স্টাফ রিপোর্টার ॥ কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মী আমির গাজীকে (২৪)। নিহত আমির নগরীর ১৪নং ওয়ার্ডের আলেকান্দা রিফিউজি কলোনি এলাকা বাসিন্দা আলতাফ গাজীর পুত্র। পুত্রের হত্যাকারীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বরিশাল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে একমাত্র ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি করে কান্নায় ভেঙে পরেন নিহতের বাবা ও মা। সংবাদ সম্মেলনে নিহতের পিতা আলতাফ গাজী বলেন, আমার একমাত্র পুত্র আমির গাজী বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়াও তার মীরাবাড়ির পুল মসজিদের সামনে কবুতর এবং পাখির দোকান ছিলো। ফলে ব্যবসায়ীক কাজে আসা যাওয়ার জন্য আমির একটি ইয়ামাহা মোটরসাইকেল ব্যবহার করতো। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি আমিরের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি চুরি হয়। অনেক খোঁজাখুজির পর আমির জানতে পারে তার চুরি হওয়া মোটরসাইকেলটি নগরীর ২৩নং ওয়ার্ডের সিএন্ডবি রোডের পশ্চিম পাশের্^ অবস্থিত ইসলামপাড়ার আসাদুজ্জামান বাদশার ওয়ার্কশপে রাখা আছে। খবর পেয়ে গত ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আমির গাজী ঘটনাস্থলে গিয়ে মোটরসাইকেলটি দেখতে পেয়ে ওয়ার্কশপ থেকে বের করছিলেন। এ সময় নিহতের বন্ধু বনি আমিন ও হানিফ আকনের সহযোগিতায় চিহ্নিত কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসী এমরান হোসেন, হৃদয়, রাজা, মেহেদী, আবিদ, আসাদুজ্জামান বাদশা, রাফিসহ তাদের অন্যান্য সহযোগিরা অর্তকিতভাবে হামলা চালিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আমির গাজীকে মারাত্মক জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাকে (আমির) উদ্ধার করে প্রথমে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৪ মার্চ রাত সাড়ে আটটার দিকে আমিরের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় নিহতের মা খাজিদা বেগম একটি মামলা দায়েরের পর পুলিশ দুইজনকে আটক করলেও বর্তমানে তারা জামিনে বের হয়ে মামলা উত্তোলনের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি অব্যাহত রেখেছে। পরবর্তীতে গত ৪ এপ্রিল নিহতের মা খাদিজা বেগম বাদী হয়ে বরিশাল চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আরো একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। নিহতের বাবা আলতাফ গাজী আরও বলেন, যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তারা ওই এলাকার কিশোর গ্যাং সন্ত্রাসী নামে পরিচিত। একটি মোটরসাইকেলের জন্য তারা আমার একমাত্র ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমি এই হত্যাকারীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। বলেই কান্নায় ভেঙে পরেন নিহতের বাবা ও মা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহতের ফুফাতো ভাই সুজন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আমির গাজীর বোন জোনাকী ইসলাম, নানী জোহরা বেগম, চাচাতো ভাই মোঃ খায়রুল গাজী প্রমুখ।
Leave a Reply