পিরোজপুর প্রতিনিধি ॥ ভান্ডারিয়ায় ও কাউখালীতে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে ডায়রিয়া। হাসপাতালের সক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি রোগী আসায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তার ও নার্সরা। হাসপাতালে রোগীদের চাপ থাকায় বেশির ভাগ রোগীকে মেঝে, বারান্দা ও অন্যান্য ওয়ার্ডে থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। আবহাওয়ার পরিবর্তনজনিত কারণে গরমের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। রবিবার (১৮এপ্রিল) দুপুর থেকে গত এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে সরেজমিনে এ চিত্র দেখা গেছে। তবে হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স এ উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে সেবা নিতে আসা রোগীদের সেবা প্রদানে দেখা গেছে। বর্তমানে বৈশ্বিক উচ্চ পর্যায়ের করোনা ভাইরাস সংক্রামন মহামারি আকার ধারন করার উপর আবার পানি বাহিত রোগ ডায়েরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধিতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে কর্তব্যরত ডাক্তার, নার্স। এ রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু এবং বৃদ্ধ। স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে তার দলের লোক ছাড়াও অন্যান্য দলের নের্তৃবর্গ, প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ছাড়াও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সার্বক্ষণীক খোঁজ খবর রাখছেন। ডায়েরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি এবং রিপ্রেজেন্টিভদের নির্ধারিত সময়ের পরে দিনে রাতে উপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য প.প.কর্মকর্তা (টি.এইচ.এ) ডা. ননী গোপাল রায় জানান, প্রতিবছরই এই সিজনে এ রোগের বৃদ্ধি পায়। এ হাসপাতালে গত সাত দিনে গড়ে ৩০জন করে রোগি ভর্তি হচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেকে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। এদিকে কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডায়রিয়া ওয়ার্ডকে করোনা ওয়ার্ড বানোনোর ফলে এখন সাধারন নারী ও পুরুষ ওর্য়াডে অন্য রোগী কম থাকায় সাধারন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হচ্ছে ডায়রিয়া রোগী। এতেও সংকুলান হচ্ছে না। বাড়তি বেড এনেও রোগীদের জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না। রোগীদের বারান্দায় ও মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। ঝুঁকিমুক্ত হলেই রোগীদের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ দিনে মোট ৭০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। শুক্রবার থেকে প্রতিদিনিই এখানে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ জন করে রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এদের মধ্যে নারী, শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি।বেসরকারী হিসেবে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ জনের বেশি হবে। বেশির ভাগ রোগি বেসরকারি হাসপাতালের তত্বাবাধনে বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানা গেছে। সিনিয়র স্টাফ নার্স বেবি রাণী সিকদার বলেন, ডায়রিয়া রোগীদের চাপ বেশি থাকায় আমাদের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ বিষয়ে কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান বলেন, ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ-স্যালাইন সরবরাহ রয়েছে। গরমের কারণে ডায়রিয়া বেড়েছে। অতিতের যে কোন বছরের তুলনায় এবার ডায়রিয়ায় আক্রান্তের হার বেশি। এর হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে সবাইকে স্বাস্থ্য সম্মত খাবার গ্রহণ ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে।
Leave a Reply