ঝালকাঠি প্রতিনিধি ॥ চাপ বেড়ে যাওয়ায় রোগীরা হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় থেকে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। এপ্রিল মাসের শুরু থেকেই ঝালকাঠিতে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১৯৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সদর হাসপাতালের পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও রোগী বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। ঝালকাঠি সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে জানা যায়, গত এক মাসে জেলায় ডায়ারিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৪৬১ জন। এর মধ্যে গত সাত দিনে ৭০৭ জন এবং গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত ২৫ বছরে এই সময়ে এতো ডায়রিয়া রোগীর চাপ সামলাতে হয়নি বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, ডায়রিয়া ওয়ার্ডের নির্ধারিত ১৩টি বেডে রোগীর সংকুলান না হওয়ায় অন্য ওয়ার্ড ও বারান্দার মেঝেতে রেখে স্যালাইন দিতে হচ্ছে রোগীদের। কেউ কেউ স্যালাইন পুশ করেই বাসায় চলে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে হাসপাতালে ওষুধ ও স্যালাইনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। একই চিত্র ঝালকাঠির অন্য তিন উপজেলা নলছিটি, রাজাপুর ও কাঠালিয়ার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে। সেখানেও ওষুধ ও স্যালাইনের ঘাটতি দেখা দেওয়ায় দোকান থেকে ওষুধ কিনতে হচ্ছে রোগীদের। নলছিটি উপজেলার দোকানেও এখন স্যালাইন ও ওষুধের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মুনিবুর রহমান জুয়েল বলেন, ডায়রিয়া রোগীদের সেবা দিতে আমরা যথাযথ চেষ্টা করছি। ইডিসিএল থেকে স্যালাইন ও ওষুধ সরবরাহ কম থাকায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ডা. সুমাইয়াও একই কথা জানান। রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র নার্স স্বপ্নিল সমু বলেন, প্রতিদিন যে হারে ডায়রিয়া রোগী আসছে তাতে ডাক্তার, নার্সসহ আয়াদের পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৩৪ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মেডিকেল কনসালট্যান্ট ডা. আবুয়াল হাসান বলেন, এ মাসের শুরু থেকেই ডায়রিয়া পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। হঠাৎ গরম ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না থাকার কারণে এমনটি হতে পারে। আমরা দু-একজনের নমুনা পরীক্ষার পরিকল্পনা নিয়েছি দেখার জন্য। ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালী বলেন, অন্য সময়ের চেয়ে এ বছর ডায়রিয়া আক্রান্তের হার অনেক বেশি। করোনা ও ডায়রিয়া রোগীদের সেবা দিতে ইতোমধ্যে ডাক্তার ও নার্সরা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। ইডিসিএল থেকে কম উৎপাদন ও সরবরাহের কারণে স্যালাইন ও ওষুধের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
Leave a Reply