আমতলী প্রতিনিধি ॥ বরগুনার আমতলী উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ পাকা ও কাঁচা সড়কগুলো ইটভাটার ট্রাক ও ট্রলির কারণে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ সকল সড়কে বেপরোয়াগতিতে ট্রাক ও ট্রলি চলার কারণে ইট, পিচ, খোয়া উঠে ও মাটি দেবে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। দ্রুত মেরামত করা না হলে এ সকল সড়কে চলাচলকারী যানবাহন ও জনসাধারণের দুর্ভোগ চরমে উঠবে বলে ভুক্তভোগী এলাকাবাসীরা মনে করছেন। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের অধিকাংশ ও গুরুত্বপূর্ণ কাঁচা, পাকা ও আধাপাকা সড়কগুলো দিয়ে প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকার মাঠ, পুকুর ও ধানী জমি থেকে মাটি কেঁটে ট্রাক ও ট্রলির সাহায্যে ইট ভাটায় নিয়ে যায়। শুধু তাই না ট্রাক ও ট্রলিতে মাটি বহনের কারণে ওই মাটি সড়কে পড়ে সড়কগুলি যেমন নষ্ঠ হচ্ছে তেমনি ধুলার সৃষ্টি হচ্ছে। দিন রাত ট্রাক, ট্রলি চলার কারণে ও এগুলোর বিকট শব্দে সড়কের পাশে বসবাসকারী বাসিন্দারাও চরম কষ্টে দিন পার করছেন। এ ছাড়া ৭টি ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ সড়ক দিয়ে স্থানীয় মানুষেরা উপজেলা সদরসহ এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যাতায়াত করে থাকেন। বর্ষাকাল ব্যতীত সারা বছরই গ্রামীণ সড়কগুলি ইটভাটার ট্রাক ও ট্রলির দখলে থাকে। সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত সড়কগুলোতে বেপরোয়াগতিতে চলাচলের কারণে ভালো সড়ক ভেঙে ও দেবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলির মধ্যে ডাক্তার বাড়ি-খেকুয়ানী ভায়া গুলিশাখালী-গোজখালী সড়ক, কল্যাণপুর-ছোনাউঠা সড়ক, খুড়িয়ার খেয়াঘাট-তারিকাটা সড়ক, চাওড়া তালুকদার বাজার-চালিতাবুনিয়া ভায়া ঘটখালী সড়ক, ইসলামপুর-কাউনিয়া-নাচনাপাড়া সড়ক, কুকুয়া সাহেববাড়ী-হরিমৃত্যুঞ্জয় সড়ক, কুকুয়া হাট-হাজার টাকার বাঁধ ভায়া রায়বালা সড়ক, আমতলী-তালতলী আঞ্চলিক সড়কের একটি অংশ, মহিষকাটা-গোজখালী সড়ক, বান্দ্রা থেকে চারঘাট পর্যন্ত ওয়াবদা বেড়িবাঁধ, মুন্সীর হাট- চাউলা ওয়াবদা বেড়িবাঁধসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ সড়ক। উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামের লিটন জোমাদ্দার বলেন, ডাক্তার বাড়ি থেকে খেকুয়ানী-গুলিশাখালী বাজার হয়ে গোজখালী পর্যন্ত সড়কটি ইটভাটার মাটি ও ইট পরিবহনে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া এ ইউনিয়নের অধিকাংশ কাঁচা পাকা সড়কগুলি ইটভাটার টাক ও ট্রলিতে নষ্ট করে ফেলেছে। কল্যাণপুর (কলংক) গ্রামের ফারুক মিয়া বলেন, আমাদের এলাকাটি কৃষিনির্ভর। কৃষিপণ্য নিয়ে আমরা এই সড়কটি (কল্যাণপুর-ছোনাউঠা) দিয়ে উপজেলা সদরে যাই। কিন্তু সড়কটি দিয়ে ট্রাক ও ট্রলিতে করে ইট ভাটায় মাটি টানার কারণে যেভাবে ভেঙে গেছে তাতে এ সড়ক দিয়ে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। খেয়াঘাট বাসিন্দা ফেরদৌস বলেন, খুড়িয়ার খেয়াঘাট থেকে তারিকাটা এমপির বাজার পর্যন্ত সড়কটি দিয়ে ইটভাটার ট্রাক ও ট্রলি চলাচল করার কারণে সড়কের বিভিন্ন স্থানে মাটি পড়ে ও সড়কের পিচ, খোয়া উঠে এবং ডেবে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামনে বর্ষা মৌশুমে এ সড়ক দিয়ে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী মো. আল-মামুন বলেন, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামীণ সড়কগুলোতে অধিক লোড নিয়ে বেপরোয়াগতিতে ইট ভাটার ট্রাক ও ট্রলি চলাচল করে। এ কারণে অধিকাংশ সড়কগুলি ভেঙে ও দেবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বেশী ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো দ্রুত মেরামত করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গ্রামীণ সড়কগুলোতে যাতে অধিক লোড নিয়ে ট্রাক ও ট্রলি চলাচল করতে না পারে সেজন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply