নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দেশের করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ রুখতে গত ৫ এপ্রিল অন্যান্য আন্তজেলা পরিবহনের সঙ্গে বন্ধ করা হয়েছিল বরিশালসহ অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচলও। এর ১৬ দিন পর দেশের আবারও চালু হলো ফ্লাইট। ফ্লাইট শুরুর প্রথম দিন বুধবার (২১ এপ্রিল) সকাল থেকেই দেশের ৫টি অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট শুরু করে বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলো। ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের জনসংযোগ ও বিপণন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সকাল থেকে বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, যশোর ও সৈয়দপুরে মোট ৫টি ফ্লাইট অপারেট করা হয়েছে। বিকেলেও বেশ কয়েকটি ফ্লাইট রয়েছে। কোনো ফ্লাইটই বাতিল করতে হয়নি।’ আরেক বেসরকারি এয়ারলাইন্স নভো এয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সকাল থেকে চট্টগ্রামে দুটি এবং যশোর, সিলেট ও সৈয়দপুরে একটি করে ফ্লাইট যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছেড়েছে। রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বুধবার কোনো ফ্লাইট চালায়নি। তাদের ফ্লাইট শুরু হবে বৃহস্পতিবার থেকে। এর আগে গত মঙ্গলবার অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চলাচল নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এতে বলা হয়, ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত সীমিত সংখ্যক অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে হেলিকপ্টার বা জেনারেল এভিয়েশনের সেবা শুধুমাত্র মালিক পক্ষের ব্যবহারের জন্য খোলা থাকবে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। এর পরপরই দেশের সাতটির মধ্যে ৫টি গন্তব্যেই ফ্লাইট ঘোষণা করে দেশি এয়ারলাইনসগুলো। এখন পর্যন্ত ফ্লাইট ঘোষণা করা হয়নি কক্সবাজার ও রাজশাহী রুটে। করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকার প্রথমে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে। সেই সময় থেকেই অন্যান্য আন্তজেলা পরিবহনগুলোর মতো বন্ধ রয়েছে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল। পরে এ নিষেধাজ্ঞা আরও দুই দিন বাড়িয়ে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। তবে সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিল্পকারখানা, গণপরিবহন চালু থাকায় তা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে খুব একটা কাজে আসেনি। এর মধ্যে ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর বিধিনিষেধের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। প্রথমে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত এ অবস্থা চলার কথা থাকলেও সোমবার বিধিনিষেধ ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কঠোর বিধিনিষেধের কারণে ১৪ এপ্রিল থেকেই বন্ধ করা হয় আন্তর্জাতিক সব যাত্রীবাহী ফ্লাইট। তবে চিকিৎসা, পণ্যবাহী ও বিশেষ ফ্লাইটকে নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। অবশ্য পরে প্রবাসী কর্মীদের কথা বিবেচনায় রেখে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজারে গত শনিবার থেকে শতাধিক বিশেষ ফ্লাইট অনুমোদন দেয় সরকার। এই পাঁচ দেশ হলো সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুর। মঙ্গলবার এ তালিকায় যুক্ত হয় চীনের নাম। রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমানসহ মোট ১৪টি দেশি-বিদেশি এয়ারলাইনস যাত্রী পরিবহনের সুযোগ পাচ্ছে। এগুলো হলো ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস, ওমান এয়ার, সালাম এয়ার, কাতার এয়ারওয়েজ, এমিরেটস, ইতিহাদ, এয়ার অ্যারাবিয়া, এয়ার অ্যারাবিয়া আবুধাবি, ফ্লাই দুবাই, চায়না ইস্টার্ন ও চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইনস।’
Leave a Reply