বাউফল প্রতিনিধি ॥ পটুয়াখালীর বাউফলে মুগ গাছে ফলছিদ্রকারী ল্যাদা পোকার আক্রমন দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় অতিরিক্ত ফলন দেখে খুশি হয়ে ছিলেন কৃষকরা। কিন্তু শেষ লগ্নে ফলছিদ্রকারী এই ল্যাদা পোকার আক্রমনের কারণে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পরেছেন। ওষুধ প্রয়োগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। এই পোকায় ডালের ছড়া কেটে ফেলায় জমিতেই তা বিনষ্ট হচ্ছে। শুক্রবার সরেজমিনে নাজিরপুর ইউনিয়নের ছোটডালিমা গ্রামে গিয়ে কথা হয় কৃষক সুলতান মাতুব্বরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মুগ গাছের মাথার দিকে চাইলে কান্দন অ্যায়। গাছগুলা কি সুন্দর হইছিল। কিন্ত পোকে সব খাইয়া হালাইছে ডাইল না পাকলে তুলমু ক্যামনে ? কিন্তু য্যামনে পোকে ডাইলের ছড়া কাইটা ফেলাইছে হ্যাতে তো অনেক ক্ষতির মুখে পড়মু। কাডা ডাইল ক্ষ্যাত থাইক্কা তোলা সম্ভব না। শ্যাষ সময়ে এমন সমস্যায় আমাগো ঘুম নাই। আমার এই বছর এক একর জমি চাষের লইগ্যা ট্রাক্টর খরচ হইছে চাইর হাজার টাকা, রোপনের লইগ্যা ১৫ কেজি ডাইল কিনছি ১ হাজার ৮’শ টাকায়, পোকার আক্রমন ঠেকাইতে ওষুধ কিনছি ১৪’শ ৮০ টাকার। সব মিলিয়ে আমার খরচ হইছে ৭’হাজার ২’শ ৮০ টাকা। একর প্রতি ৭/৮ মন ডাইল হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তুফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমনে ফলন একরে ৩/৪ মনে নাইম্যা আসতে পারে। আর তাতে বাজার দাম যা হইবে তা দিয়া উৎপাদন খরচ বাদ দিয়া লাভের মুখ দেখা যাইবো না। বরং লোকসানের মুখে পড়তে হইবো।’ একই গ্রামের আরেক চাষী বজলু মৃধা বলেন, ‘আমার দেড় একর জমির মুগডাইলের অর্ধেকেও বেশি লম্বা-গোল আকৃতির একজাতের পোকার আক্রমনে নষ্ট হইয়া যাইতাছে। কি ভাবে কি করমু চিন্তা কইরা পাইনা।’ পার্শ্ববর্তী গ্রামের কৃষক সফিক মুন্সি বলেন, ‘আমার এক একর জমির মুগডাল গাছের ৭৫ ভাগই পোকায় নষ্ট কইরা ফেলাইছে। অঅমি অহন দিশেহারা হয়ে পরেছি। মনে হয় মাথায় আকাশ ভাইঙ্গা পড়ছে। ওষুধ ছিটাইলেও কাম হয়না।’ তার অভিযোগ অভিযোগ, এই দুঃসময়ে কৃষি অফিসের কোন লোকের খো পাইনাই। তারা কেউ গ্রামে আইসা খবর নেয় নাই।’ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এ বছর উপজেলায় ১৮ হাজার ৭’শ ৬২ হেক্টর জমিতে মুগ ডালের আবাদ করা হয়েছে। মুগ ডালের ফলন ভাল হলেও কিছু কিছু এলাকায় ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমন দেখা দিয়েছে। এতে ডালের ছড়া ঝরে পড়ছে। ওই পোকার সংক্রামন বেশী হলে ফল বিপর্যয় দেখা দিতে পাড়ে। সে ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদেকে কৃষি অফিসে যোগাযোগ করা জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর নিচ্ছেন। বৃষ্টি না হওয়ায় প্রচন্ড রোধে এ ধরণের পোকা হানা দিয়েছে।
Leave a Reply