স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত লকডাউন ঢিলেঢালাভাবে চলছে বরিশালে। তবে করোনার সংক্রমন রোধে, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে বরিশালে অভিযান চালিয়েছেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। মঙ্গলবার (০৬ এপ্রিল) সকাল থেকে কীর্তনখোলা নদীর চরকাউয়া খেয়াঘাট এলাকার নগর প্রান্ত থেকে এ অভিযান শুরু করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জাবেদ হোসেন ও মো. আলী সুজা। পর্যায়ক্রমে নগরীর ডিসি ঘাট, চাঁদমারি, মেডিক্যাল কলেজ, বান্দরোডসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালান তারা। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জাবেদ হোসেন জানান, জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য এই অভিযান চালানো হচ্ছে, পাশাপাশি মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া মাস্ক পরতে বাধ্য করতে জরিমানাও করা হচ্ছে। জনসাধারণকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে এবং মাস্ক পরাতে এ ধরণের অভিযান অব্যাহত রাখার কথা জানান তিনি। এদিকে শহরের প্রধান প্রধান সড়কে অনুমোদন ব্যতিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দোকান-পাট বন্ধ থাকলেও পাড়া মহল্লায় চায়েরসহ বিভিন্ন ধরণের দোকানপাট খোলা রাখা হয়েছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অর্ধেক সাটার খুলে এসব দোকানের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এমনকি লকডাউনের প্রথম দিন সোমবার দিবাগত রাত ১১ টা পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন এলাকায় চায়ের দোকানগুলো খোলা রাখতে দেখা গেছে। এদিকে বাস-লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকলেও নগরের বিভিন্ন স্থানে রিকশাসহ থ্রি-হুইলার যানবাহন চলতে দেখা গেছে। সেই সঙ্গে মহাসড়কেও থি-হুইলারের একক আধিপত্য দেখা গেছে। আবার গন্তেব্যে যেতে সে সব যানবাহনে যাত্রীদের দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে। এদিকে খোলা স্থানে বাজার পরিচালনা করার কথা থাকলেও সেটিও মানছে না কেউ। নগরের চকবাজার এলাকার বাসিন্দা নুরুল আমিন জানান, নগরজুড়ে প্রধান সড়কগুলোতে দোকান-পাট বন্ধ রয়েছে। তবে পাড়া-মহল্লায় চায়ের দোকানসহ বিভিন্ন ধরণের অপ্রয়োজনীয় দোকান-পাট খোলা রয়েছে। কেউ কেউ সাটার অর্ধেক খুলে দোকান চালাচ্ছেন। তাছাড়া সকাল থেকে নগরে রিকশা, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন ধরণের থ্রি-হুইলার চলাচল করতে দেখা গেছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরিরত জিয়াউল হক জানান, গতকালকের থেকে আজ রাস্তায় লোকজনের সংখ্যা বেশি মনের হয়েছে। আবার স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলা হলেও মাস্ক ব্যবহারে অনীহা এখনো সাধারণ মানুষের মধ্যে। উল্লেখ্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে আজ ১১৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন, এর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত রয়েছেন ২২ জন। অপরদিকে ৫ এপ্রিল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের পিসিআর ল্যাবে ১৭৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে এ যাবৎ কালের সর্বোচ্চ সংখ্যক ৫৮ জনের রিপোর্টে করোনা পজেটিভ এসেছে। যা শতকরা হিসেবে ৩০ ভাগ। বরিশাল জেলায় একই সময়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮। এর মধ্যে শুধু সিটি করপোরেশন এলাকায় ৪১ জন। গত এক বছরে গোটা বরিশাল বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৭৬৬ জন এবং ২১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে বরিশাল জেলায় সর্বোচ্চ ৪৯৪২ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ৯৩ জন। এছাড়া শুধু শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক বছরে করোনা ওয়ার্ডে করোনাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫০২ জন।
Leave a Reply