স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্জ্য নিয়ে বিপাকে পড়েছে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (শেবাচিম) কর্তৃপক্ষ। মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নিজস্ব কোন যন্ত্রপাতি কিংবা জনবল নেই কর্তৃপক্ষের। এক বছর ধরে ময়লা নেয় না সিটি করপোরেশন। এ কারণে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে উন্মুক্ত স্তূপ করে রাখা হয়েছে মেডিকেল বর্জ্য। এর দুর্গন্ধে হাসপাতালের পরিবেশ অসহনীয় হয়ে উঠেছে। সব কিছু মিলিয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় লেজে-গোবরে অবস্থা শেবাচিম শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। জানা যায়, বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দৈনিক গড়ে ৩ থেকে ৪ টন বর্জ্য হয়। আগে এই বর্জ্য অপসারণ করতো সিটি করপোরেশন। গত বছর করোনা প্রকোপ দেখা দেয়ার পর থেকে হাসপাতালের যাবতীয় বর্জ্য নেয়া বন্ধ করে দেয় সিটি করপোরেশন। হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম জানান, প্রতিদিন গড়ে ৩ থেকে ৪ টন বর্জ্য হয়। আগে এই বর্জ্য নিত সিটি করপোরেশন। করোনা শুরুর পর থেকে তারা বর্জ্য অপসারণ বন্ধ করে দেয়ায় বিপাকে পড়েন তারা। এই ময়লা কি করবো, কোথায় রাখবো ? বাধ্য হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে গর্ত করে মেডিকেল বর্জ্য ফেলছেন। এখন আর বর্জ্য ফেলার জায়গা নেই। তিনি আরও বলেন, ১০০০ শয্যা হাসপাতালে ঝাড়ুদারের ২৭০টি পদে মধ্যে আছেন ৭৮ জন। যার মধ্যে ১৫ থেকে ২০ জন শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়েছেন। এমএলএসএস এর ৪৪৮টি পদের মধ্যে কর্মরত আছে ১৩৫ জন। যার মধ্যে অন্তত ২০ থেকে ২৫ জনের এখন আর এই ধরনের কাজ করার শারীরিক সক্ষমতা নেই। ঘাটতি জনবল দিয়ে হাসপাতাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব নয়। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. মনিরুজ্জামান জানান, করোনার শুরুতে সিটি করপোরেশন বর্জ্য নেয়া বন্ধ করে দেয়ার পর একাধিকবার তাদের কাছে চিঠি লিখে বর্জ্য অপসারণের অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু তারা কোন সায় দেয়নি। এর প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে নির্দেশনা চাওয়া হয়। গত কয়েক দিন আগে ওই চিঠির উত্তরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিজস্ব ব্যবস্থায় মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে বলেছে। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটা ‘ইনছেনারেটর’ মেশিন চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। তারা খোঁজ নিয়ে দেখেছেন এই মেশিন দেশের কোন সরকারি হাসপাতালে নেই। মন্ত্রণালয় এই মেশিন অ্যারেঞ্জ (সরবরাহ) করতে পারলে করবে। না পারলে যেভাবে আছে সেভাবেই চলবে। আমাদের কি করার আছে- প্রশ্ন রাখেন তিনি।
Leave a Reply