স্টাফ রিপোর্টার ॥ বরাদ্দ গাড়ি না থাকায় রোগীর অ্যাম্বুলেন্সে যাতায়াত করতে হচ্ছে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের পরিচালককে। এজন্য নির্ধারিত একটি অ্যাম্বুলেন্সই বসিয়ে রাখা হয় পরিচালকের জন্য। যদিও পরিচালক দাবি করেছেন, অ্যাম্বুলেন্সটি সব সময় আটকে রাখা হচ্ছে এমনটি নয়, যখন জরুরি প্রয়োজনে তাকে কোনো কাজে বেরোতে হয় তখনই তিনি সেটি ব্যবহার করে থাকেন। যদিও ওই অ্যাম্বুলেন্সটি ছাড়া পরিচালক বা তার নিচে থাকা গুরুত্বপূর্ণ পদের কর্মকর্তাদের আনা-নেওয়ার জন্য আলাদা কোনো যানবাহনই নেই এই হাসপাতালটির। সেটি হোক না কেন একটি রিকশা, বাইসাইকেল কিংবা মোটরসাইকেল অথবা ভাঙাচোরা কোনো মাইক্রোবাস। হাসপাতালের প্রশাসনিক শাখা সূত্রে জানা গেছে, দেড়যুগ আগে থেকে হাসপাতালের পরিচালকের জন্য থাকা নীল রঙের একটি গাড়ি বিকল হয়ে যায়। যেটি গতকাল অব্দি হাসপাতালের পরিচালক কার্যালয়ের পাশে থাকা শেডে পড়ে রয়েছে। আর এত সময় পরে থাকায় সেটি মেরামত দুষ্কর ও ব্যয় সাপেক্ষ ব্যাপার। এটি বিকল হয়ে যাওয়ার কয়েকবছর পর তৎকালীন নার্সিং ইনস্টিটিউটের (বর্তমান নার্সিং কলেজ) অধ্যক্ষের জন্য বরাদ্দকৃত একটি মাইক্রোবাস টাইপের গাড়ি হাসপাতালের পরিচালক, উপ-পরিচালকসহ কর্মকর্তারা ব্যবহার করতেন। কারণ সেটি নার্সিং ইনস্টিটিউটের কেউ ব্যবহার করতো না। যদিও কয়েক বছর আগে সেটিকেও নিয়ে যায় নার্সিং অধিদপ্তর এরপর থেকে হাসপাতাল প্রশাসন পুরোপুরি যানবাহন শূন্য হয়ে পড়ে। অথচ অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী হাসপাতাল পরিচালকের জন্য পদমর্যাদা অনুযায়ী একটি গাড়ি, উপ-পরিচালকের জন্য একটি প্রাইভেটকার ও সহকারী পরিচালকদের জন্য একটি মাইক্রোবাস থাকার কথা হাজার শয্যার এ হাসপাতালটিতে। এদিকে প্রশাসনিক শাখা যানবাহন শূন্য হয়ে পরায়, উপায়ন্ত না দেখে পেয়ে হাসপাতালের চারটি অ্যাম্বুলেন্সের একটি হাসপাতালের পরিচালককে আনা-নেওয়াসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কাজের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। এ বিষয়ে হাসপাতাল পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম জানান, বিগত সময় থেকেই অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী গাড়ির জন্য কর্তৃপক্ষ কাছে চিঠি চালাচালি করা হচ্ছে। তবে এ অব্দি হাসপাতাল পরিচালকসহ কারো জন্য কোনো যানবাহন বরাদ্দ পায়নি এ হাসপাতালটি। তবে, হাসপাতালের চারটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য তিনি বাধ্য হয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্সে যাতায়াত করছেন। আর সেই অ্যাম্বুলেন্সটি যখন রোগীদের জন্য প্রয়োজন হয়, তখন সেটি সে কাজেও ব্যবহার করা হয়। এদিকে দক্ষিণবঙ্গের আস্থারস্থল হিসেবে খ্যাত এ হাসপাতালটিতে প্রশাসনিক কাজ পরিচালনার জন্য আলাদা কোনো যানবাহন না থাকায় হতাশ চিকিৎসক সমাজ। চিকিৎসক নেতারা বলছেন, পরিচালকসহ প্রশাসনিক পদের কর্মকর্তাদের কিংবা সিনিয়র চিকিৎসকদের যেকোনো সময় যেকোনো প্রয়োজন হাসপাতালে আসতে হয়, আবার গুরুত্বপূর্ণ সভা বা বৈঠকেও যেতে হয়। সেখানে যানবাহন না থাকায় রিকশায় চরে যাওয়া ছাড়া কর্মকর্তাদের আর কোনো উপায় থাকে না। এতে যেমন কালক্ষেপণ হয়, তেমনি আবার নিরাপত্তা ঝুঁকিও থাকে। যেমন এ হাসপাতালের যে আয় হয়, সেই টাকাও তো রিকশায় বহন করতে হয় ঝুঁকি নিয়ে। আর একজন পরিচালকের অ্যাম্বুলেন্সে যাতায়াতের দৃশ্যও বিরল তাই দ্রুত এ হাসপাতালের জন্য প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যানবাহন বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানান তারা।
Leave a Reply