আমতলী প্রতিনিধি ॥ বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে হতদরিদ্রদের ঘরের অনিয়মের অভিযোগ দেয়া যুবলীগ নেতা কামাল রাঢ়ীকে ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামানের নির্দেশে তার অফিসের কর্মচারী এনামুল হক বাদশার নেতৃত্বে সুজন মুসুল্লী ও হাবিব গাজীসহ ৫-৬ সন্ত্রাসী তুলে আনে। পরে ইউএনও’র বাসায় যুবলীগ নেতাকে আটকে রেখে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভিডিও ধারন করেছে বলে অভিযোগ করেন যুবলীগ নেতা। যুবলীগ নেতাকে তুলে আনার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য এবং আতঙ্ক বিরাজ করছে। দ্রুত সন্ত্রাসী এনামুল হক বাদশা, সুজন মুসুল্লী ও হাবীব গাজীসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। জানাগেছে, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রায়ণ প্রকল্প-২ এ অধীনে দ্বিতীয় ধাপে আমতলী উপজেলায় হতদরিদ্রদের জন্য ৩’শ ৫০ টি ঘর বরাদ্দ দেয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই প্রকল্পের গুলিশাখালী ইউনিয়নে ৫০ টি ঘর বরাদ্দ দেন ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামান। ওই ঘরগুলোর মধ্যে ইউএনও কার্যালয়ের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর মোঃ এনামুল হক বাদশার নিজ গ্রাম হরিদ্রবাড়িয়ায় দেয় ৩০টি। তার মধ্যে ১৪ টি ঘর পেয়েছেন মোঃ এনামুল হক বাদশার আত্মীয়। তারা সকলেই ধনাট্য ব্যাক্তি। ইউএনও ও তার অফিসের কর্মচারী এনামুল হক বাদশা ঘরের তালিকা তৈরি ও টাকা নিয়ে ঘর দেয়ার অভিযোগ এনে গুলিশাখালী ইউনিয়ন যুবলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ কামাল রাঢ়ী বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তথ্য তুলে ধরেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামান ও তার অফিসের কর্মচারী মোঃ এনামুল হক বাদশা। শনিবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ইউএনও’র নির্দেশে এনামুল হক বাদশার নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনী সুজন মুসুল্লী ও হাবীব গাজীসহ ৫-৬ জনে যুবলীগ নেতা কামাল রাঢ়ীকে তার বাড়ী থেকে তুলে নিয়ে আসে। সাড়ে চার ঘন্টা তাকে সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি দেখায় এমন অভিযোগ যুবলীগ নেতা কামালের। পরে সন্ত্রাসীরা রাত সাড়ে বারটার দিকে যুবলীগ নেতাকে ইউএনও আসাদুজ্জামানের বাসায় নিয়ে আসে। তার বাসায় ইউএনও যুবলীগ নেতাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার ইচ্ছামত ভিডিও ধারন করেন এমন অভিযোগ যুবলীগ নেতা কামাল রাঢ়ীর। রাত দেরটার দিকে ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামান তাকে ছেড়ে দেন। যুুবলীগ নেতাকে ইউএনও’র সন্ত্রাসী বাহিনী তুলে আনার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এলাকাবাসী এ ঘটনার সাথে জড়িতদের তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন। এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন রবিবার সকালে ইউএনও’র সন্ত্রাসী সুজন মুসুল্লী ও হাবিব গাজী এলাকার লোকজনকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, রাত সাড়ে ৮ টার দিকে এনামুল হক বাদশার নেতৃত্বে সুজন মুসুল্লী ও হাবিব গাজীসহ ৫-৬ জন সন্ত্রাসী মোটর সাইকেলে কামাল রাঢ়ীকে তুলে নিয়ে গেছেন। আমরা এ ঘটনার সাড়ে জড়িতদের শাস্তি দাবী করছি। যুবলীগ নেতা কামাল রাঢ়ী অভিযোগ করে বলেন, ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামানের নির্দেশে তার সন্ত্রাসী সুজন মুসুল্লী ও হাবিব গাজীসহ ৫-৬ জন লোকে আমাকে মোটর সাইলেলে তুলে নিয়ে আসে। পরে তারা চার ঘন্টা আমাকে বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে জীবন নাশের হুমকি দেয় এবং অভিযোগ তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করে। তিনি আরো বলেন, রাত সাড়ে ১২ টার দিকে সন্ত্রাসী সুজন মুসুল্লী ও হাবীব গাজীসহ ৫-৬ সন্ত্রাসী আমাকে ইউএনও’র বাসায় তুলে নিয়ে আসে। ওই খানে এনে ইউএনও আমাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে তার ইচ্ছামত ভিডিও ধারন করে। আমি প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানাই। এ বিষয়ে ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামানের সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। অভিযোগের আলোকে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রায়ন প্রকল্পের-২’এর ঘর দেয়ার নামে ইউএনও আসাদুজ্জামান, তার কার্যালয়ের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর মোঃ এনামুল হক বাদশা ও তার সুজন ও হাবীর গাজীর মাধ্যমে ঘর প্রতি ২০ হাজার টাকা আদায় করছে এবং এনামুল হক বাদশার ১৪ আত্মীয়ের নামে ঘর বরাদ্দ দেয়।
Leave a Reply