বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০৩:২৭ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
ফুলকুঁড়ি আসর এর ফাইনাল ক্রিকেট টুর্নামেন্টের অনুষ্ঠিত আওয়ামী ঘরানার বিতর্কিত লোকদের দিয়ে উজিরপুর উপজেলা শ্রমিক দলের কমিটি গঠন করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সান্টু খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা
মানুষের নিষ্ঠুরতায় হারিয়ে যাচ্ছে ‘বাবুই পাখি’

মানুষের নিষ্ঠুরতায় হারিয়ে যাচ্ছে ‘বাবুই পাখি’

বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি ॥ “বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই, কুঁড়েঘরে থাকি কর শিল্পের বড়াই। আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ-বৃষ্টি ঝড়ে। বাবুই হাসিয়া কহে সন্দেহ কি তায়? কষ্ট পাই তবু থাকি নিজের বাসায়।” রজনীকান্ত সেনের বিখ্যাত ‘স্বাধীনতার সুখ’ কবিতার চিরচেনা কয়েকটি লাইন। কিন্তু কবিতার চিরচেনা বাবুইপাখির স্বাধীনতা আর সুখ দুই-ই আজ হুমকির মুখে। প্রকৃতির বিরুদ্ধে মানুষের আগ্রাসী কার্যকলাপের বিরূপ প্রভাবে বসবাস উপযোগী পরিবেশ না থাকায় হারিয়ে যেতে বসেছে শৈল্পিক বাসার কারিগর বাবুই পাখি। তবে দেশের গ্রামাঞ্চলে এখনো চোখে পড়ে কিছু কিছু বাবুই পাখির বাসা। উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ঢালী গ্রামের একটি তালগাছে শতাধিক দৃষ্টিনন্দন বাবুই পাখির বাসা রয়েছে। যা দেখতে শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসী প্রতিদিনই এ এলাকায় ভীড় জমাচ্ছেন। প্রখর রোদের উজ্জ্বলতায় রাঙা প্রকৃতির মতো এরাও মেতে ওঠে প্রাণোচ্ছল উচ্ছ্বাসে। কয়েক বছর পূর্বেও গ্রাম কিংবা শহরেও সড়কে পাশে তালগাছে এদের শৈল্পিক বাসা ও বিচরণ দেখা যেত। তবে তালগাছ কমে যাওয়ায় এদের বিচরণ কমে গেছে। গ্রামবাংলায় আগের মতো প্রকৃতির বয়ন শিল্পী, স্থপতি এবং সামাজিক বন্ধনের কারিগর বাবুই পাখি ও তার বাসা এখন আর চোখে পড়ে না। খড়, তালপাতা, ঝাউ ও কাঁশবনের লতাপাতা দিয়ে বাবুই পাখি উঁচু তালগাছে বাসা বাঁধে। সেই বাসা দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি মজবুত। প্রবল ঝড়েও তাদের বাসা ছিঁড়ে পড়ে না। বাবুই পাখির শক্ত বুননের এ বাসাটি শিল্পের এক অনন্য সৃষ্টি যা টেনেও ছেঁড়া সম্ভব নয়। বাবুই পাখি একাধারে শিল্পী, স্থপতি এবং সামাজিক বন্ধনের প্রতিচ্ছবি। বাবুই মানুষের মানবিক ও সৌন্দর্যবোধকে জাগ্রত করার পাশাপাশি দেয় স্বাবলম্বী হওয়ার অনুপ্রেরণা। কথিত আছে, রাতে জোনাকি পোকা ধরে এনে সে তার বাসায় রাখে। বাবুই পাখি সাধারণত বিভিন্ন ফসলের বীজ, ধান, বিভিন্ন প্রজাতির পোকা, ঘাস, ছোট উদ্ভিদের পাতা, ফুলের মধু ও রেনু প্রভৃতি খেয়ে জীবনধারণ করে। বাবুই পাখি বাসা তৈরির পর সঙ্গী খুঁজতে যায় অন্য বাসায়। সঙ্গী পছন্দ হলে স্ত্রী বাবুইকে সাথী বানানোর জন্য নানা ভাবে ভাব-ভালোবাসা নিবেদন করে পুরুষ বাবুই। বাসা তৈরির কাজ অর্ধেক হলে কাঙ্ক্ষিত স্ত্রী বাবুইকে সে বাসা দেখায়। বাসা পছন্দ হলে কেবল সম্পর্ক গড়ে ওঠে। স্ত্রী বাবুই পাখির বাসা পছন্দ হলে বাকি কাজ শেষ করতে পুরুষ বাবুই পাখির সময় লাগে চার দিন। স্ত্রী বাবুই পাখির প্রেরণা পেয়ে পুরুষ বাবুই মনের আনন্দে শিল্পসম্মত ও নিপুণভাবে বিরামহীন পরিশ্রমে বাসা তৈরির কাজ শেষ করে। তবে প্রেমিক বাবুই যত প্রেমই দেখাক না কেন, প্রেমিকা ডিম দেওয়ার সাথে সাথেই পুরুষ বাবুই আবার খুঁজতে থাকে অন্য সঙ্গী। পুরুষ বাবুই এক মৌসুমে ছয়টি বাসা তৈরি করতে পারে। আউশ ও আমন ক্ষেতের ধান পাকার সময় হলো বাবুই পাখির প্রজনন মৌসুম। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হবার পরপরই বাচ্চাদের খাওয়ানোর জন্য স্ত্রী বাবুই ক্ষেত থেকে দুধ ধান সংগ্রহ করে। বর্তমানে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে গ্রামাঞ্চল থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে প্রকৃতির এই অপরূপে সৃষ্টি বাবুই পাখি। এক যুগ আগেও সর্বত্র চোখে পড়ত বাবুই পাখি। এখন আর সারিবদ্ধ তালগাছের পাতায় ঝুলতে দেখা যায় না তাদের শৈল্পিক বাসা। কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হয় না গ্রামবাংলার জনপদ। নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন, কীটনাশকের ব্যবহার, শিকারিদের দৌরাত্ব্য অপিরকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণে মানব বসতি বাড়ায় ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাবের কারণে এ পাখি বিলুপ্ত হতে বসেছে। বেতাগী পৌর শহরের পাখি প্রেমিক এরশাদুল ইসলাম জানায়,’ বাবুই পাখি বিচরণ ধরে রাখার জন্য সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার।’ বেতাগী উপজেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ বলেন,’ তালগাছ রোপন করলে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে এবং অতীতের মতো বাবুই পাখিও বাসা বাঁধবে।’ বাবুই পাখি ও তার বাসা টিকিয়ে রাখতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com