ভান্ডারিয়া প্রতিনিধি ॥ পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল বুধবার একদিনে ২৮ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত এক সপ্তাহে ভর্তি হয়েছেন ১৩০ জন। দিনে গরম, রাতে ঠাণ্ডা, আবার বৈরী আবহাওয়া সেই সাথে এলাকার নদ নদীর পানিতে মাত্রাতিরিক্ত লবণ পানির প্রবাহে প্রত্যন্ত এলাকায় সুপেয় পানির সংকটে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতিদিনই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন ২০/২৫ জন রোগী। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু এবং নারীর সংখ্যাই বেশি। হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে এখানকার চিকিৎসকদের। অন্যদিকে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন রোগীর স্বজনরা। ভাণ্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, এক মাসে হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত নারী-শিশু-পুরুষ মিলে ৩৫৪ জন রোগীকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। শুধু সরকারি হাসপাতাল নয়, বেসরকারি ক্লিনিকেও রোগীদের ভিড় বাড়ছে। রোগীর চাপে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসাধীন কয়েকজন রোগী জানান, হাসপাতালে রোগীর চাপ এবং বেড না পেয়ে মেঝেতে তাদের থাকতে হচ্ছে। এতে করে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। চরখালী গ্রামের ষাটোর্ধ বয়সী ছত্তার হাওলাদার জানান, তিনি সকালে পাতলা পায়খানা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। কোনো জায়গা না পেয়ে মেঝেতে আছি। হাসপাতাল থেকে একটি স্যালাইন দিয়েছেন। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স (সেবিকা) ফাহিমা আক্তার জানান, গড়ে ৪০ জনেরও বেশি নতুন ডায়রিয়া রোগী দিনে হাসপাতালে আসছেন। হাসপাতালে নতুন ও পুরাতন মিলে সব সময় ৬০ থেকে ৭০ জন ডায়রিয়ার রোগী ভর্তি থাকছে। এদের চিকিৎসা দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। ভাণ্ডারিয়া হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. বেল্লাল হোসেন জানান, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে গেছে। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ও পানি কম খাওয়ার কারণেও ডায়রিয়া হতে পারে। খাবার আগে হাত সাবান দিয়ে ধৌত করতে হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য প. প. কর্মকর্তা ননী গোপাল রায় জনান, হাসপাতালে যে স্যালাইন মজুদ আছে এভাবে চললে এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় ওষুধ পাওয়ার জন্য সিভিল সার্জনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখছি।
Leave a Reply