নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পটুয়াখালীর বাউফলে কেএফসি নামের একটি এনজিও গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে উধাও হয়ে গেছে। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত থাকায় ভুক্তভোগীরা তাদের বিনিয়োগের টাকা ফেরৎ না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তথ্য সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে পটুয়াখালী সমবায় কার্যালয় থেকে নিবন্ধন নিয়ে বাউফলের কাছিপাড়া বাজারে কাছিপাড়া ফ্রেন্ড সার্কেল কো-অপারেটিভ মাল্টিপারপাস সোসাইটি লিমিটেড(কেএফসি) নামের একটি প্রতিষ্ঠান মোটা অংকের মুনাফার লোভ দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ শুরু করে। প্রায় ৪ বছর তারা কাছিপাড়া, কালিশুরী ও কনকদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা সংগ্রহের পর ২০১৬ সালে হঠাৎ করে কার্যক্রম বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যায়। কাছিপাড়া ইউনিয়নের বলাই কানাই দিঘী গ্রামের নিজাম উদ্দিন গাজীর কাছ থেকে ৪ লক্ষ টাকা, জুয়েল আকনের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা, রুহুল আমিনের কাছ থেকে ৪৫০০ টাকা ও মিজানুর রহমানের কাছ থেকে ৭৮০০ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। নিজাম উদ্দিন গাজী বলেন, আমি সারা জীবনের সঞ্চয়ের টাকা ব্যাংকের রাখার উদ্যোগ নেই। কিন্তু আমার এক প্রতিবেশীর পরামর্শে কেএফসি নামের ওই প্রতিষ্ঠানে মোট ৪ লাখ টাকা জমা রাখি। প্রায় ৪ বছর পার হলেও কোন মুনাফা পাইনি। এখন আর আমার মুনাফার প্রয়োজন নেই। আসল টাকা ফেরৎ চাই। তিনি বলেন, এলাকার ৪ শতাধিক সদস্যর কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কেএফসির কর্মকর্তারা। কাছিপাড়া আবদুর রশিদ মিয়া ডিগ্রী কলেজের সহকারি অধ্যাপক আবু হাসান মিরন বলেন, কেএফসি নামের ওই প্রতিষ্ঠান সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তিনি বলেন, এলাকার প্রভাবশালী জাকির হোসেন ও মামুন মৃধা ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত থাকায় সাধারণ মানুষ টাকা ফেরৎ পাচ্ছেন না। সাধারণ মানুষের টাকা হাতিয়ে তারা বরিশাল ও কাছিপাড়ায় একাধিক বাড়ি নির্মাণ করছেন। তারা গ্রাহকের টাকা দেই দিচ্ছি বলে কালক্ষেপণ করছেন। অবশ্য জাকির হোসেন ও মামুন মৃধা টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে আমরা মাঠে বিনিয়োগ করেছি। হয়ত ২/১ জন গ্রাহক টাকা পাবেন। আমরা দ্রুত তাদের টাকা ফেরৎ দিয়ে দেব। কাছিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার কাছে প্রতারণার শিকার কয়েকজন ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। বাউফলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে প্রতারকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’
Leave a Reply