যদিনের। প্রত্যাশা অনুযায়ী চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। আইসিইউ বেডের সংকটের কারনে মুমূর্ষ রোগীরা মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। করোনা ওয়ার্ডের ওষুধপত্রও কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে। খাবারের মানও যাচ্ছে তাই। দুর্গন্ধময় করোনা ওয়ার্ড সহ ফ্লোর পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা করছেন রোগীর স্বজনরা। ডাক্তার ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে মানবিক বিপর্যয় চলছে শেবাচিমের করোনা ওয়ার্ডে। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. মনিরুজ্জামান বলেন, গত এক বছরে ডাক্তার-নার্সদের অভিজ্ঞতা ছাড়া আর কিছুই বাড়েনি। বরং লজিস্টিক সাপোর্ট কমেছে। অধিক ব্যবহারের কারণে গত এক বছরে অনেক যন্ত্রপাতি কার্যক্ষমতা হারিয়েছে। আরও নতুন যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। আইসিইউ ইউনিটে বেড সংখ্যা বাড়ানো জরুরী। ধার করা চিকিৎসক দিয়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী চিকিসৎা সেবা দেয়া যাচ্ছে না। তাই রোগীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা দেয়ার জন্য জরুরী ভিত্তিতে ডাক্তার ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ এবং লজিস্টিক সাপোর্ট বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. মনিরুজ্জামান।
Leave a Reply