বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৪ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
তারেক রহমানের বিজ্ঞ নেতৃত্বের কারণে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি-এম. জহির উদ্দিন স্বপন গৌরনদীতে দৈনিক যুগান্তরের বিরুদ্ধে বিড়ি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল দুষ্টামিটাও ছিল যেমন স্পর্শকাতর, খেসারাতটাও দিতে হল তেমনি ভয়ঙ্কর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের ৫ সদস্যের বরিশাল মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি গঠন গৌরনদীতে ইউএনওর নেতৃত্বে স্বেচ্ছাশ্রমে খালের কুচুরিপানা ও ময়লা পরিস্কার করল বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা বর্নাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে গৌরনদীতে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত আমাদের নেতা তারেক রহমান একটি সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে চান-জহির উদ্দিন স্বপন মেয়র হারিছ গ্রেপ্তারের খবরে গৌরনদীতে সাধারন মানুষের উল্লাস ফাঁসির দাবিতে বিএনপির বিক্ষাভ মিছিল গৌরনদীতে এইচপিভি টিকা দান ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন কাশিপুরের ড্রেজার ব্যবসায়ী সুমনের অপকর্মে কেউ খুন হলে দায় নেবে না বিএনপি
দেশে করোনার ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে একাধিক হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ

দেশে করোনার ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে একাধিক হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ

দখিনের খবর ডেস্ক ॥ দেশে মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিনই ক্রমাগত জটিল ও সঙ্কটাপন্ন করোনা রোগীর ভিড় বাড়ছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার অপর্যাপ্ততা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার রাজধানীর ৩টি স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেগুলো আর্মি স্টেডিয়াম, তিতুমীর কলেজ ও ঢাকা কলেজ স্থাপন করা হবে। প্রস্তাবিত ওসব স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করা যাবে কিনা তা যাচাইয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সশস্ত্র বাহিনীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে। তাছাড়া করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার সুযোগ বাড়াতে রাজধানীর মহাখালী ডিএনসিসি (ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন) মার্কেটে চালু করা হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় করোনা হাসপাতাল। ১ হাজার শয্যাবিশিষ্ট ডিএনসিসি করোনা হাসপাতালে ১০০টি আইসিইউ শয্যা এবং ১১২টি এইচডিইউ থাকবে। বর্তমানে সেটি করোনা আইসোলেশন সেন্টার বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। চলতি মাসের শেষদিকেই সেটি একটি পরিপূর্ণ করোনা হাসপাতালে পরিণত হবে। তবে এপ্রিলের মধ্যভাগেই সেখানে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে। স্বাস্থ্য অধিদফতর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, করোনা মহামারীর বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সরকার গত বছর বন্ধ হওয়া সরকারি ও বেসরকারি করোনা হাসপাতাল চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে ঢাকাসহ দেশের জনবহুল শহরে ফিল্ড হাসপাতালেরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, জরুরি অবস্থা মোকাবেলায় ফিল্ড হাসপাতাল সবচেয়ে বড় কার্যকর ভূমিকা রাখে। করোনার ঊর্ধ্বমুখী পরিস্থিতি তেমন অবস্থার সৃষ্টি করেছে। কয়েক সপ্তাহ ধরেই হাসপাতালের ওপর চাপ বেড়েছে। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় নতুন রোগী ভর্তি করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। এমন অবস্থায় ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করা হলে মানুষ মৃদু লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভিড় করবে না। কারো মধ্যে করোনার লক্ষণ দেখা গেলে তিনি বাড়িতে আইসোলেশনে থাকতে চায় না। ফিল্ড হাসপাতালে ওসব রোগীকে পুরোপুরি আইসোলেশনে রাখা যাবে। ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে রাখা গেলে সংকটাপন্ন অবস্থা কাটানো সম্ভব হবে। তাতে আগেই ব্যবস্থা নিলে তাদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করার প্রয়োজন হবে না। তবে ফিল্ড হাসপাতালে প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা ও অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপন করা না গেলেও সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করতে হবে। রোগীর অবস্থা জটিল হলে তবেই হাসপাতালে হস্তান্তর করতে হবে। ফিল্ড হাসপাতালের সবচেয়ে বড় উপকারিতা হলো রোগের সংক্রমণ বিস্তার (কমিউনিটি ট্রান্সমিশন) প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। গত বছর ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের পর রোগীর সংখ্যা কমে গিয়েছিল। মূলত সর্বোচ্চ খারাপ পরিস্থিতি ধরে নিয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে এবং আশা করতে হবে যেন ভালো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ফিল্ড হাসপাতাল অবশ্যই জনবহুল এলাকায় করতে হবে। দূরে করলে মানুষ যেতে চাইবে না। ফলে হাসপাতালের ওপরই চাপ বাড়বে। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনেকের মতে, দেশে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করা হলেও সেখানে রোগীরা তেমন একটা যায় না। গত বছর যেসব অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছিল, তাতে ভালো অভিজ্ঞতা হয়নি। মোটা অংকের অর্থ ব্যয় করে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করেও উপকার পাওয়া যায়নি। আর বিশেষজ্ঞদের মতে, গত বছর ফিল্ড হাসপাতালের পরিকল্পনায় ঘাটতি ছিল। এসবার সব সম্ভাব্যতা যাচাই করে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করতে হবে। বর্তমানে দেশে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সাধারণ শয্যা ৯ হাজার ৬৮৬টি, আইসিইউ শয্যা ৫৯৭টি, অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৪ হাজার ৫৭৩টি, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা ৯৯৮ এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৮৭৭টি। দেশে সব সরকারি হাসপাতালে (সেকেন্ডারি পর্যায়ে) কেন্দ্রীয়ভাবে অক্সিজেন সংযোগ স্থাপন করা যায়নি। সারা দেশে কভিড রোগীদের চিকিৎসায় সম্প্রতি সরকারি হাসপাতালে ৫ ধরনের যন্ত্রসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণের চাহিদা তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি নিয়ে ইতোমধ্যেই ডিএনসিসি মার্কেটে পূর্ণাঙ্গ করোনা হাসপাতাল নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। চলতি মাসের মাঝামাঝিই ওই হাসপাতালে ২৫০ শয্যা এবং কিছু আইসিইউ শয্যা চালু হয়ে যাবে। আর মাসের শেষভাগে প্রয়োজনীয় সকল কাজ শেষ করে হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা সম্ভব হবে। ডিএনসিসি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার জন্য যা যা প্রয়োজন তার সবই থাকবে। তবে এখানে কোন অপারেশন করা হবে না। কারো অপারেশন দরকার হলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করানো হবে। কোন রোগীর প্রয়োজনে ডিএনসিসি হাসপাতাল থেকেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই রোগীকে সেখানে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। গতবছরের আগস্টেই মহাখালীর ডিএনসিসি মার্কেটটিকে ৫০০ শয্যার নগর হাসপাতালে রূপান্তরের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। ৭ দশমিক ১৭ একর জমির ওপর নির্মিত ডিএনসিসি মার্কেটটি মূলত পাইকারি কাঁচাবাজারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। এখন সেটিকে কিভাবে নগর হাসপাতালে রূপান্তর করা যায় তা পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ওই হাসপাতালে শুধুমাত্র করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হবে। হাসপাতালটি পরিচালনা করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তবে ওই হাসপাতাল পরিচালনায় ৫০০ চিকিৎসক, ৭০০ নার্স, ৭০০ স্টাফ এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা উপকরণ দিয়ে সহায়তা করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। হাসপাতালটির সার্বিক কর্মকাণ্ডও মনিটর করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ১ লাখ ৮০ হাজার ৫৬০ বর্গফুট আয়তনের ডিএনসিসি মার্কেটটি এতোদিন করোনা আইসোলেশন সেন্টার এবং বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষার ল্যাব হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এখন করোনা হাসপাতাল হিসেবে চালু হলেও বিদেশগামীদের জন্য একপাশে জায়গা রাখা হবে। যাতে বিদেশগামীদের জন্য করোনা পরীক্ষাও আগের মতোই চালু রাখা হবে। এদিকে করোনার বিদ্যমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও পরিচালক (অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন জানান, রাজধানীতে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফিল্ড হাসপাতালের জন্য আর্মি স্টেডিয়াম, ঢাকা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজকে ধরে প্রাথমিকভাবে আলোচনা হয়েছে। ওসব স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করা যাবে কিনা তা যাচাইয়ের জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে বলা হয়েছে। তারা সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর ওসব হাসপাতাল তৈরি করা হবে। হাসপাতালের চাহিদা অনুযায়ী রোগীদের সেবার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চিকিৎসক, নার্স, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও ওষুধ সরবরাহ করবে। অন্যদিকে দেশে ফিল্ড হাসপাতালের অভিজ্ঞতা ভালো নয় বলে মন্তব্য করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম জানান, ফিল্ড হাসপাতালের বিষয়ে কথা হয়েছে। তিনটি জায়গার কথাও বলা হয়েছে। ফিল্ড হাসপাতাল বাস্তবায়ন করবে সশস্ত্র বাহিনী। তার আগে গত বছর ফিল্ড হাসপাতাল তেমন একটা কাজে আসেনি। মানুষ চিকিৎসার জন্য যায়নি বলে খালি পড়ে ছিল। অথচ অনেক টাকা ভাড়া দিতে হয়েছে। এখনো কয়েক কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। তবে ফিল্ড হাসপাতালের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। উপযুক্ত স্থান নির্ধারণের চেষ্টা চলছে। তবে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনে সশস্ত্র বাহিনীর অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে উল্লেখ করে সরকার গঠিত করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম জানান, মিশনে বিভিন্ন দেশে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন ও চিকিৎসা দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাদের মেডিকেল কোর স্বয়ংসম্পূর্ণ। একই সঙ্গে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করলে রোগীরা ভালো সেবা পাবে। আর দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হার বৃদ্ধি প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক মন্তব্য করেন, যেভাবে করোনা বাড়ছে এভাবে চলতে থাকলে পুরো ঢাকা শহরকে হাসপাতাল বানানো হলেও মানুষের চিকিৎসা ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে না। আর যারা করোনা টিকা নিয়েছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানেননি। এখন তারা নিজের পরিবারের সদস্যদের সংক্রমিত করেছেন। তারা এখন সমাজেও করোনা সংক্রমিত করছেন। এখন করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণের হার ১০ থেকে ১২ গুণ বেড়েছে। এই সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সরকার ঘোষিত লকডাউন সবাইকে মেনে চলতে হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com