পটুয়াখালী প্রতিনিধি ॥ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনাভাইরাস মহামারি চললেও, পটুয়াখালীতে এর চিকিৎসা সেবা নেই বললেই চলে। পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার জন্য নেই আইসিইউ, কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা বা সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই সিস্টেম কিংবা করোনা শনাক্তের জন্য আরটিপিসিআর ল্যাব। এ কারণে এ জেলার বেশিরভাগ করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিতে যেতে হয় বরিশালে কিংবা ঢাকায়। হাসপাতাল সূত্র জানায়, পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৮০টি শয্যা থাকলেও এর বেশিরভাগই খালি পড়ে থাকে। গত মঙ্গলবার করোনা ইউনিটে পাঁচ জন রোগী এবং করোনা সন্দেহভাজন ওয়ার্ডে ২২ জন রোগী ভর্তি আছেন। পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, গতবছর ৯ এপ্রিল পটুয়াখালী জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। জেলায় এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৭ হাজার ৪৬ জনের। তাদের মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে দুই হাজার ২৯ জনের। এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৮১৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৮৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে জানান সিভিল সার্জন। তিনি বলেন, ‘এখানে আরটিপিসিআর ল্যাব না থাকায় শুরু থেকেই নমুনা পাঠানো হয় বরিশাল, ভোলা ও ঢাকায়। এতে রিপোর্ট আসতে দু-তিন সময় লাগে। অথচ এখানে করোনা শনাক্ত ল্যাব স্থাপিত হলে পার্শ্ববর্তী বরগুনা জেলার প্রায় ১২ লাখ ও পটুয়াখালীর প্রায় ১৬ লাখ মানুষ এর সুবিধা পেত।’ সিভিল সার্জন আরও বলেন, ‘এ ছাড়া পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন জেনারেল হাসপাতাল ২৫০ শয্যা থেকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত হলেও, এখন পর্যন্ত এখানে কোনও আইসিইউ বেড এবং কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা না থাকায় গত বছর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাওয়া দুটি ভেন্টিলেশন মেশিনও অলস পড়ে আছে। বর্তমানে সিলিন্ডার দিয়ে করোনা রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। এখানে ২৭০টি সিলিন্ডার আছে যেগুলো বরিশাল থেকে রিফিল করতে হয়।’ এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেনারেল হাপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল মতিন জানান, করোনা চিকিসায় হাসপাতালে একটি আইসিইউ ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ স্থাপনের কাজ চলছে। এটি চালু হতে আরও দুই মাস সময় লাগতে পারে বলে জানান তিনি। এছাড়া এখানে শিগগির একটি আরটিপিসিআর ল্যাব স্থাপনেরও সম্ভাবনা আছে বলে জানান তিনি। পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী জানান, সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে পটুয়াখালীতে আরটিপিসিআর ল্যাবসহ হাসপাতালে আইসিইউ ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করার জন্য অনুরোধপত্র দেয়া হয়েছে। আরটিপিসিআর ল্যাব স্থাপন পরিকল্পনায় পটুয়াখালী জেলা অগ্রাধিকার তালিকায় আছে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply