স্টাফ রিপোর্টার ॥ বৈশি^ক মহামারি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে সপ্তাহব্যাপি সরকার ঘোষিত লগডাউনের সপ্তম দিনে বরিশাল নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে, মোড়ে মোড়ে বিএমপি ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্ব পালনকালে দিন-মজুর শ্রমিকদের পায়ে চালিত অতিরিক্ত রিক্সা বন্ধ করতে রিক্সা থেকে গদি খুলে নেয়া এবং রিক্সা উল্টিয়ে দেয়ার কারণে শ্রমিক নেত্রী ও ট্রাফিক সার্জেন্টের সাথে বাক-বিতন্ডা ও রিক্সা শ্রমিক সদস্যদের বিক্ষোভ প্রদর্শন করার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার (২০ই) এপ্রিল সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে নগরীর কাকলীর মোড় এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট সঞ্জিবসহ ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি রিক্সা আটক করেন। এক পর্যায়ে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা রিক্সা থেকে গদি খুলে নিয়ে ট্রাফিক বক্সে রেখে দেয় এবং রিক্সাগুলো উল্টিয়ে রাখে। এ ঘটনায় দিন-মজুর রিক্সা শ্রমিকরা উত্তপ্ত হয়ে উঠে। ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে যান বরিশাল নগরীর শ্রমিকের বন্ধু বাসদ বরিশাল জেলা কমিটির সদস্য ডাঃ মনিষা চক্রবর্তী। এ সময় কেন রিক্সা আটক ও গদি খুলে নেয়ার কারণ সার্জেন্ট সঞ্জিবের কাছে জানতে চান তিনি। এ সময় ট্রাফিক সার্জেন্ট সঞ্জিবের সাথে মনিষা চক্রবর্তীর সাথে কিছুটা কথা কাটাকাটির সৃষ্টি হয়। সঞ্জিব বলেন, তারা উর্ধ্বতন কর্মকতাদের নির্দেশে এবং নগরীতে লকডাউনের মধ্যে অতিরিক্ত রিক্সা চলাচল বেড়ে যাওয়া ও তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে এই অভিযান চালানো হয়। এ সময় মনিষা চক্রবর্তী বলেন, আমরাও চাই লকডাউন গুরুত্ব সহকারে পালন করা হোক। সেখানে গরিব দিন-মজুর শ্রমিকদের পেটে লাথি দিয়ে নয়। ওনারা সাধারন দিনমজুরের রিক্সা আটক করে লকডাউন বাস্তবায়ন করছেন। অন্যদিকে দামী দামী প্রাইভেট কার, মোটর সাইকেল নিয়ে যারা অহরহ ঘোরাফেরা করছেন, তাদের ধরছেন না, এমনকি তাদের গাড়ি আটকাতে দেখা যায় না। এসময় উত্তেজিত রিক্সা শ্রমিকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করেন। পরবর্তীতে আটক রিক্সার গদিগুলো দিয়ে দেয়া হলে রিক্সা শ্রমিকদের উত্তেজক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। এ সময় বেশ কিছু রিক্সাচালক উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে কান্না কন্ঠে বলেন, আজ তিনদিন যাবত ভাত কি জিনিস তারাসহ তাদের পরিবার দেখে না। তাই আজ ঘরের মানুষগুলোর কান্না সহ্য করতে না পেরে জীবনের ঝুকি নিয়ে রিক্সা নিয়ে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
Leave a Reply